ভোলা নিউজ২৪ডটকম।। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করাটা খুবই জরুরি ছিলো, সেটা হয়েছে। তবে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা জড়িত ছিলো সেটাও বের হবে এবং সেদিনও খুব বেশি দূরে নয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণববন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।
আওয়ামী লীগের এ আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পেছনে কাদের শক্তি ছিলো তা বের করতে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি ওঠে। সভায় দেওয়া বক্তব্যে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা তাদের বক্তব্যে- বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পেছনে জড়িতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি করেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা যদি পত্রপত্রিকা পড়েন, আপনারা এর পেছনে কে আছে না আছে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। বেশি তো খোঁজার দরকার নাই।অনেক খবর আপনাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে।ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ১৫ আগস্ট রাতের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যারা হত্যা করেছে, আর যারা ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে সবাই কিন্তু সমানভাবে দোষী। আমি আরও অনেক ঘটনা জানি। হত্যার বিচার করাটা জরুরি ছিল। ধীরে ধীরে কারা জড়িত সেটাও বের হবে। সেদিন বেশি দূরে নয়।
তিনি বলেন, আমার নিজের মনে কয়েকটি প্রশ্ন আসে। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, যেটি পাকিস্তানের প্রদেশ ছিল। দারিদ্র্য যেখানে নিয়মিত সঙ্গী, তার ওপর যুদ্ধের একটা বছর কোনো ফসল হয়নি। গোলায় খাদ্য নেই, কোনো কারেন্সি নেই। রাস্তাঘাট সব ভাঙা। সেই অবস্থায় যখন তিনি দেশ পরিচালনা করছেন, একটা জিনিস চিন্তা করেন, তিনি দেশে ফিরলেন ৭২ সালে। সেই ৭২ সাল থেকেই তো বিভাজন শুরু।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভক্তি হলো, জাসদ হলো। যারা পাকিস্তান বাহিনীর দোসর, যারা বড় নেতা ছিলেন, তারা তো পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে অনেক আগেই চলে গেছেন। আর যারা এ দেশে ছিল তারা কোথায় গেল? হঠাৎ উধাও হয়ে গেল। তারা সব গিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টির সঙ্গে মিশে গেল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বছরের পর বছর লেগে যায়। কিন্তু একটি বছরও সময় দেয়া হলো না। সঙ্গে সঙ্গে সমালোচনা শুরু হলো। আর ধৈর্য ধরা হলো না। এটা হলো না কেন, এটা নাই কেন নানা কথা লেখা হলো। কারা লিখেছিল? কাকে খুশি করতে এবং কারা এই হত্যাকাণ্ডের গ্রাউন্ড তৈরি করছিল?
শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি যারা সরাসরি হত্যা করেছে, তারা নিজেরা স্বীকার করেছে। বিবিসি ইন্টারভিউতে রশিদ-ফারুক বসে বলেছে তারা হত্যা করেছে। তার কারণ, একটা চেষ্টা ছিল বঙ্গবন্ধুকে জনগণের কাছ থেকে দূরে সরানোর। অনেক অপপ্রচার চালিয়েও তাকে দূরে সরাতে পারেনি। আর সরাতে পারে নাই বলেই তারা এ হত্যাকাণ্ডটা ঘটিয়েছে, এটাই বাস্তবতা। কাজেই তখন যারা সমালোচনা লিখেছে তারা তো এদেরই দোসর হিসেবে গ্রাউন্ড তৈরি করছিল। সেটা একটু আপনারা স্মরণ করে রাখবেন। তাহলে আর আপনাদের বেশি দূর যেতে হবে না খুঁজতে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পদাক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ।