তাদের সরকার প্রধান কে হবে: ঐক্যফ্রন্টকে শেখ হাসিনার প্রশ্ন

0
291

ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঐক্যফ্রন্ট হয়েছে। তারা নাকি সরকার গঠন করবে। সরকারের প্রধান কে হবে সেটা কিন্তু আজ পর্যন্ত জাতির সামনে দেখাতে পারে নাই। একটা প্রশ্ন রেখে যাই, তাদের সরকার প্রধান কে হবে? এতিমের অর্থ আত্নসাৎকারী সে হবে? না ওই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আইভী রহমানের হত্যাকারী সাজাপ্রাপ্ত আসামী সে হবে? না ওই রাজাকার বাহিনী বা যাদের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সাজা দিয়েছি তাদের কেউ হবে? সেটাতো স্পষ্ট করে তারা জানায়নি। সেটা তো দেশবাসী জানে না। এবং দেশবাসীকেও সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, দেশবাসীকেও বেছে নিতে হবে তারা কাকে চায়? তারা কী ধরনের সরকার চায়? দেশের জনগণের ওপরেই আমি দায়িত্ব ছেড়েদিলাম।

সোমবার বিকেলে বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিরোধীদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১০ বছরে আমরা যত পরিবর্তন এনেছি এই পরিবর্তনটা আবার অনেকের চোখে পড়ে না। যখন মানুষ ভালো থাকে, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয় তখন তারা বলে এটা নাকি স্বেচ্ছাচারিতা। স্বেচ্ছাচারিতা কীভাবে হয় আমার সেটা প্রশ্ন। স্বেচ্ছাচারিতার কী দেখল তারা? তাদের নির্বাচনী ইশেতেহারে দেখলাম ঘোষণা করেছে যে ১০ বছরের স্বেচ্ছাচারিতাকে নাকি পারিবর্তন করবে। তাহলে পরিবর্তন কী জঙ্গীবাদ সৃষ্টি, বাংলা ভাই ‍সৃষ্টি, মানি লন্ডারিং, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, আাবার সন্ত্রাস, আবার সেই ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা, নির্বাচনের নামে প্রহসন, দেশের সমস্ত উন্নয়ন ধ্বংস করে দিয়ে দেশকে সম্পূর্ণভাবে আবার অন্ধকরা যুগে নিয়ে যাওয়া। এই পরিবর্তন তারা করতে চান? ছিল তো ক্ষমতায়। ৪৭ বছর হল বাংলাদেশে স্বাধীন হয়েছে। এর ৩৯ বছরই তারা ক্ষমতায় ছিল। কী দিয়েছে মানুষকে? মানুষ কিছু না পেলেও ওই বিএনপি জামায়াত জোট তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে।’

ড. কামাল হোসেনের দিকে ইঙ্গিত দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন ‘আজকে যারা এক হয়েছে তারা কারা? একদিকে স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী। সেই যুদ্ধাপরাধীরা কীভাবে নমিনেশন পায়? কীভাবে তারা প্রার্থী হয়? যারা বাংলাদেশই চায়নি। আর তাদের দোসর কারা? আমাদের এই স্বনামধন্য যারা তত্ত্বকথা দিয়ে অনেক মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। আমি আর কারো নাম নিতে চাই না। কারণ এখন নামটা নিতে মনে হয় যেন নামই মুখে আনা উচিত না। আমার তাদের জন্য করুণা হয়। কারণ তারা দিকভ্রষ্ট। তাদের আর কোনো নীতি নাই। নীতিভ্রষ্ট। আর্দশহীন, নীতিভ্রষ্টরা দেশকে কিছু দিতে পারে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন ,‘আমাদের এ বিজয় দিবস আমরা এমন একটা সময় উদযাপন করছি মানুষ আজকে স্বাধীনভাবে মন খুলে এই বিজয়ের উল্লাস করতে পারছে। বিজয় দিবসটা উদযাপন করছে। একটা সময় ছিল এটা উদযাপন করা যেত না। ইতিহাস বলাই যেত না। বিকৃত ইতিহাস বলতে হত। এখন আর সে অবস্থাটা নাই। সে অবস্থাটার পরিবর্তন হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকতে হবে তাহলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর কেউ বাংলাদেশকে পেছনে ফেলতে পারবে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের ওপরে আমার আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। বাংলাদেশের জনগণ কখনও ভুল করে না। আর তাদের ভোটের সাংবিধানিক অধিকার আর কখনও কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। সে সাহসও পাবে না।’

নৌকা মার্কা জনগণের মার্কা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই নৌকা মার্কা দিয়ে এদেশের স্বাধীনতা এসেছে। এই নৌকা মার্কা দিয়েই আমরা বাংলাভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছি। এই নৌকা মার্কা ফলে আজকে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন, বিশ্বে আজকে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। নৌকা মার্কা আছে বলে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে গ্রাজুয়েশন হয়েছে। নৌকা মার্কা ছিল বলেই আমরা আজকে মহাকাশ জয় করেছি। পাশাপাশি বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি, ল্যান্ড বাউন্ডারি অর্জন করেছি। আজকে বাংলাদেশ দারিদ্র্যের হার ২১ ভাগে নেমে এসেছে। ইনশাল্লাহ আগামী ৫ বছর যদি আমরা নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারি তাহলে এই দারিদ্র্যের হার ৫/৬ ভাগ কমিয়ে আনতে সক্ষম হব। বাংলাদেশে হতদরিদ্র বলে কিছু থাকবে না। প্রত্যেক মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা, বাসস্থানের ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছি যেটুকু বাকী আছে সেটাও আমরা করতে সক্ষম হব। সেজন্য আমাদের আরো ৫টি বছর ক্ষমতায় থাকা একান্ত প্রয়োজন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা যাতে কেউ কেড়ে নিতে না পারে সে জন্য এই বিজয় দিবসে বাংলার জনগনের কাছে আমি নৌকা মার্কায় ভোট চাই। নৌকা দেশের সেবা করে দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ, সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিল। এবং আমার বিশ্বাস আছে বাংলাদেশের জনগন আমাদের নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।’

স্বাধীনতার ইতিহাস স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর বাংলাদেশে যারা অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় এসেছিল তারা মুক্তিযদ্ধের সকল ইতিহাস মুছে ফেলেছিল, সকল চেতনাকে ভুলন্ঠিত করেছিল মন্তব্য করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, একটা দেশে যখন বিপ্লব হয়, একটা দেশ যখন স্বাধীনতা অর্জন করে, তারপরেই যদি সেই স্বাধীনতার ইতিহাস বিপ্লবের ইতিহাস যদি মানুষ জানতে না পারে তাহলে সে দেশের মানুষের মত দুর্ভাগ্য অবস্থা আর কারো হতে পারে না। ঠিক সেই অবস্থাই বাংলাদেশে হয়েছিল। কারণ সে সময় যারা ক্ষমতা দখল করে তারা স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী তাদেরকেই ক্ষমতায় নিয়ে আসে। মুক্তিযুদ্ধের চেতানটাই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। বিকৃত ইতিহাস নিয়ে আমাদের দেশের যুব সমাজ বেড়ে উঠতে থাকে।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

LEAVE A REPLY