ভোলা নিউজ ২৪ ডট নেট : জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে আইনজীবীদের সন্মানে আয়োজিত ইফতার পূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় তিনি বলেন, মাদকমুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত ও সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। বাংলাদেশের মানুষের শান্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শান্তি প্রিয় বাংলাদেশ। সেভাবেই দেশকে গড়ে তুলতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন জেলা বার সমিতিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের বিজয়ী হওয়ায় ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশে আইনজীবী সমিতিতে যারা বিজয়ী হয়েছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। বিজয়ের এই ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে। আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে যেকোনো অবস্থা মোকাবিলা করা এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে বিজয়ী হওয়া কঠিন কোনো কাজ না। কারণ এই আওয়ামী লীগ সংগঠন তৈরি করেছেন আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। তার হাতে গড়া সংগঠন, এই সংগঠন নিয়েই তিনি বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। জাতিকে স্বাধীনতা উপহার দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বারে যারা পূর্ণ বিজয় লাভ করেছেন, তাদের আমি অভিনন্দন জানাই। আর যারা আংশিক জয়লাভ করেছেন, তাদেরও আমি অভিনন্দন জানাই। যারা পূর্ণ প্যানেলে বিজয় লাভ করেছেন, তাদের কাছে আমার আবেদন থাকবে, আগামীতে যেন সমানভাবে জিতে আসতে পারেন, সে লক্ষ্যেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। আর যারা খণ্ডিত আকারে জয়লাভ করেছেন, আগামীতে যেন পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী হতে পারেন, সে লক্ষ্যে কাজ করে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে নিতে হবে।
ইফতারের আগে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত আইনজীবী সমিতির নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ব্যারিষ্টার ফজলে নূর তাপস। এসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে বসেন অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, আবদুল বাসেত মজুমদার, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, রেজাউর রশিদ, শ ম রেজাউল করিম, ফজলে নূর তাপস প্রমুখ। ইফতারের পুর্বে বিশ্ব ইসলাম উম্মা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট নিহত শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
জি-৭ এ যোগ দিতে আজ বৃহস্পতিবার কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্রুপ-৭ যোগদান প্রসঙ্গে বলেন, বিশ্বের সাতটি ধনী দেশ যাকে গ্রুপ সেভেন বলে। সেই দেশের নেতারা আমাকে দাওয়াত দিয়েছেন। তারা বাংলাদেশের উন্নয়নের ম্যাজিকটি জানতে চান। আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আমরা স্থান দিয়েছি। শুধু আশ্রয়ই দেয়নি, তাদেরকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি। এতে সমগ্র আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের হাতকে শক্তিশালী করেছে। সারা বিশ্ব অতীতে কখনোই বাংলাদেশের পাশে এমনভাবে দাঁড়ায়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক দেশের সমর্থন পেয়েছিলাম, অনেকের পাইনি। কিন্তু এখন সবাই সমর্থন দিয়েছেন। আমি দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরবো। রোহিঙ্গাদের কথা তুলে ধরবো। বাংলাদেশ যে উন্নয়ন হয়েছে, তা ধরে রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন ঠেকানোর জন্য বিএনপি সব ধরনের কাজ করেছে। আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। স্কুল পুড়িয়েছে। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও আওয়ামী লীগ পুনরায় সরকার গঠন করেছে। আমাদের দশ বছর চলছে। বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। খাদ্যে সংয়সম্পন্নতা অর্জন করেছি। বাংলাদেশ আজকে সব দিক থেকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে। আগামীকাল (আজ) আমাদের বাজেট ঘোষণা করা হবে। প্রতি বছর বাজেটের মাধ্যমে আমরা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে উন্নয়নের ভিতকে মজবুত করছি।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচার জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। বন্ধ করেছিলেন মিলিটারি ডিক্টেরেটর জিয়া। আমরা আবার যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু করেছি। স্বজন হারারা ন্যায় বিচার পেয়েছে, তাদের অধিকার সুরক্ষিত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার করে আমরা বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করেছি। জাতির পিতার হত্যার বিচার করে বাংলাদেশকে অভিশাপমুক্ত করেছি। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার চলছে। সে বিচারও হবে। বাংলাদেশে কোনো অন্যায় অবিচার থাকবে না।