মো: আফজাল হোসেন :: ভোলার মেঘনায় ১১লাখ লিটার তেল নিয়ে ডুবে যাওয়া সাগর নন্দীনি-২ জাহাজাটি অবশেষে ৮ম দিনে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ,জাহাজ মালিক পক্ষ ও কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা যৌথ ভাবে এই উদ্ধার অভিযান পরিচালনার সময় উপস্থিত ছিলেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে দুর্ঘটনা ঘটলো কি ভাবে তা নিয়ে,যা এরিয়ে গেছেন তদন্তকারী টিমের প্রধানসহ জাহাজ মালিক পক্ষর প্রতিনিধি।
১জানুয়ারী সকাল থেকে অভিযান শুরু হয়। উদ্ধার অভিযানে ২টি বার্জ,সাগর নন্দীনি-৩,সাগর বধু-৩ ও ৪ জাহাজসহ কোস্টগার্ড দক্ষিন জোন এর ছোট-বড় জাহাজ এতে অংশ নিয়েছে। মুলত বার্জ দুটি ডুবুরী দলের সহযোগীতায় ডুবে যাওয়া জাহাজের টেনে তুলে আনার চেস্টা করছে। বেশ কয়েকদিন ধরেই প্রক্রিয়াটি করে যাচ্ছে মালিক পক্ষ এবং বিআইডব্লিউটি্এ কর্তৃপক্ষ। আজ সকালে সরেজমিন গেলে দেখাযায় সাগর নন্দীনি-২ জাহাজটি বার্জ দুটির মাধ্যমে আটকে রেখেছে। একই সাথে পানির পাম্পের সাহায্যে জাহাজ থেকে পানি ফেলে দেয়ার কাজ করা হচ্ছে।
এদিকে উদ্ধার অভিযান শুরু থেকে বিআইডব্লিউটি্এ এর যুগ্ন-পরিচালক (তদন্ত) আব্দুস ছালাম বলেন,আমরা আশা করছি দ্রুত কাজ শেষে অপর একটি জাহাজ সাগর বধু-৩ এর সাহায্যে ডুবে যাওয়া জাহাজটি টেনে নারায়নগঞ্জ ডকে নিয়ে যাওয়া হবে। এজন্য সাগর বধু-৩ জাহাজটি এনে রাখা হয়েছে। তবে কতটুকু কাজ শেষ করতে পারবো তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
তদন্ত কমিটির প্রধান বিআইডব্লিউটি্এ এর অতিরিক্ত পরিচালক মো: আব্দুর রহিম বলেন,তদন্ত শেষ না হলেই প্রধান কার্যলয়ে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া হবে। এর আগে তদন্তর স্বার্থে কিছু বলা যাবে না। তবে সাংবাদিকদের করা চোরাই রুটে তেল বিক্রি করার সময় অসাবধানতাবসত দূর্ঘটনা ঘটেছে নাকি এমন প্রশ্নের উত্তর এরিয়ে গিয়ে বলেন,এখন কিছু বলা যাবে না। দূর্ঘটনার সিকার অপর জাহাজ বা বলগেট এর খোজ পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে এরিয়ে যান।
অপরদিকে এসএইচআর নেভিগেশন কোম্পানী লিমিটেট কম্পানীর নির্বাহী পরিচালক ( অর্থ ও প্রশাসন) মাহতাবুর রহমান এর কাছে তেলের ক্ষয়-ক্ষতির বিষয় জানতে চাইলে বলেন,এটা এখন কিছুই বলা যাবে না। দূর্ঘটনার কারন বিষয় জানতে চাইলে এরিয়ে যান।একই সাথে তেল পাচার এর বিষয় জানতে চাইলে কোন উত্তর না দিয়ে চলে যান। পরবর্তীতে বলেন,জাহাজের তেলের যে ট্যাংকার লক করে দেয়া হয়,তার ২/১টি ভাঙ্গা পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
যদিও স্থানীয় ভাবে এবং জেলেদের সাথে আলাপ করতে গেলে তারা বলেন,এই রুট হচ্ছে তেলের চোরা কারবারীদের প্রধান রুট। এমন তেলের জাহাজ থেকে প্রায় প্রতিদিন ডিজেল,অকটেনসহ বিভিন্ন তেল নামানো হয়,রাতের অন্ধকারে। স্থানীয় প্রশাসন বিষয় গুলো জানার পরেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দৌলতখান থানার পাশেই এসব তেল চোরাকারবারীরা ব্যবসা করে যাচ্ছে। একবার কোস্টগার্ড চোরাই তেল ধরতে গিয়ে হামলার সিকার হয়েছে। যে ঘটনায় দৌলতখান থানায় মামলা হয়েছে।
এদিকে কোস্টগার্ড দক্ষিন জোন এর জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন এম সাহেদ সাস্তার বলেন,মুলত জাহাজটিডুবে যাওয়ার পর থেকেই কোস্টগার্ড দক্ষিন জোন সার্বিক নিরাপত্তা এবং পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। যাতে তেল ছড়িয়ে নদীর ক্ষতি না করতে পারে,তার জন্যই আমরা কাজ করেছি।
ডুবে যাওয়ার ৯ম দিনে জাহাজ সাগর নন্দীনি-২কে সাগর বধু-৩ নামক জাহাজের সাহায্য দুপুরে ভোলার মেঘনার ঘটনাস্থল থেকে নারায়নগঞ্জের উদদ্দশ্যে রওনা করেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ডিসেম্বর ভোর ৪ টার দিকে ভোলার সদর উপজেলার তুলাতুলি মেঘনা নদীতে একটি মালবাহী জাহাজের ধাক্কায় ছিঁদ্র হয়ে পানি প্রবেশ করে ডুবে যায় সাগর নন্দিনী-২ নামে তেল বোঝাই জাহাজটি।