মোঃ আফজাল হোসেন ॥ দীর্য দিনই ভোলায় আগের মত নদী ভাঙ্গন ছিলো না। হঠাৎ করেই উজানী পানির চাপে ভোলার উত্তরে রাজাপুর এলাকায় ব্যাপক নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় আতংকিত হয়ে পরেছে স্থানীয় গ্রামের মানুষ।যে ভোবে পারছে ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। তবে এজন্য অনেকেই নদী থেকে বালু উত্তোলনকে দায়ী করছে।
ভোলা সদর উপজেলা রাজাপুর ইউনিয়ন জোড়খাল এলাকার মরিয়ম বিবি। বেশ ভালোই ছিলো তার সংসার। দীর্যদিন নদী ভাঙ্গন না থাকায় এসব নিয়ে চিন্তা ছিলো তাদের। ছেলে-সন্তান নিয়ে ভালো ছিলো। হঠাৎ করেই নদী ভাঙ্গন শুরুতেই বিপর্যয়ের মুখে পড়ে পরিবারটি। যা পেরেছে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে গেছে। শুধু মরিয়ম বিবি নয় আব্দুর রশিদসহ ইউসুফরা এই ভাঙ্গনের শিকার আরো অনেকেই।
সরজমিনে ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন ৪নং ওয়ার্ড জোড়খাল এলাকায় গেলেই দেখা যায় উজানের পানির ঢল ও অতিজোয়ারের ফলে ভয়ংকর রূপ নিয়েছে মেঘনা। এরই মধ্যে রাজাপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে দীর্ঘ চার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ্র ভাঙ্গনের ফলে দীর্ঘ ৪শত মিটার এলাকা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের ফলে প্রায় ৭০ মিটার ভিতরে নদী চলে আসছে। নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বহু মানুষের বসতঘর ও দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়াও ভাংঙ্গনের আতঙ্কে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি।
স্থানীয়রা বলছেন, বিগত বছর গুলোতে জিও ব্যাগ ও সিসিব্লক দ্বারা স্থায়ী ভাবে বাধ নির্মামের মাধ্যমে পাশের ইউনিয়ন ইলিশাসহ জেলার অধিকাংশ এলাকাকে ভাঙ্গন মুক্ত করা হলেও রাজাপুর ইউনিয়নের বিশাল এলাকা জুড়ে সিসি বোল্কতো দুরের কথা ভাঙ্গন প্রতিরোধে তেমন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। তার উপরে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোালন করা হচ্ছে মেঘনা থেকে। যার ফলে ভাঙ্গন হচ্ছে বলেই ধারনা ক্ষতিগ্রস্থ্যদের।
ভোলার জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী,পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় অতিরিক্ত মহা পরিচালক (প্লানিং) ডক্টর মিজানুর রহমান,পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় কর্মকতা বাবুল আক্তার, ভোলার নির্বাহী প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান,ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরির্দশন করেন। তারা দ্রুত ভাঙ্গন প্রতিরোধের ব্যবস্থা করার নির্দেশ প্রদান করেন।
রাজাপুর ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খান বলেন, উজানের পানির ঢলে ৪/৫ দিন যাবৎ রাজাপুর ইউনিয়নের অতিমাত্রায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গন পতিরোধে জরুরী ভিত্তিতে কার্যকরি পদক্ষেপ না নেয়া হলে ভোলা রক্ষাবাধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। পাশাপাশি ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় সিসি ব্লকের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় পরিদর্শনে এসে ভোলার জেলা প্রশাসক তৌফিক ই-লাহি চৌধুরী বলেন, যখনি জোড়খাল এলাকায় নদী ভাঙ্গন আমাদের নজরে আসছে তাৎক্ষণিক ভোলার পানিউন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি পাশাপাশি আমরা একসংঙ্গে মিলেছে ভাঙ্গনকে প্রতিরোধ করার জন্য কাজ করছি। এতি মধ্যে জিও টিউব ব্যাগের মাধ্যমে বালি ভর্তি করে নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধ করার চেষ্টা চালাচ্ছি।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় অতিরিক্ত মহা-পরিচালক(প্লানিং) ডক্টর মিজানুর রহমান বলেন, রাজাপুরের জোড়খাল এলাকাটা মূলত মেঘনা ও তেতুলিয়ার মোহনায় রয়েছে।পাশাপাশি উজানের পানির চাপ ও অতি জোয়ারে নদীর তীরবর্তী একালা ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃক জিও টিউব দিয়ে ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ চলমান আছে। পাশাপাশি রাজাপুর ইউনিয়নের জোড়খাল এলাকার জন্য প্রায় ১৩শ কোটি টাকা ব্যায়ে একটি নতুন প্রকল্প প্রনয়ন হচ্ছে।