ভোলা নিউজ২৪ডটকম।। চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) হাজার হাজার ডোজ নকল টিকা জব্দ করেছে পুলিশ। অভিযানে জালিয়াত চক্রের কয়েকজন সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, চীনে নকল টিকা তৈরির অভিযোগে একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে সেখান থেকে অন্তত তিন হাজার ডোজ নকল টিকা জব্দ করা হয়।
এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার গাওটেং এলাকার একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২ হাজার ৪০০ ডোজ নকল টিকা জব্দ করেছে। সেখান থেকে আটক করা হয়েছে তিন চীনা ও এক জাম্বীয় নাগরিককে। তবে ঠিক কবে এসব অভিযান চালানো হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।
চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা টিকা জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান স্বাগত জানানোর মতো ঘটনা। তবে এটি ‘হিমশৈলের চূড়ামাত্র’।
দক্ষিণ আফ্রিকায় এই নকল টিকা জব্দের ঘটনা নিয়ে গত ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ খবর প্রকাশ করে দেশটির সানডে টাইমস সংবাদপত্র। পরে গতকাল বুধবার ইন্টারপোল এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা নকল টিকা উৎপাদন ও সরবরাহে যুক্ত অন্যান্য চক্রের খবরও পাচ্ছে।
জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনা মহামারিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ১১ কোটি মানুষ। আর মারা গেছেন ২৫ লাখের বেশি।
অভিযান চালিয়ে করোনার নকল টিকার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহভাজন কয়েকটি জালিয়াত চক্রকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে ইন্টারপোল বলেছে, অনলাইনে এই মুহূর্তে কোনো অনুমোদিত করোনা টিকা বিক্রি করা হচ্ছে না। সংস্থাটি আরও বলেছে, কোনো অনুমোদিত বা গোপন ওয়েবসাইটে কোনো টিকার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হলে তা হবে অবৈধ। এসব টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়নি। এগুলো বিপজ্জনক হতে পারে।
করোনা মহামারি থেকে বাঁচতে টিকার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বিভিন্ন ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কয়েকটি টিকার অনুমোদন দেওয়ার পর এগুলো কিনতে বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিযোগিতা। এই চাহিদাকে পুঁজি করে গজিয়ে উঠছে ওই সব জালিয়াত চক্র।
গত ডিসেম্বরে ইন্টারপোল তার ১৯৪টি সদস্যদেশে একটি বৈশ্বিক সতর্কবার্তা জারি করে। সতর্কবার্তায় কোভিড-১৯ টিকা নিয়ে গড়ে ওঠা সংগঠিত অপরাধ নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য তৈরি থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে দেওয়া হয় জাল চিকিৎসাসামগ্রী শনাক্ত করার পদ্ধতি সম্পর্কে পরামর্শও।
ইন্টারপোল বলেছে, দক্ষিণ আফ্রিকার জারমিস্টন ও গাওটেং এলাকায় কয়েক হাজার ডোজ নকল টিকা জব্দ করা ছাড়াও বিপুল পরিমাণ নকল ৩এম মাস্ক পাওয়া গেছে। যেসব কারখানায় অভিযান চালানো হয়েছে, সেখান থেকে উদ্ধার করা নকল টিকার কিছু ছবিও প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
করোনার নতুন ধরনের (স্ট্রেইন) বিরুদ্ধে কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় দেখা দেওয়ার প্রেক্ষাপটে দেরিতে হলেও গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশজুড়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
চীনের জননিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, নকল টিকার সঙ্গে যুক্ত চক্রগুলোকে রুখতে পুলিশ সক্রিয় আছে। এ বিষয়ে ইন্টারপোলের সঙ্গে গঠনমূলক সহযোগিতা বাড়াবে তারা।
নকল টিকা, সমস্যা কত বড়?
ইন্টারপোলের মহাসচিব জারগেন স্টক বলেছেন, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা টিকা জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান স্বাগত জানানোর মতো ঘটনা। তবে এটি ‘হিমশৈলের চূড়ামাত্র’।
অভিযান চালিয়ে করোনার নকল টিকার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহভাজন কয়েকটি জালিয়াত চক্রকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে ইন্টারপোল বলেছে, অনলাইনে এই মুহূর্তে কোনো অনুমোদিত করোনা টিকা বিক্রি করা হচ্ছে না। সংস্থাটি আরও বলেছে, কোনো অনুমোদিত বা গোপন ওয়েবসাইটে কোনো টিকার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হলে তা হবে অবৈধ। এসব টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়নি। এগুলো বিপজ্জনক হতে পারে।
গত ডিসেম্বরে ইন্টারপোল তার ১৯৪টি সদস্যদেশে একটি বৈশ্বিক সতর্কবার্তা জারি করে। সতর্কবার্তায় কোভিড-১৯ টিকা নিয়ে গড়ে ওঠা সংগঠিত অপরাধ নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য তৈরি থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে দেওয়া হয় জাল চিকিৎসাসামগ্রী শনাক্ত করার পদ্ধতি সম্পর্কে পরামর্শও।
এরপর গত মাসে চীনের কর্তৃপক্ষ কোভিড-১৯ টিকা বলে স্যালাইন ও মিনারেল ওয়াটারের ডোজ চালিয়ে দেওয়া এক চক্রের নেতাকে গ্রেপ্তার করে। একই অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয় আরও ৬৯ জনকে। এই চক্র ৫৮ হাজার নকল ডোজ তৈরির আগে ব্যাপক গবেষণাকাজও চালায়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ওই নেতা ও তাঁর দলের সদস্যরা নকল টিকা তৈরি ও সরবরাহ করে ১ কোটি ৮০ লাখ ইউয়ান (চীনের মুদ্রা) বাগিয়েছে।
এ ছাড়া গত মাসে মেক্সিকোতে পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরাও নকল টিকা পাচার করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। জিজ্ঞাসাবাদে সন্দেহভাজন এই ব্যক্তিরা বলেন, একটি ক্লিনিকে নকল টিকা সরবরাহের জন্য প্রতি ডোজ বাবদ তাঁদের প্রায় দুই হাজার ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।