রাজধানীর পল্লবীর মিরপুর ১১ নং বড় মসজিদে (বায়তুল মোয়াজ্জেম) কমিটির তালিকায় এক মাদক ব্যবসায়ীর নাম থাকায় জুম্মা নামাজের মধ্যেই হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে সাধারণ মুসল্লীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) রাত ১১ টা পর্যন্ত এ নিয়ে মিরপুর ১১ নং বড় মসজিদের আশেপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল।
জানা যায়, শুক্রবার জুম্মা নামাজের খুতবা চলাকালীন সময় বায়তুল মোয়াজ্জেম জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আফাজ উদ্দিন সরদার নকশা অনুযায়ী মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দিলে মসজিদ কমিটির সভাপতি মোস্তাক আহমেদ তা প্রত্যাখ্যান করেন। এ নিয়েই মসজিদের ভেতর একটি উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এসময় মসজিদের মুসল্লীরা মোস্তাককে কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বড় মসজিদের কয়েকজন মুসল্লী বলেন, গত ২ বছর থেকে
এই মসজিদের কোনো কমিটি ছিল না। গত বছরের জুন মাসে ঢাকা ১৬ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ এই মসজিদের একটি নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। আবার সেই কমিটি ভেঙে দিয়ে গত ৭ জানুয়ারি পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটিতে পল্লবীর কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী জাহিদের নাম থাকায় গতকাল থেকেই মুসুল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। কমিটিতে মাদক ব্যবসায়ী জাহিদকে সদস্য করায় আলোচনা-সমালোচনা চলছিল।মুসল্লীরা জানান, এই মসজিদের সভাপতি মোস্তাক আহমেদ নিজেও বিতর্কিত মানুষ। বহুবার মসজিদের উন্নয়নের টাকা মেরে দিয়েছেন। মসজিদের নামে থাকা একটি গোডাউন দখল করেছেন এবং আরেকটি গোডাউন দখলের চেষ্টা করছেন। তার ৭ ছেলের মধ্যে একজন এলাকার নামকরা মাদক ব্যবসায়ী আরেকজন হত্যা মামলার আসামি। নিজের সন্ত্রাসী ছেলেদের জোরেই মোস্তাক মসজিদ কমিটি দখল করেছে। মাদক ব্যবসায়ী জাহিদের নামও মোস্তাকের সম্মতিতে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।এখন সাধারণ সম্পাদক আফাজ সরদারের উপর দোষ চাপিয়ে তাকে সরানোর চেষ্টা করছে মোস্তাক আহমেদ। নতুন মসজিদ কমিটি একটি হাজিরা খাতায় বানানো হয়। সে খাতায় মোস্তাক ও আফাজ দুইজনই সাক্ষর করেছেন। কিন্তু এখন মসজিদ কমিটির সভাপতি মোস্তাক কিছু জানেন না এমন দাবি করছেন। এটা অযৌক্তিক।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াজেদ আলি বলেন, ‘নামাজের সময় বায়তুল মোয়াজ্জেম জামে মসজিদের সভাপতি মোস্তাক আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আফাজ উদ্দিন সরদারের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি বড় ধরনের সংঘর্ষের দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু সঠিক সময়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ ঘটনার মিমাংসা এখনো হয়নি। মসজিদের ভেতর এরকম হওয়াটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। মসজিদের কমিটিকে কেন্দ্র করে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয় তাহলে উভয় পক্ষেরবিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে বায়তুল মোয়াজ্জাম জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক আফাজ উদ্দিন সরদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ততার কথা জানিয়ে ফোন রেখে দেন।