প্রাথমিকের প্রশ্নফাঁস চক্রের হোতা ছাত্রলীগ নেতা বাপ্পিসহ আটক ১০

0
141

ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের হোতা কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কয়েকটি ইলেট্রিক ডিভাইস, ব্লুটুথ, ৮টি মোবাইল সেট ও প্রতারনার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া দেড় লাখ টাকা। শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নগরীর গীর্জা মহল্লা সড়কে আবাসিক হোটেল ইম্পেরিয়াল ও সার্কুলার রোডে ছাত্রলীগ নেতার বাসায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে মালামাল উদ্ধার ও তাদের আটক করে।

আটককৃতরা হলো- বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ ছাত্রলীগের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম বাপ্পি, তার অন্যতম সহযোগী মেহেন্দিগঞ্জের চরহোগলা গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম সোহেল (৩৫), মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেন ফকির (৩৯), পরীক্ষাথী ফাতেমা বেগম (২৯), মুলাদী উপজেলার দড়ির চর লক্ষ্মিপুর গ্রামের মো. আহসান হাবিব হাওলাদার (৩৫) ও তার পরীক্ষার্থী স্ত্রী নাজনিন নাহার মনি (২৭), একই গ্রামের মো. জহির উদ্দিন জুয়েল (৩৫) ও তার পরীক্ষার্থী স্ত্রী এলিনা বেগম রূপা (২৬), মেহেন্দিগঞ্জের চর হোগলা গ্রামের মো. বাদল বেপারী (৩৮) ও তার স্ত্রী জায়েদা খাতুন (৩০)। ১০ সদস্য’র এই দলটি ক্ষুদ্র হলেও এদের নেটওয়ার্ক দেশব্যাপী।

গতকাল শনিবার কোতয়ালী মডেল থানায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মো. মাহফুজুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উপস্থিত সংবাদিকদের তিনি জানান, গতকাল জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়োগ পরীক্ষায় কিছু প্রতারক চক্র পরীক্ষার্থীদেরকে ইলেট্রনিক্স ডিভাইস এর মাধ্যমে প্রশ্নের উত্তর বলে দিয়ে সহায়তা পূর্বক চাকুরী পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়। গোপনে এমন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কোতয়ালী পুলিশের একটি বিশেষ অভিযানিক দল আবাসিক হোটেল ইম্পেরিয়ালে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় হোটেলের চতুর্থ তলার ৪০৬ নম্বর কক্ষ হতে মো. শহিদুল ইসলাম সোহেলকে আটক করা হয়। একই সাথে হোটেল থেকে পরীক্ষার্থী ও তাদের স্বজনসহ আরো ৬ জনকে আটক করা হয়।

পুলিশ কমিশনার জানান, আটককৃত মো. শহীদুল ইসলাম সোহেল’র দেয়া তথ্য অনুযায়ী ডিভাইস এর মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মুল হোতা ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল করিম বাপ্পির নিউ সার্কুলার রোডের বাসায় অভিযান করা হয়। এ সময় নিজ ঘরে বক্স খাটের নিচে আত্মগোপন করা ছাত্রলীগ নেতা বাপ্পিকে আটক করা হয়। তার বাসা থেকে পরীক্ষার্থী জায়েদা খাতুন ও তার স্বামী বাদল বেপারীকেও আটক করা হয়েছে। বাপ্পি ২ লাখ টাকার বিনিময়ে এক একটি ডিভাইস বিক্রি করেছে পরীক্ষার্থীদের কাছে। যার মধ্যে তিনজনের কাছ থেকে প্রতারক শহীদুল ইসলাম ছয় লাখ টাকা গ্রহন করে। যা থেকে দেড় লাখ টাকা শহীদুলকে দিয়ে বাকি সাড়ে চার লাখ টাকা রেজাউল করিম বাপ্পি নিয়েছে। যারা ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস গ্রহন করেছে তাদেরকে হোটেল ইম্পেরিয়ালে বসেই ব্লুটুথ ডিভাইস এর মাধ্যমে প্রশ্নের উত্তর বলে দেয়ার পরিকল্পনা ছিলো রেজাউল করিম বাপ্পি সহ চক্রটির।

এদিকে প্রেস ব্রিফিং কালে অভিযানের দিক নির্দেশনা দেয়া উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) গোলাম রাউফ খান বলেন, আটককৃদের মধ্যে ৪ জন বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রক্সি দেয়ার কাজ করতো। বাকিরা ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্লুটুথ’র মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর বলে দিতো। আটককৃত ১০ জনের বিরুদ্ধেই কোতয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক এসআই মহিউদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেছে।

LEAVE A REPLY