মোঃ আফজাল হোসেন ॥ সাধারন মানুষের কাছে নিত্যপন্যদ্রব্য সামগ্রী যখন ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে ঠিক তখনই ওমমএস’র আটার গুরুক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে সাধারন মানুষের কাছে। বাজারের চেয়ে কেজি প্রতি অন্তত ১০টাকা কম বলেই ওমমএস’র আটা জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। তাই ডিলার সংখ্যা ও সরবরাহ বৃদ্ধির দাবী এসব ভ’ক্তভোগীদের।
দীর্যদিন ধরেই পেঁয়াজ,লবনসহ নিত্যপন্যদ্রব্য সামগ্রী নিয়ে সাধারন মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ রয়েছে। আন্দোলন সংগ্রাম করা হলেও বর্তমানে শীত মৌসুমমের ফলে আটার চাহিদা অনেকাংকাশে বৃদ্ধি পেয়েছে সাধারন ক্রেতাদের মাঝে। বাহিরে আটার কেজি প্রায় ৩০টাকা হলেও সরকার ওমমএস এর মাধ্যমে মাত্র ১৮টাকা দরে ভালো মানের আটা দিচ্ছে। জনপ্রতি প্রতিদিন কেজি করে নিতে পারছে। যে কারনে নারী-পুরুষ সকলেই আটা নিচ্ছে।
গতকাল সরেজমিন বাজার দরের উপর সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে আটা নিয়ে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়। আটা ক্রয় করতে আসা শহরের যুগীরঘোল এর মোকাম্মেলুর রহমান এর দোকানে আটা নিতে আসা মোসা: আয়শা বেগম বলেন,এখন চাউলের দাম অনেক বেশি। এছাড়া স্বামী ও সন্তানরা সকালে আটার রুটে খুব বেশি পছন্দ করে। তাই প্রতিদিন তার আটা নিতে হচ্ছে। ভালোর মানের আটা বলেই তিনি এখান থেকে নিচ্ছেন। তবে আটা বিক্রির সময় ও ডিলার সংখ্যা আরো বাড়ালে ভালো হত বলে তিনি মন্তব্য করেন। অপরদিকে হাচিনা বিবি বলেন,অনেক দুর থেকে প্রতিদিন ৫ কেজি করে আটা নিতে হচ্ছে। সকালে ও রাতে বাসার সকল্ইে আটার রুটি খায়। শীত মৌসুমের ফলে আটার রুটি একটি বেশি প্রিয় বাচ্চাদেও কাছে। তবে আটার দও নিয়ে কোন অভিযোগ নেই তার। অপরদিকে শহরের কালীবাড়ি রোড এলাকার মোঃ ফারুক বলেন,প্রতিদিন অনেক চাহিদা রয়েছে আটার। তবে যে পরিমানের আটার চাহিদা রয়েছে,সে পরিমানের আটা তারা দিতে পারছে না। ফলে ক্রেতারা তাদের উপর অখুশি। বাজারের চেয়ে প্রায় ১০টাকা আটার দাম কম বলে সাধারন মানুষ আটা ক্রয় করছে বেশি। এসময় মোঃ শামিম নামের একজন ক্রেতার সাথে আলাপ হলে তিনি বলেন,শীতের ফলে আটার রুটির হাহিদা অনেক বেশি। তাই বাসার জন্য প্রতিদিন ৫ কেজি কওে আটা নিচ্ছে। এর সরবরাহ আরো কয়েক গুন বৃদ্ধিও পাশাপাশি ডিলারের সংখা আরো বাড়ানোর দাবী তার।
জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত ভোলা পৌরসভার ১০ টি ওএমএস দোকান পয়েন্টের মাধ্যমে খোলা বাজারে আটা বিক্রি করা হয়। প্রতিটি ওএমএস পয়েন্টের দোকানে দৈনিক ১শত জন গ্রহকের কাছে সর্বোচ্চ ৫ কেজি করে বিক্রির জন্য ৫শত কেজি করে আটা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। আর এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ১৮ টাকা। সপ্তাহে ৬ দিন বিক্রি নিয়ম রয়েছে। সে হিসেবে ৩০টন আটা সপ্তাহে দেয়া হচ্ছে।
এদিকে সারা বছর এ আটার চাহিদা থাকলেও বর্তমাণে এ আটার চাহিদা বেড়েছে প্রায় তিন গুন। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ নেই খাদ্য অধিদপ্তরের।
এদিকে শহরের আরো বেশ কয়েকটি পয়েন্টে গেলে ক্রেতা আলম, মানিক ও হারুন জানান, ভোলার বাজারের এ আটার দাম ৩০-৩৫ টাকা। কিন্তু আমরা ওএমএস দোকান পয়েন্ট থেকে মাত্র ১৮ টাকা দামে ক্রয় করতে পারি। এতে আমাদের টাকা অনেক বেঁচে যায়। তারা আরো জানান, এক ৫ কেজির বেশি ক্রয় করতে পারে না। যদি আরো বেশি ক্রয় করা যেত তাহলে আমাদের জন্য ভাল হতো। শাহিদা,পারভিন ও হাফসানা জানান, বাজারের আটার চেয়ে এ আটা অনেক ফ্রেস। বাজারের আটার মধ্যে অনেক ভেজাল থাকে। কিন্তু ওএমএস দোকানের আটায় কোন ভেজাল নেই। এছাড়াও বাজারের চেয়ে দাম কম। এবং ওজনও ঠিকমত দেওয়া হয়। তারা আরো জানান, কম দামে ভাল মানের আটা কিনার জন্য আমরা ওই দোকান পয়েন্টে লাইনে দারিয়ে আটা ক্রয় করি। আরো বেশি বেশি মানুষকে আটা কেনার সুযোগ দেয়ার দবী তাদের।
এদিকে ভোলা খাদ্য অধিদপ্তরের অনুমোদিত ময়দার মিল খাঁন ফ্লাওয়ার মিল মালিক মোঃ জামাল উদ্দিন খাঁন জানান, ভোলার ১০টি ওএমএস দোকানের প্রতিদিন আমরা ৫ টন করে আটা সরবারাহ করি। আমরা মানুষের কথা চিন্তা করে কোন প্রকার ভেজাল ছাড়াই সম্পূর্ণ ভাল ও স্বাস্থ্য কর পরিবেশে এ আটা তৈরি করি। যার কারণে বাজারের দোকানের বেশি দামের আটার চেয়ে এ আটা অনেক ভাল ও মান সম্মত হওয়ায় মানুষের কাছে দাহিদা অনেক বেশি। আটার বিপরিতে সরকার আমাকে গম দিচ্ছে। আমি সরকার এর একজন মিলাল হিসেবে সুনামের সাথে কাজ করছি।
ভোলা জেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক তৌয়ুবুর রহমান জানান,ভোলায় ৫টি ওএমএস দোকানের দৈনিক ৫টন আটা বিক্রির কথা থাকলেও সব মানুষের মাঝে সুন্দরভাবে এ আটা বিতরণের জন্য আমরা ১০টি ওএমএস দোকান ডিলার দিয়েছি। তারা সততার সাথে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে আটা বিক্রি করেন। ওজন ও ভেজালেও কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এ আটার মান বাজারের খোলা আটার চেয়ে অনেক ভাল হওয়ায় এটির চাহিদা অনেক বেশি। এছাড়াও বর্তমাণে এর চাহিদা বেড়েছে তিনগুন। তবে চাহিদার চেয়ে অনেক কম আটা বিক্রির করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।