ভোলা নিউজ২৪ডটনেট। । দেশের উত্তরের জনপদ রংপুর বিভাগ। এই বিভাগের সর্ব-শেষ জেলা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিন্যাকুড়ি-উত্তর বড়ভিটা গ্রাম। আশেপাশের আর দশটা গ্রামের থেকে এই গ্রাম নিজেকে আলাদা করেছে শিক্ষার দিক দিয়ে। এখানে আছে অত্র এলাকার সব থেকে পুরনো প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি উচ্চ বিদ্যালয়। যেখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ শেষে অনেকেই পৌঁছে গেছেন দেশের সকল উচ্চ পর্যায়ে।
শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রগামী এই জনপদের মানুষ সকল সুযোগ-সুবিধা হাতের নাগালে পেলেও ইন্টারনেটের যুগে কাঠখড় পোহাতে হয় নেটওয়ার্ক পেতে। এই গ্রামের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ গ্রামীণফোন ব্যাবহার করে আসছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় কোন বাড়িতে ইন্টারনেট তো দূরের কথা; সামান্য কথা বলার নেটওয়ার্কও পাওয়া দুষ্কর। এ ব্যাপারে বহুবার এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হলেও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এই গ্রামের বাজারে আশা নামক এনজিওর উদ্যোগে স্বল্প পরিসরে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চালু ছিল। স্বভাবতই এর জন্য ইন্টারনেট অতীব জরুরী। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একমাত্র প্রশিক্ষক জুয়েল ইসলাম বলেন, আমাদের গ্রামের ঘরের ভেতরে ঢুকলে গ্রামীণফোনের কোন নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। এমন অবস্থায় ইন্টারনেট ছাড়া পাঠদান একেবারে দুরুহ হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে আমি গ্রামীণফোনে অভিযোগ জানিয়ে আসলেও এই পরিস্থিতি সমাধানের জন্য তারা কোন প্রকার উদ্যোগ নেয়নি। অন্যদিকে গ্রামীণফোন দাবি করছে সমুদ্রের ৩৮ কিলোমিটারেও মিলে তাদের নেটওয়ার্ক, এটা গ্রাহকদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণার সামিল বলে আমি মনে করি।
নেটওয়ার্ক নিয়ে নিজের অভিযোগের কথা জানান স্থানীয় ফাজিল মাদ্রাসার প্রাক্তন সিনিয়র শিক্ষিকা ও রত্নগর্ভা জননী জিন্নাতুন নেসা। তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে জাপান থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। একমাত্র ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। ছোট মেয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত আছেন।
অভিযোগ জানিয়ে তিনি বলেন, আমার তিনজন সন্তানই দূরে থাকে। খোজখবর নেওয়ার জন্য একমাত্র ভরসা মোবাইলফোন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে ঘরের ভেতর কোন নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। কথা বলতে হলে বাইরে বের হয়ে আসতে হয়। ইন্টারনেট দিয়ে যে ভিডিও কল দিবো তারও কোন জো নেই। বৃষ্টি বাদলের দিন তো যোগাযোগটুকুও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়।
তিনি বলেন, ২০০১ সাল থেকে আমি গ্রামীণফোন ব্যবহার করে আসছি সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য। কিন্তু প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধিত হলেও আমাদের এলাকায় নেটওয়ার্কের কোন পরিবর্তন হয়নি। এ ব্যাপারে অনেকবার অভিযোগ করা হলেও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।