রফিকুল ইসলাম মন্টু।।
উপকূলের কন্যা রাফি। পুরো নাম নুসরাত জাহান রাফি। ফেনীর সোনাগাজী পৌর এলাকায় বাড়ি তার। ‘রাফি’ নামটা বোধহয় এরইমধ্যে সকলের জানা হয়ে গেছে। গতকালের বিবিসির সংবাদসহ আজকের সকল সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে এ সংবাদ। প্রকাশ্য দিনের আলোয় ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে গুড়িয়ে মারার চেষ্টা হয়েছে তাকে। কী তার অপরাধ? শ্লীলতাহানি শিকার হয়ে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। মামলা তুলে নেওয়ার চাপ দেওয়া হচ্ছিল। এতে রাজি না হওয়ায়ই এই কান্ড। এমন ঘটনারও সাক্ষী হতে হলো আমাদের!!
রাফির মত সোনাগাজীর বহু মেয়েকে আমি চিনি। ওর মতোই অনেকে আমাদের সঙ্গে কী সুন্দর দেয়াল পত্রিকা তৈরি করেছে। সুন্দর করে লিখেছে প্রতিবেদন, ছড়া, কবিতা, গল্প। আমাদের দলে রাফি থাকলে সেও লিখতো, আঁকতো, দেওয়াল পত্রিকা তৈরি করতো। পুরস্কার পেতো। ঝলসে যাওয়া রাফি সোনাগাজীর সৃজনশীল পড়ুয়াদেরই একজন। ভাবতে কষ্ট হয়- এই ঘটনার জন্যেও একটি পরিকল্পনা করতে হয়েছে। কে কেরোসিন ঢালবে, কে আগুন লাগিয়ে দেবে এবং এই দলে কে কে থাকবে- সবই ঠিক হয়েছিল আগেই। ঠিক করা ছিল ঘটনার দিনক্ষণ। শুধু রাফি বা অন্য কেউ সেটা জানতো না। ওরা ছিল মুখোশধারী। তবে ওরা সকলে যে মেয়ে, এটা নিশ্চিত। কী করে কয়েকজন মেয়ে মিলে আনেকটা মেয়েকে দুনিয়া থেকে বিদায় দেওয়ার পরিকল্পনায় অংশ নিতে পারে? ভাবতে পারি না।
শ্লীলতাহানির ঘটনা গোপন করেনি রাফি। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অধ্যক্ষ গ্রেফতার হয়েছে। আমরা তো সব ঘটনার প্রতিবাদ করতেই বলি। কিন্তু প্রতিবাদ করতে গিয়ে, বিচার চাইতে গিয়ে মাশুল তো দিতে হলো রাফিকেই। শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নেওয়া হবে কীনা, মামলার বিচার হবে কী হবে না, পরে ভাবা যাবে। এখন রাফির ফিরে আসাটা জরুরি। রাফি ফিরে আসুক। ওর দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। তবে এই সময়ে ওর পাশে দাঁড়ানো খুবই জরুরি।