সোহেব চৌধুরী,চরফ্যাশন প্রতিনিধি,ভোলা নিউজ ২৪ডটনেট ।।রফ্যাশনের চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামের নতুন স্লুইজ বাজার সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন বেড়ি বাঁধের ঢাল কেটে অবৈধ ভাবে পাকা ঘর নির্মাণের অভিযোগ হওয়ার পরও নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। বাঁধের সরকারি জায়গা বিক্রি করা হচ্ছে মৌখিক চুক্তিতে অথবা উভয় পক্ষের মৌখিক সম্মতিতে। পজেশন বিক্রি এবং কেনার মধ্যে নেই কোনো দলিলপত্র। অন্যদিকে বেড়ীবাধের ঢালে আশ্রিত আসাদ রাড়ী ওরফে গান্দা নামের জনৈক ব্যক্তি দীর্ঘ বছর যাবৎ বসবাস করা সত্ত্বেও ক্ষমতাসীন দখলবাজরা তাকে উৎখাত করে দেয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে বসত ঘরের কিছু অংশ ভেঙ্গে দখল বনে যান। ভুক্তভোগী আসাদ রাড়ীর স্ত্রী নিরুপায় হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান, দলীয় সভাপতি, স্থানীয় মেম্বার সহ সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে তার মাথাগোজারে শেষ ঠিকানা উদ্ধারের জন্য। আসাদ রাড়ীর স্ত্রী জানান, আমাকে উৎখাত করার জন্য ইতিপূর্বে আমার ছেলে আঃ রহমানকে মারধর করে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয় নবু মাঝি সহ তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় স্থানীয় ছানাউল্লাহ দেওয়ান, রুবেল তালুকদার ও মনোয়ার জমাদার বেড়িবাঁধের ঢাল কেটে ইট দিয়ে পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করতে।
দোকানঘর নির্মাণকারী রুবেল তালুকদার এবং মনোয়ার জমাদার জানান, তারা স্থানীয় গফুর হাওলাদারের ছেলে নুরনবী মুন্সির নিকট থেকে দোকান ঘর নির্মাণের জন্য বেড়িবাঁধের ঢালে দৈর্ঘ্য ১৫ হাত এবং প্রস্ত ১০ হাত প্রতিটি পজেশন ১৭ হাজার টাকা দরে কিনেছেন।
বিক্রেতা নুরনবী (নবু)মুন্সি, রুবেল তালুকদার এবং মনোয়ার জমাদারের নিকট বেড়িবাঁধের ঢাল বিক্রির কথা জিজ্ঞাসা করলে তারা বিষয়টি স্বীকার করেছেন। ঢালের সরকারি জায়গা কি মূলে বিক্রি এবং কেনা হলো এমন প্রশ্নে কোনো পক্ষই মন্তব্য করেন নাই।
দোকান ঘর নির্মাণকারী ছানাউল্লাহ দেওয়ান জানান, তিনি আসাদ রাড়ী স্ত্রী ফজিলতের নিকট থেকে পজেশন কিনে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন। ফজিলতের ছেলে রহমান জানান, তার মা ছানাউল্লাহ দেওয়ানের কাছে ১৫ হাজার টাকায় একটি পজেশন বিক্রি করেছেন। এখন ঘর ভিটা বাড়ীও দখল করার চেষ্টা করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড খবর পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে এই সংবাদকর্মী নিজে ঘটনাস্থলে গেলে আবারো নতুন করে কাজ শুরু করতে দেখা গেছে। অভিযুক্তদেরকে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, আমরা থানায় যোগাযোগ করে কাজ করছি।
চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ মু. এনামুল হক জানান, অভিযোগ পেয়ে থানা থেকে ফোর্স পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করেছি। যদি পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কোন লিখিত মামলা পাই তাহলে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী কাওছার আলমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি অভিযোগ পেয়ে সাথে সাথে পুলিশ পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করিয়েছি। এখন যদি আবারো অন্যায় ভাবে কাজ শুরু করে থাকে তবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিভিন্ন সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশের পর আবার নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়সারা হস্তক্ষেপ নিয়ে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এলাকাবাসী প্রশাসনের দ্রুত দৃষ্টি কামনা করছে।