লালমোহনের চরকচুয়াখালীর শিশুরা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত

0
379

জাহিদুল ইসলাম দুলাল, লালমোহ প্রতিনিধি: শিক্ষা বঞ্চিত ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের চর-কচুয়াখালীর দুইশতাধীকেরও অধিক শিশু। সরকার ঘোষিত বিদ্যালয় বিহীন গ্রামে একটি করে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকার কথা। তারাই ধারাবাহিকতায় এই চরটিতে শহীদ আওলাদ হোসেন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালের মার্চ মাসের দিকে সরকারের ১৫ শত প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রকল্পের আওতায় শহীদ আওলাদ হোসেন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের উদ্বোধণ করা হয়।
সরকার এসব বিদ্যালয় স্থাপনের মধ্যে দিয়ে দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছেন। তবে বিদ্যালয়গুলোতে আজও কোনো শিক্ষক দেওয়া হয়নি। যার জন্য ওই এলাকার কোমলমতি শিশুরা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সরকারী এ বিদ্যালয় স্থাপনের আগ থেকে চর-কচুয়াখালীর কিছু শিশু প্রায় দীর্ঘ ৫ মাইল হেটে পটুয়াখালীর দশমনিয়া উপজেলার চর-হাদী’র একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়ালেখা করতো। যা অত্যান্ত কষ্টকর এসব কোমলমতি শিশুদের জন্য। চর-হাদীতে গিয়েও পড়ালেখা করতে অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয় তাদের। বর্ষাকালে চরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে শিশুরা বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। কারণ এচরে চলাচলের জন্য নেই কোনো রাস্তা।
তবে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে কয়েকবার কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হলেও এখন পর্যন্ত এ সমস্যা সমাধানে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
চর-কচুয়াখালীর শিশু মারুফ, আল-আমিন, শহিদ, রুপা ও ফাহিমা জানায়, আমরা এতোদিন যাবৎ হাদী’র চরে গিয়ে পড়ালেখা করতাম। সেখানে যেতে আমাদের অনেক সমস্যা হতো। কিছুদিন আগে আমাদের এখানে একটি বিদ্যালয় হয়। আমরা মনে করেছি এখানেই আমরা পড়তে পারবো। কিন্তু বিদ্যালয়ে শিক্ষক না থাকার কারণে আমরা এখানে পড়তে পারছি না।
অভিভাবক তরিকুল ইসলাম, হানিফ, মোস্তফা মিয়া ও বাচ্চু বলেন, আমরা ছেলে/মেয়েদের শিক্ষিত করতে চাই। এতোদিন আমাদের এলাকায় কোনো বিদ্যালয় না থাকার কারণে পাশ্ববর্তী উপজেলায় গিয়ে তাদের পড়ালেখা করতে হতো। কিছুদিন আগে এখানে একটি সরকারী বিদ্যালয় হয়েছে। তবে এখানে কোনো শিক্ষক না থাকার কারণে এখনো আমাদের ছেলে/মেয়েরা দশমিনা উপজেলার হাদী’র চরে গিয়ে পড়তে হয়। ওই বিদ্যালয়টি অনেক দূরে হওয়ায় ছেলে/মেয়েদের ওখানে যেতে অনেক কষ্ট হয়। যার জন্য তারা বিদ্যালয়ে যেতে চায় না। পুরো বর্ষার সময় এখানকার কোনো ছেলে/মেয়ে বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। তাই আমাদের দাবী এখানে যে বিদ্যালয়টি রয়েছে, সেখানে যেনো দ্রুত শিক্ষকের পোষ্টিং দেওয়া হয়।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান রুমি জানান, চর-কচুয়াখালী একটি বিচ্ছিন্ন স্থান। সেখানের শিশুদেরও পড়ালেখার অধিকার রয়েছে। আমি দ্রুত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে আলাপ করে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক পোষ্টিং দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। আশা করে শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।

LEAVE A REPLY