ভোলা নিউজ২৪ডটনে। । প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, নৌকা মার্কায় ভোট চাই, হাত তুলে ওয়াদা করেন ভোট দিবেন। সহযোগিতা করবেন। আমরা ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার সময় দেশের দারিদ্র্য যেখানে ৪০ শতাংশ ছিল, তা এই ১০ বছরে ২১ ভাগে নেমে এসেছে। আপনাদের সহযোগিতা চাই।
ময়মনসিংহ বিভাগের উন্নয়নে ১৯৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর শুক্রবার বিকেলে ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগে যেভাবে নৌকায় ভোট দিয়েছেন, আগামী দিনেও সেভাবে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করবেন, যেন দারিদ্রসীমা ৫-৬ ভাগ কমাতে পারি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহে আলাদা শিক্ষাবোর্ড, বিভাগীয় স্টেডিয়াম ও নভোথিয়েটার করার ঘোষণাও দেন।
জাতির জনককে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার কথা স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, মানুষ তার আপনজনকে হত্যার বিচার চাইতে পারে, আমাদের সেই বিচার চাওয়ার সুযোগও দেয়া হয়নি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করতে চেয়েছিল জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করে। এই ময়মনসিংহে তারা পাকিস্তানি বাহিনীর মতো অত্যাচার করেছিল।
২০০১ সালে আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করে নির্বাচনে হারানো হয় বলে অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারপর ২০০৮ সাল পর্যন্ত এ দেশকে পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল। ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এসে মানুষ মারে, নির্যাতন করে, আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কোন নির্যাতন করে না, দেশের উন্নয়ন করে। দেশ ও জনগণের উন্নয়নে সরকারের নানা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি চাই এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন হবে। এদের মানুষ দু’বেলা পেট পুরে ভাত খাবে। কেউ গৃহহারা থাকবে না, সবার উন্নয়ন হবে।
এসময় তিনি দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন জানিয়ে কবির ভাষায় বলেন, ‘নিঃস্ব আমি, রিক্ত আমি দেবার কিছু নেই। আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’ বলেই প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্য শেষ করেন।
জনসভায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আন্দোলন কই? এক ঈদ গেলে, বলে আরেক ঈদের পর আন্দোলন। কিন্তু নির্বাচনের আগে তো আর ঈদ নাই। এভাবে চলতে চলতে ১০ বছরে ২০ ঈদ গেলো। কিন্তু বিএনপির আন্দোলন আর আসে না। এ সময় ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, মরা গাঙে জোয়ার আসে? আসে না!
এ সময় বিএনপি ও গণফোরামসহ কয়েকটি দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংলাপ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চায়, বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করে, তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপের কোন কথাই ছিল না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তার উদারতা দেখিয়ে সংলাপে বসেছেন। এটা তার উদারতার প্রকাশ। আমরা কারও কাছে নতি স্বীকার করিনি, কারও চাপের মুখেও সংলাপে বসিনি, বলেও উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।
জনসভায় ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. জহিরুল হক খোকার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম যৌথভাবে জনসভা সঞ্চালনা করেন।
জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন- ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আ. রাজ্জাক, ড.দীপু মনি, আহমদ হোসেন, মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, বাবু অসীম কুমান উকিল, সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. ইকরামুল হক টিটু, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি, অ্যাড. মোসলেম উদ্দিন এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্তসহ ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।