ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বাংলাদেশ। এ জন্য বাংলাদেশ সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
আজ শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত এশিয়া-ইউরোপ মিটিং (আসেম)-এর পরিকল্পনাবিষয়ক একটি সেশনে ‘স্ট্র্যাংদেনিং ইকোনমিক কানেকটিভিটি’ বিষয়ে বক্তৃতায় এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ১৩ কোটি ৩২ লাখ মোবাইল ফোন, প্রায় সাত কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে প্রায় ৮০ ভাগ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে ২০ ভাগ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।’
কোরিয়ার ট্রেড, ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড এনার্জি বিষয়কমন্ত্রী উংউ পেইকের সভাপতিত্বে ‘প্লেনারি সেশন-২’-এ চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মিনিস্টার কা চুয়ান অং। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। এ সময় দেশের রপ্তানি হবে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে দেশের রপ্তানি প্রায় ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন দক্ষতার সঙ্গে বিশ্ববাণিজ্যে অবদান রাখার জন্য প্রস্তুত। বাংলাদেশ প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে ‘ইউএনএ্যাস্কাপের’ অধীন ফ্রেম ওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট অন ফ্যাসিলিটেশন অব ক্রস বর্ডার পেপারলেস ট্রেড ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’-এ গত ২৯ আগস্ট স্বাক্ষর করেছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় তথ্যপ্রযুক্তিসহ বেশ কিছু খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে রপ্তানিপণ্য বৃদ্ধি এবং রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আধুনিক ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহার করে ই-কানেকটিভিটি স্থাপনে বাংলাদেশ সক্ষম।’
তোফায়েল আহমেদ আরো বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ দ্বিতীয় সাইবার ক্যাবলে যুক্ত হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে দেশে ফোর-জি চালু হবে। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা দেওয়ার জন্য দেশব্যাপী পাঁচ হাজারেরও বেশি ডিজিটাল সেন্টার চালু করা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক যোগাযোগ কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হলে সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। বাণিজ্য জটিলতা হ্রাস, জ্বালানির সহজ প্রাপ্তি, তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান অর্জন এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগ সহজ করতে হবে।
‘বাংলাদেশের মানুষ অনলাইনে বেশির ভাগ সেবা গ্রহণ করছেন। বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সেবা প্রদানকারী অফিসগুলোকে অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে’- বলেও বক্তৃতায় জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তোফায়েল আহমেদ আরো বলেন, সরকারি দপ্তরগুলোকে ই-গভর্নেন্সের আওতায় এনে পেপারলেস করা হচ্ছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের সব ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতি চালুর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
এশিয়া-ইউরোপ মিটিং (আসেম)-এর সভায় আরো বক্তব্য দিয়েছেন সুইডেনের মিনিস্টার অব ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড অ্যাট দ্য মিনিস্ট্রি ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান লিনডি, বেলজিয়ামের ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার এবং এমপ্লয়মেন্ট, ইকোনমি, কনজ্যুমার রাইটস, ফরেন ট্রেডবিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস পিটার্স, স্পেনের ইকোনমি মিনিস্ট্রির মহাপরিচালক জোসে লুইস কাইসার মোরেইরাস, সুইজারল্যান্ডের ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্সের স্টেট সেক্রেটারি মারকুইস শিলাজেনহোফ এবং সিঙ্গাপুরের ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বিষয়ক সিনিয়র স্টেট মিনিস্টার ফোহ কন কো।
উল্লেখ্য, এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সেতুবন্ধ স্থাপনের লক্ষ্যে এ দুই অঞ্চলের ২৬টি দেশের সমন্বয়ে ১৯৯৬ সালে এশিয়া ইউরোপ মিটিং (আসেম) জোট গঠিত হয়। বর্তমানে এ জোটের সদস্যসংখ্যা ৫৩। বাংলাদেশ ২০১২ সালে আসেম-এ যোগ দিয়েছিল।