সড়কে ত্রাণ বিতরণে শৃঙ্খলা আনল সেনাবাহিনী

0
403

ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট : কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিতরণে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আজ শনিবার দুপুরে কাজ শুরু করেন সেনাসদস্যরা।

সেনাবাহিনী দায়িত্ব নেওয়ার পরই রাস্তার ওপর ত্রাণ বিতরণে এতদিন যে বিশৃঙ্খলা দেখা যেত, তা আর দেখা যায়নি। ফলে সড়ক যোগাযোগের দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন স্থানীয়রা।

এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার উখিয়ায় যে দুই হাজার একর জমি নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেখানে সেনাবাহিনী তৈরি করবে ১৪ হাজার শেড (তাঁবু)। এসব শেডের প্রতিটিতে ছয়জন করে ৮৪ হাজার পরিবারকে বসবাসের সুযোগ করে দেওয়া হবে।

এর আগে গতকাল শুক্রবার সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় এসে চলমান প্রতিটি কাজ পর্যবেক্ষণ করে প্রাথমিক ধারণা নেন। এরপর কোথায় কী করতে হবে তা নির্ধারণ করে ফিরে যান।

আজ দুপুরে ৩৬ বীর, ২৪ বেঙ্গল ও ৬৩ বেঙ্গল নামে সেনাবাহিনীর তিনটি দল রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থল উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী আসে।

এখানে কাজ করতে আসা সেনাদের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর মুহাম্মদ রাশেদ আকতার জানান, পূর্ব সিদ্ধান্তমতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় এসে সেনাসদস্যরা প্রথমে সড়কে যত্রতত্র ত্রাণ বিতরণ বন্ধ করে সড়কে শৃঙ্খলা আনতে কাজ শুরু করেন। অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন দাঁড়ানো, রাস্তায় রোহিঙ্গাদের অহেতুক জটলা সরিয়ে দিয়ে সড়ক যোগাযোগ নির্বিঘ্ন করা হচ্ছে।

এরপর নিয়ন্ত্রণকক্ষে জমা হওয়া দ্রুত পচনযোগ্য তাজা খাবারগুলো আলাদা করে বিতরণের জন্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানান এই সেনা কর্মকর্তা। তিনি জানান, বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের আওতায় আসা রোহিঙ্গারাই এসব ত্রাণের আওতায় আসছে। এর মাধ্যমে বায়োমেট্রিকের সুবিধার তথ্যটা রোহিঙ্গাদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছেন বলেও জানান তাঁরা। তিনি বলেন, ‘যাতে কচ্ছপ গতি থেকে চলমান এ নিবন্ধন প্রক্রিয়াটা খরগোশ গতিতে আসে।’

কাজের সুবিধার্থে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের পরিত্যক্ত একটি কক্ষকে কোম্পানির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে উল্লেখ করে মেজর মুহাম্মদ রাশেদ আকতার আরো বলেন, ‘আজ প্রথম দিন হিসেবে শুধু শৃঙ্খলাটা আনয়নে কাজ করছি, তাই শেড নির্মাণে হাত দেওয়া যাবে না। কাল রোববার থেকে একটি টিম শেড নির্মাণের কাজ শুরু করবে।’

গতকাল সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, নিপীড়নের শিকার হওয়ার পর আশ্রয়ের আশায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে রোহিঙ্গারা। মানবিকতার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক সহায়তা দিতে নির্দেশ দেন। এর পর থেকে তাদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। শুধু ত্রাণ দিলে হবে না, তাদের জন্য সুষ্ঠু স্যানিটেশন ব্যবস্থা, সুপেয় পানিসহ পরিচ্ছন্ন আবাসন দরকার। তা নিশ্চিত করা সম্ভব না হলে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে হবে। এটি স্থানীয়দের জন্যও হুমকিস্বরূপ। তাই দ্রুততার সঙ্গে শৃঙ্খলভাবে কাজ সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসন সেনাবাহিনীর সহায়তা নিচ্ছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক উখিয়ায় কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে চলমান কার্যক্রমের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন।

LEAVE A REPLY