‘সাজাপ্রাপ্তদের নেতৃত্বের অধীনে গেছে সুশীল সমাজের কিছু সদস্য’

0
357

বাসস ।। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের ড. কামাল হোসেন সাহেবসহ যে সুশীল বাবুরা এক জায়গায় হয়ে গেছেন সবাই অনেক নীতির কথা বলেন, তাঁদের সেই নীতি কোথায় গেল? কার অধীনে আজকে তাঁরা মনোনয়ন নিচ্ছেন।’ তিনি বলেন, ‘তাঁরা সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নেতৃত্বের অধীনে চলে গেছেন।’

আজ মঙ্গলবার সশস্ত্র বাহিনীর দেড় শতাধিক সাবেক কর্মকর্তার আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ উপলক্ষে গণভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা এক সময় আইনকেই মানেনি তাদের কাছ থেকে মনোনয়ন নিয়ে তারা নাকি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে। তারা জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাস দূর করবে এবং দেশকে নাকি উন্নত করে দেবে।’

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নৌকার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের লক্ষ্যে দেড় শতাধিক সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সাবেক প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল ওয়াদুদ, রিয়ার এডমিরাল (অব.) হারুনুর রশীদ, এয়ার কমোডর (অব.) কাজী দেলোয়ার হোসেন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ডা. কানিজ ফাতেমা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং বি এম মোজাম্মেল হক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাগণ ফুলের তোড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। এর মধ্যে ১০৯ জন সেনাবাহিনীর, ১৯ জন নৌবাহিনী এবং ১৮ জন বিমানবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা আমাকে দুর্নীতিবাজ বলে বক্তৃতা দিয়েছে, তারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, আজকে সব ভিড়েছে গিয়ে কোথায়? গণতন্ত্র রক্ষা করতে, গণতন্ত্রের অভাব কোথায়?’

এই বিএনপির আমলেই দেশ পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

যে দলের গঠনতন্ত্রের ৭ ধারায় আছে দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে তারা দলের সদস্যও হতে পারবে না। কাজেই যারা দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের জন্য সাজাপ্রাপ্ত, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সাজাপ্রাপ্ত সেই সাজাপ্রাপ্ত মানুষের নেতৃত্বে চলে গেছে আমাদের এই সুশীল বাবুরা, গণতন্ত্র উদ্ধার করতে, এটা বাংলাদেশের এক দুর্ভাগ্য।’

শেখ হাসিনা এ সময় গণতন্ত্রের সংজ্ঞা কি প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘তারা কোন গণতন্ত্র দিতে চায়, তার সংজ্ঞাটি কী? এটা নিশ্চয়ই জনগণের গণতন্ত্র নয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা জাতির পিতার হত্যাকারী তাদের পুরস্কৃত করা, সামরিক শাসন জারি করে মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে, ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে নির্বাচনকে পর্যন্ত কলুষিত করেছিল, দেশের হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারকে যারা হত্যা করেছিল, একের পর এক ক্যু নিজেই সৃষ্টি করে যারা হত্যাযজ্ঞ চালায়, বিচারাধীন যুদ্ধাপরাধী, সাত খুনের আসামিদের যারা ছেড়ে দিয়ে যারা তাদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছে তাদের সাথে হাত মিলিয়ে কোন গণতন্ত্র তারা আনতে চায়, সেটা একটা প্রশ্ন আমার তাদের কাছে।’

খালেদা জিয়ার এতিমের অর্থ আত্মসাতের মামলা তাঁর সরকার করেনি বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে তাঁর নিযুক্ত সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফখরুদ্দিন গং দিয়েছিল এবং ১০ বছর আদালতে মামলা চললেও খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তাঁকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন বলেও স্মরণ করিয়ে দেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর সরকার কোনো রাজনৈতিক মামলা করেনি। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করে এনার্জি লস করার চাইতে তিনি বরং দেশের উন্নয়নে নজর দিয়েছিলেন।’

LEAVE A REPLY