লকডাউনের নামে প্রতারণা করছে সরকার : মির্জা ফখরুল

0
0

ভোলা নিউজ ২৪ ডটকম :: লকডাউনের নামে সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব  মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা ওয়ার্ক্যাবল (লকডাউন) না কিন্তু। একটাও কাজ করে না। ঢাকাতেও লকডাউন আছে। আপনি লকডাউন কোথাও দেখতে পান? কোথায় লকডাউন? আমি তো দেখতে পাই না। যার যেখানে খুশি যাচ্ছে, যার যেখানে যা খুশি করছে এমনকি বিয়েও হচ্ছে। আমি পরশুদিন দেখলাম, একটা হোটেলে বিয়েও হচ্ছে। অথচ দেয়ার ইজ ব্যান্ড। এই যে সরকারের পুরোপুরি যে উদাসীনতা এবং এটা লোকদেখানো একটা ব্যাপার। এটা প্রতারণা মানুষের সঙ্গে যে, আমরা লকডাউন দিচ্ছি, চেষ্টা করছি।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আপনি খেয়াল করে দেখবেন যে, ‘ল অ্যান্ড ফোর্সেস এজেন্সিজ’ যাদের এই লকডাউন ইমপ্লিমেন্ট করার কথা, তাদেরকেও দেখা যায় না আজকাল। দে আর নট ভিজিবল, তারা ভিজিবল না এখন। দেখলাম পত্রিকায় একজন কনস্টেবল মারা গেছেন। তার আবার ছবি দিয়ে বিরাট করে ছাপা হয়েছে। আর এদিকে শত শত লোক মারা যাচ্ছে তাদের কোনো কথা নেই।

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, আর বলতে চাই না। বিশেষ প্রাণী পানি খায়, ঘোলা করে খায় আরকি। আমরা বহু আগেও তাদের (সরকার) বার বার সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি, করোনা মোকাবিলায় এসব ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তারা নেয়নি। বহুদিন পরে তারা এখন এসব ব্যবস্থা (লকডাউন) নিচ্ছে। এখন বলে বলে আর বলতে ইচ্ছা করে না। কী বলবেন? এদের তো চামড়া মোটা। এই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কবেই পদত্যাগ করা উচিত ছিল। সে করে নাই। দুর্ভাগ্যজনক উল্টো তারা ডিফেন্ড করছে, সবাই সবাইকে। খুব ভালো কাজ করছে। এতো ভালো স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাকি আর হয় না।’ সুত্র এনটিভি অনলাইন

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের স্থায়ী কমিটির সভায় অবিলম্বে করোনার টিকা সংগ্রহ ও বিতরণের রোড ম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হয়। জনগণ জানতে চায়, সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য কী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে?’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘এনআইডি প্রকল্পের বিষয়ে ইসি চিঠি দেওয়ার পরেও সরকার সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে দুই লাইনের একটা চিঠি দিয়ে। এটা একটা অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েও তারা (সরকার) একটা চক্রান্ত, একটা ষড়যন্ত্র করতে যাচ্ছে, যাতে তারা জনগণের পরিচয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আমরা এহেন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাচ্ছি। সরকারকে তার এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা সত্যি কথা যে পরিচয়পত্র দেওয়ার ব্যাপারটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতেই থাকা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশে যেহেতু পরিস্থিতিটা সম্পূর্ণ উল্টো। এখানে আওয়ামী লীগের সরকার যারা আছে, তারা এটা পুরোপুরিভাবে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করবে বলে সবাই বিশ্বাস করে। ‘এটা শুধু বিএনপির কথা নয়, নির্বাচন কর্মকাণ্ডসহ অন্যান্য বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত, এনজিও যারা আছেন, তারা সবাই বলছে যে, এটা কোনোমতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে যাওয়া উচিত নয়। তাহলে সরাসরি সরকারের হাতে পড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে সংবিধানে ইসির অন্তত একটা স্বতন্ত্র স্ট্যাটাস আছে, তাদের হাতে থাকাটা বেটার বলে করি আমরা মনে করি এবং সবাই মনে করছেন।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত আঙ্কটাডের সর্বশেষ বিনিয়োগ রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, এখানে বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় ১১ শতাংশ কমে গেছে। এটার কারণটা হচ্ছে যে তারা নিজেরাই, আঙ্কটার্ড ও বিশ্ব ব্যাংকের লোকেরা বলছেন যে, এখানে বিদেশিদের বিনিয়োগ করার কোনো পরিবেশ নাই। কেন নেই? এখানে যে দুঃশাসন, গর্ভনেন্সের অভাব, দুর্নীতি এবং সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে এখানে যখন কিছু বিনিয়োগ করতে যায় তাকে কেঁদে কেঁদে সব ফেলে দিয়ে যেতে হয়। তারপরে কন্সট্রাকশন করতে গেলে চাঁদা দিতে হয়। এখানে কোনো বিনিয়োগের পরিবেশ বিরাজ করে না। অথচ সরকারের ঢোল বাজছেই সব সময় যে, এখানে উন্নয়ন উন্নয়ন হয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নটা কোথায়? কয়েকটা ব্রিজ তৈরি করা, কয়েকটা উড়াল সেতু তৈরি করা এগুলোকে উন্নয়ন বলব নাকি? উন্নয়ন সেটা, যেটাতে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়, অভাব কমে। যেখানে দরিদ্রের সংখ্যা বেড়ে গেছে দুই কোটি, সেখানে কোন যুক্তিতে উন্নয়ন বলতে পারি?’

সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সেক্টর আছে যেখানে বাংলাদেশের প্রচণ্ড রকমের সম্ভাবনা আছে। আঙ্কটার্ড থেকে বলা হচ্ছে যে, এখানে ফার্মাসিউটিক্যালসের বিশেষ করে এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ একটা পটেনশিয়াল একটা জায়গা। তারপরেও সরকার সে বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছে না। আমরা মনে করি, অবিলম্বে বাংলাদেশে টিকা উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত এবং এখানে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত বলে আমরা মনে করি।’

LEAVE A REPLY