মিয়ানমারের উদ্দেশে জাতিসংঘে বাংলাদেশের কঠোর বার্তা

0
312

ভোলা নিউজ২৪ডটনেট ।। রোহিঙ্গা সংকট যে মিয়ানমারের তৈরি বৈশ্বিক এক বিষফোঁড়ার নাম, সেটা এখন আর গোপন নয়। প্রতিবেশী দেশের একটি নিগৃহীত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রতি সমমর্মিতা দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের সাময়িক সময়ের জন্য আশ্রয় দিলেও কাণ্ডজ্ঞানহীন মিয়ানমার যেন তাকে দুর্বলতা হিসেবেই নিয়েছে। এজন্য বাধ্য হয়েই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমারের বিষয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে বলেছেন: ‌‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা আর কোনো রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করবে না। কারণ, বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের ফিরিয়ে নেয়ার আলোচনায় মিয়ানমার শুধু ফাঁকা প্রতিশ্রুতিই দিয়েছে।’

পররাষ্ট্র সচিব জাতিসংঘকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যথাযথ বার্তা দিয়েছেন বলেই আমরা মনে করি। কারণ, গত বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তি অনুসারে প্রতি সপ্তাহে ১৫শ’ করে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেয়ার কথা ছিল মিয়ানমারের। এভাবে বাংলাদেশ থেকে সব রোহিঙ্গাকে দু’বছরের মধ্যে ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্য রয়েছে বলেও দেশটি জানিয়েছিল।

কিন্তু মিয়ানমার চুক্তি ভঙ্গ করেছে। এমনকি জাতিসংঘও এখানে ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে তারা বাধ্য করতে পারেনি। সুতরাং মিয়ানমার যেহেতু কথা রাখছে না, তাই বাংলাদেশের পক্ষেও আর কোনো রোহিঙ্গা গ্রহণ করা সম্ভব নয়।

এর পাশাপাশি আমরা বরাবরের মতো জোরালোভাবে বলতে চাই, নতুন করে রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করা তো দূরের কথা, বরং রাখাইনে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে। এক্ষেত্রে জাতিসংঘকে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। কারণ, রোহিঙ্গা সংকটের সময় জাতিসংঘসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ ও সংস্থাগুলো মানবিক দিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল।

তাই জাতিসংঘের কাছে পররাষ্ট্র সচিবের এই প্রশ্ন যথাযথ যে, তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রতি সমমর্মিতা দেখিয়ে সংবেদনশীল ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়ার মূল্য দিচ্ছে বাংলাদেশ? এই প্রশ্নের উত্তর জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দিতেই হবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে বাংলাদেশকে এ বিষয়ে আরও জোরালো কূটনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।

LEAVE A REPLY