ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট।।
- গত সপ্তাহ থেকে অনুসন্ধান চালিয়ে গতকাল খনন শুরু হয়
- খননের নেতৃত্বে জাবির অধ্যাপক সুফি মুস্তাফিজুর রহমান
- খননে পাওয়া দুর্গটি বর্গাকার, প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য ২৭২ মিটার
- এটি ছিল সেন বংশের রাজা বল্লাল সেনের দুর্গ-প্রাসাদ
- সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন ছিলেন লক্ষ্মণ সেনের বাবা
- বল্লাল সেনের নামে মুন্সিগঞ্জের গ্রামটির নাম ‘বল্লাল বাড়ি’
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের বল্লাল বাড়ি গ্রামে খনন করে ইতিহাস খ্যাত রাজা বল্লাল সেনের প্রাচীন প্রাসাদের সন্ধান পাওয়া গেছে।
এই প্রত্ন খননের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মুস্তাফিজুর রহমান।
গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বল্লাল বাড়ি গ্রামের একটি পানের বরজের মাটি খুঁড়ে দলটি এই প্রত্ননিদর্শন পায়।
সুফি মুস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, এটি ছিল সেন বংশের রাজা বল্লাল সেনের দুর্গ-প্রাসাদ।
এই এলাকায় গত সপ্তাহ থেকে অনুসন্ধান চালিয়ে গতকাল খনন শুরু হয়। সুফি মুস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, খনন করে পাওয়া দুর্গটি বর্গাকার। এর প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য ২৭২ মিটার। দুর্গের চারদিকে পরিখা ছিল। পরিখা প্রায় ৬০ মিটার প্রশস্ত। রামপাল কলেজের কাছে এখনো একটি পরিখা দৃশ্যমান আছে। অন্যগুলো ভরাট করে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে।
বাংলায় সেন রাজবংশের দ্বিতীয় রাজা ছিলেন বল্লাল সেন। তাঁর শাসনকাল ১১৬০ থেকে ১১৭৯ খ্রিষ্টাব্দ। তিনি ছিলেন সেন রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা বিজয় সেনের ছেলে। বল্লাল সেন ছিলেন লক্ষ্মণ সেনের বাবা। বল্লাল সেনের নামেই মুন্সিগঞ্জের এই গ্রামটির নাম ‘বল্লাল বাড়ি’।
সুফি মুস্তাফিজুর রহমান জানান, বল্লাল সেনের এই প্রাসাদ একটি দুর্গ। কিন্তু খনন না করার কারণে আগে এর সন্ধান পাওয়া যায়নি। গতকাল খননকাজ শুরু করার মাধ্যমে সেই চিহ্ন পাওয়া যাচ্ছে। মাটির দু-তিন ফুট নিচে প্রাচীন ইট, ইটের টুকরা, মৃৎপাত্রের টুকরা ও কাঠ-কয়লা পাওয়া গেছে। প্রথমে খননকাজ শুরু করা হলে প্রাচীন প্রত্নস্থানের নিদর্শন হিসেবে এই জিনিসগুলোই পাওয়া যায়। পরবর্তী সময়ে বিস্তৃত আকারে খনন করলে দেয়াল বেরিয়ে আসে। খননকাজ চালিয়ে যেতে পারলে বল্লাল সেনের রাজপ্রাসাদ, মন্দির, রাস্তাঘাট—সবকিছু পাওয়া যাবে। এ সময় তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
নিদর্শনটির খবর পেয়ে পরিদর্শনে যান মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুখ আহম্মেদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সভাপতি নূহ-উল-আলম লেনিন।