মহাশুন্যে ভাসমান আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের দুটি শৌচালয়ের মধ্যে একটিও কাজ করছে না। ফলে সেখানকার সব নভোচারীকে ডায়াপারের উপরেই দিন কাটাতে হচ্ছে।
দেহের সমস্ত বর্জ্য বের করার জন্য ডায়াপারই এক ও একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি এ কথা জানায় মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের কমান্ডার লুসা পরমিটানো জানিয়েছেন, আমেরিকার অংশে থাকা শৌচালয়টি প্রতিনিয়ত যান্ত্রিক গোলযোগের সিগন্যাল দিচ্ছে। অন্যদিকে, রাশিয়ার অংশের শৌচাগার এতটাই অপরিচ্ছন্ন যে তা আর ব্যবহারের উপযোগী নেই। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএসে সময় কাটানোই একটা চ্যালেঞ্জ। আর সেখানে যদি এভাবে সব খারাপ হতে থাকে, তাহলে তো সমস্যা আরও বাড়ে। সম্প্রতি সেই সমস্যাই আরও জটিল আকার নিয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে রয়েছে দুটি মাত্র শৌচাগার। আর সেই দুটিই একইসঙ্গে অকেজো হয়ে গিয়েছে।মহাকাশচারীদের রীতিমতো নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে পরিস্থিতি সামাল দিতে।
রাশিয়ান স্পেস এজেন্সি রসকসমস সম্প্রতি জানায়, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে রাশিয়ার তৈরি দুটি শৌচাগারের কোনোটিই আর কাজ করছে না। একটি রাখা আছে আমেরিকার অংশে, দ্বিতীয়টি রাশিয়ার অংশে। এর একটি একেবারের কানায় কানায় পূর্ণ। তাই সেটি কোনো অবস্থাতেই আর ব্যবহার করা চলবে না। অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের ব্যবহারযোগ্য আর একটি শৌচালয় ছিল এতদিন। আর তারপরে যখন আর একটিও বিকল হয়ে যায়, মহাকাশচারীদের মাথায় হাত পড়ে।
মহাকাশচারীদের হাতে এখন উপায় মাত্র দুটি। এক তাদের ডায়াপার পরেই কাজকর্ম করতে হবে। অথবা সুয়োজ স্পেসশিপ, যেটি ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে রয়েছে, সেটি ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু এভাবে কতদিন?
রসকসমসের তরফে জানানো হয়েছে, অন্য আর একটি শৌচাগারের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কী অসুবিধা তা এই মুহূর্তে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে আদতে শৌচাগারের দুটি আউটলেট থাকে। ১ নম্বর এবং ২ নম্বর। এই দুই আউটলেটেই শোষণকারী ফ্যান থাকে। বর্জ্য পদার্থকে শুষে নিয়ে জায়গা পরিষ্কার করে দেয় ওই সাকশন ফ্যান। কিন্তু বর্তমানে তার কোনোটাই কাজ করছে না।
এই মুহূর্তে মহাকাশে একটি মাত্র স্পেস স্টেশনই কাজ করছে। আমেরিকা, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা আর জাপানের সম্মিলিতভাবে পরিচালিত ‘ইন্টারন্যশনাল স্পেস স্টেশন’। গত বছর পর্যন্তও চীনের স্পেস স্টেশন ‘তিয়ানগং-২’ ছিল। তবে এপ্রিলে তা ভেঙে পড়ে। ফলে মহাশূন্যে এখন একাই ভেসে বেড়াচ্ছে আইএসএস।