মনপুরার সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষন ও চেস্টার অভিযোগে মামলা

0
391

মোঃ আফজাল হোসেন ॥ ভোলার মনপুরাতে শিশু’র সামনে মাকে গণধর্ষনের রেশ না কাটতেই ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান দুই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেই ধর্ষন এবং ধর্ষনের চেস্টার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এঘটনা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন গ্রেফতার নেই।

মামলার বিবরনিতে জানাযায়,গত ১৪অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টায় ভোলার মনপুরা উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের কাজীর চরে বাদীনি (৩৬)এর নিজ ঘরে ধর্ষনের চেস্টা করে মনপুরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রধান আসামী মোঃ আলাউদ্দিন। তাকে ছাড়িয়ে নেয় অপর আসামী আব্দুল আজিজ (৩৫), মোঃ রিদু (৩৫),মোঃ সেলিম মাঝি (৪৭),মোঃ কালাম কসাই (৪৫),মোঃ শরীফ (৩৫),মোঃ মাকসুদ(২৫)।

মামলায় উল্লেখ করা হয়,পানি খাওয়ার কথা বলে ঘরে প্রবেশ করে মামলার প্রধান আসামী মনপুরা উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আলাউদ্দিন। বাদীনি পানি দিলে ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে বাদীনিকে ধর্ষনের চেস্টা করে। বাদীনির চিৎকারে মামলার প্রধান স্বাক্ষী বাদীনির স্বামীসহ অন্যরা এসে আসামীর কাছ থেকে উদ্ধার করে এবং প্রধান আসামী আলাউদ্দিনকে ধরে ফেলে। এসময় দুরে দাড়িয়ে থাকা অপর আসামীরা এসে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় এবং বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে মনপুরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামীর মাধ্যমে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও মামলার শেষে বলেছেন, হাসপাতাল থেকে সুস্থ্য হয়ে বাসায় ফিরে আত্বীয়-স্বজনদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে মামলা করতে দেরি হয়েছে। মনপুরা থানার ঐ সময়ের ওসি মোঃ ফোরকান আলী ১৬অক্টোবর মামলা রুজু করেন। মামলা নাম্বার ৯। তবে এ মামলায় কোন আসামীকে পুলিশ এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি।

অপরদিকে দ্বিতীয় ঘটনা ঘটে,একই ইউনিয়নের কাজীর চরের পাশের কলাতলীর চরে গত ১৯ অক্টোবর শনিবার দুপুর আনুমানিক ১২টায়। ঐ মামলায় প্রধান আসামী হচ্ছে,মনপুরা উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আমানত উল্ল্যাহ আলমগীর। মামলার আরো ৬জনসহ মোট ৭জনকে আসামী করা হয়েছে। মিজানুর রহমান (মিজান) (৪০),মোঃ ফারুক ফরাজী (৩৫), মোঃ নাহিছ (৩০),মোঃ ইলিয়াছ (৩৫),মোঃ শফিক(৩৫) ও মোঃ নাজিম উদ্দিন হাওলাদার (৩৫)কে আসামী করা হয়েছে।

এমালায় উল্লেখ করা হয়েছে,মামলার প্রধান আসামী মনপুরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর বাদীনির ঘরের রান্না ঘরে প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। এসময় বাদীনির ডাক-চিৎকার শুনে মামলার স্বাক্ষী বাদীনির স্বামীসহ অন্যরা এসে হাতেনাতে ধরে। এসময় মোবাইল ফোনে অপর আসামীদের তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার কথা বল্লে তারা এসে কিলঘুষি দিয়ে আসামীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। পরে মনপুরা হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে আসামীদের ভয়ভীতির ফলে ভর্তি হতে পারেনি। শুধু তাই নয়,থানায় ২০অক্টোবর মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা গ্রহন করেনি। যে কারনে আদালতে মামলা করেছেন বলে বিজ্ঞ আদালতে দেয়া মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন। ভোলার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল’র বিজ্ঞ বিচার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সহিদুল্লাহ এর আদালতে ধর্ষিতা বাদি হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। ভোলার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল’র বিজ্ঞ বিচার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সহিদুল্লাহ এক আদেশে ভোলার মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

এদিকে মনপুরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আমানত উল্ল্যাহ আলমগীর বলেন,আমার বিরুদ্ধে সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন তার আত্বীয়কে দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমি ঐ মেয়েকে চিনি না। এগুলো সাজানো মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। তার আগে আলাউদ্দিনকে আসামী করে করা অপর মামলা সম্পর্কে বলেন,এাঁ আমি জানি না।

অপরদিকে মনপুরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আলাউদ্দিন বলেন,আমি এলাকার জনপ্রিয় চেয়ারম্যান।আমার বাবা দীর্যদিন চেয়ারম্যান ছিলেন,বড় ভাই উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যন ছিলেন। আমরা রাজনৈতিক পরিবার। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমি। রাজনৈতিক কারনে আমার ও আমার লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে আলমগীর চেয়ারম্যান। অথচ মামলায় যে সময় ও দিন দেখানো হয়েছে,তখন আমি ভোলাতে ছিলাম। আদালতে কাজ ছিলো সেখানে ছিলাম। তা তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে। আমি এঘটনার সাথে জড়িত থাকলে আমার বিচাঁর হোক এটা আমি চাই।

এবিষয় মনপুরা থানার ওসি মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন,আমি আসার আগেই একটি মামলা হয়েছে। ঐ মামলায় মনপুরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানকে প্রধান করে ৭জনকে আসামী করা হয়েছে। অপর একটি অভিযোগ ভোলার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল’র বিজ্ঞ বিচার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সহিদুল্লাহ এর আদালত থেকে গত বৃহস্পতিবার ৩১অক্টোবর থানায় এসেছে। বিজ্ঞ আদালত এটিকে এজাহার হিসেবে গ্রহন করার জন্য বলেছেন। সেটা মনপুরা থানায় এজাহার হিসেবে গত ৩ নভেম্বর গ্রহন করা হয়েছে। মামলা নাম্বার ২। এঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি গুরুক্তসহকারে দেখা হচ্ছে।

 

LEAVE A REPLY