ভোলার তিন ইউনিয়নের মানুষ ৭মাস বিদ্যুতের আলোর মুখ দেখে না

0
1

মো: আফজাল হাসনে :: মেঘনা মধ্যবর্তী ভোলা সদর ও দৌলতখান উপজেলার ৩টি ই্উনিয়নে ৭মাস বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় চরম দুর্ভোগে ঐসব গ্রামের মানুষেরা। কবে নাগাদ পাবে তা নিয়ে রয়েছে শংকা। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা আর বন্ধের উপক্রম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

 

দ্বীপ জেলা ভোলা। যার চারপাশটা মেঘনা ও তেতুলিয়া নদী বেস্টিত। মেঘনার সাড়ে ৪ কিলোমিটার নদী পাড়ি দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলে বিদ্যুৎ পৌছে যায় ভোলা সদর ও দৌলতখান উপজেলার মাঝের চর,মদনপুর ও মেদুয়া ইউনিয়নে। সেই মদনপুর ইউনিয়নের ছোট্র একটি ঘরে জরাজীর্ন অবস্থায় বসবাস করছেন বিবি ছকিনা। স্বামীকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে বসবাস করছেন ছোট্র খ্যাড়ের ঘরটিতে। বসার জন্য একটি কাঠের চেয়ার না থাকলেও একটু শান্তির আশায় অন্যদের মত ফ্যান,লাইট ও ফ্রিজ ক্রয় করেছেন বিদ্যুত আশার আনন্দে। ৩মাস ভালোই চলছিলো সব। গতবছরের ২৬জুন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় চরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। এর ফলে আশার আলো নিবে যায় বিবি ছকিনার। সেই থেকে এখন পর্যন্ত অন্ধকারে আছেন ছকিনার মত হাজারো পরিবার। ছকিনার মতে আগেই ভালো ছিলাম। যেমন ভাবেই হোক সোলার কিংবা তেল দিয়ে কুপিয়ে জ্বালিয়ে চলেছে জীবন। সবকিছুই একটা ধারাবহিগতা ছিলো। বিদ্যুত দিতে পারবে না,দীর্য দিন বন্ধ থাকবে তাহলে দেয়ারই দরকার কি ছিলো বলে ক্ষোভ ঝারেন এই বৃদ্ধ মহিলা। ক্ষোভে কস্ট বলেন,টিভি,ফ্রিজ,ফ্যানসহ যা কিনেছেন সমিতির কাছ থেকে লোন দিয়ে,তা বিদ্যুত না পেলে মেঘনা ফেলে দেয়া ছাড়া কি করবেন এসব দিয়ে। গত ৮মাস ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় ক্ষোভের শেষ নেই তার।

 

এদিকে স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী মো: রুহুল আমিন। এলাকায় বিদ্যুত আসার খবর আশায় বুক বেধেঁছিলেন নতুন করে বাচাঁর। তা থমকে আছে গত ৭মাস ধরে। বিদ্যুতের সাথে সম্পর্কিত একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন, দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়ন পাটোয়ারী বাজারে। এনজিও থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা দিলেও বিদ্যুত না থাকায় দোকান রয়েছে বন্ধ। একই অবস্থা ঐ বাজারসহ আশপাশের অন্যসব বাজার ব্যবসায়ীদের। একই ধরনের ক্ষোভ রয়েছে অন্য গ্রাহকদের। গ্রামের পর গ্রাম বিদ্যুতের খুটি বসিয়ে লক্ষ্ পুরনের অংশ হিসেবে তরিঘরি করে গত বছরের ৫ডিসেম্বর সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয় ৩টি ইউনিয়নে। সংযোগের ১২ দিন পরেই সাবমেরিন ক্যাবরে সমস্যা দেখা দেয়। ৩টি ক্যাবলের ১টি সমস্যা হয়, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর। এভাবে পুরোপুরী বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়,গত বছরের ২৬ জুন। শতভাগ বিদ্যুতায়ন ও পল্লি বিদ্যুত সমিতি যৌথ প্রকল্পের ৩৬৭ কোটি টাকা ব্যায়ে ভোলা ও পটুয়াখালি জেলার ১৯টি বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলকে বিদ্যুতায়ন করে। পল্লি বিদ্যুত সমিতির তথ্যমতে শুধু সদর ও দৌলতখান উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন ৭মাস ধরে বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

 

৩৬৭ কোটি টাকা ব্যায় ১৪৭২ কিলোমিটার এলাকার ৭৩টি গ্রামকে ২টি সাব স্টেশনের মাধ্যমে বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা হয়। এজন্য ৮টি সাবমেরিন ক্যামল ব্যবহার করা হয়েছে। ৩৪৪৫০টি গ্রাহক এই সুবিধার আওতায় এসেছে বলে পল্লি বিদ্যুত সমিতি,ভোলার জেনারেল ম্যানেজার মো: আলতাফ হোসেন বলেন,বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন ৩টি ইউনিয়নকে পুনরায় বিদ্যুতায়নের আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তারা। এজন্য ২কোটি টাকার বেশি ব্যয় হবে জানান পল্লী বিদ্যুত সমিতির এই কর্মকর্তা জানালেন। এছাড়া জাহাজের নোঙ্গর করায় ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে বলে উল্লেখ করে বলেন,এজন্য ঐ এলাকাকে ডেঞ্জারজোন ঘোষনা করে ক্যাবল পূর্নস্থাপন অথবা নতুন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুত পৌছানো হবে। এজন্য কাচ ছলছে। বিআইডব্লিউটিসি এর সাথে আলোচনা হচ্ছে। আশা করছি একটা উপায় বের করা সম্ভব হবে। তিনি আরো বলেন,কোনটাই না হলে সোলার গ্রীড করে হলেও বিদ্যুতায়ন করা হবে। তবে এজন্য জন্য ২০২৩ সাল পুরো অপেক্ষা করতে হবে।

LEAVE A REPLY