ভোলা নিউজ ২৪ ডট নেট : দেশের তিন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিনজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বগুড়ায় একজন এবং শুক্রবার ভোরে টাঙ্গাইল সদর ও যশোরে নিহত হয়েছেন দুইজন। এর মধ্যে পুলিশে ও র্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুইজন নিহত হয়েছেন। অন্যজন নিহত হয়েছেন নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি নিহত সকলেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে র্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মো. আফজাল নামে ৩৫ বছর বয়সী এক ‘মাদক ব্যবসায়ী’ নিহত হয়েছেন। এ সময় র্যাবের দুই সদস্যও আহত হয়েছেন। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, বিপুল ইয়াবা ও ফেনসিডিল জব্দ করেছে র্যাব। শুক্রবার ভোরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বেগুনটাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
টাঙ্গাইল র্যাব-১২ সিপিসি-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার রবিউল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোরে র্যাব সদস্যরা জেলা সদরের বেগুনটাল এলাকায় অভিযান চালাতে যায়। এ সময় র্যাবকে দেখামাত্র অস্ত্রধারী কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী গুলি ছুঁড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে র্যাবও পাল্টা গুলি করে। এক পর্যায় অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলেও একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আফজালকে মৃত ঘোষণা করেন।
বগুড়া : বগুড়া শহরের ভাটকান্দি ব্রিজের পূর্ব মাথায় বন্দুকযুদ্ধে পুতু মিয়া নামে একজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বগুড়ার মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, রাতে ভাটকান্দী ব্রিজের পূর্ব মাথায় দুই দল দুষ্কৃতিকারী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে এমন খবরে শহরের বনানী ফাঁড়ির এসআই তারিকুলের নেতৃত্বে সদর থানার একদল পুলিশ সেখানে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুষ্কৃতিকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে দুষ্কৃতিকারীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পুতু মিয়াকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পুতুকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত পুতু মিয়ার বিরুদ্ধে বগুড়া সদর ও শিবগঞ্জ থানায় পাঁচটি মাদক মামলা রয়েছে। তিনি জেলার তালিকাভুক্ত একজন শীর্ষ মাদক বিক্রেতা বলে জানান তিনি।
যশোর : যশোরের চৌগাছায় যশোর-চৌগাছা সড়কের কয়ারপাড়া বাজারের পাশে শুক্রবার ভোরে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রতন নামে ২৫ বছর বয়সী এক যুবক নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, সন্ত্রাসীদের দুই পক্ষে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রতন নিহত হয়েছেন। নিহত রতন চৌগাছা উপজেলার দিঘলসিংহা গ্রামের আবুবক্করের ছেলে।
চৌগাছা থানার ওসি খন্দকার শামিম উদ্দিন জানান, রাতে চৌগাছা-যশোর সড়কের কয়ারপাড়া নামক স্থানে দুই দল সন্ত্রাসীর মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এ সময় সেখানে অজ্ঞাত একজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে মরদেহটি উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মরদেহ উদ্ধারের সময় সেখান থেকে একটি ওয়ান শুটারগান, এক রাউন্ড গুলি ও এক প্যাকেট ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। নিহত রতনের বিরুদ্ধে পুলিশের উপর হামলাসহ কয়েকটি মাদক মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
তবে নিহতের বাবা আবুবক্কর ও মা ফরিদা বেগমের দাবি, রতন মাগুরা জেলার এক ব্যক্তির কাছে টাকা পেত। বৃহস্পতিবার দুপুরে পাওনা টাকা দেয়া হবে বলে ওই ব্যক্তি ফোন করে জানায়। সেই টাকা আনতে দুপুরে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি থেকে বের হয় সে। সন্ধ্যার দিকেও ফিরে না আসলে তার খোঁজ করতে থাকি। সকালে হাসপাতালে মরদেহ থাকার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে রতনের মরদেহ শনাক্ত করি। রতন মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকলেও ২/৩ বছর ধরে তা ছেড়ে দিয়েছে বলে জানান তার বাবা-মা।