মোঃ আফজাল হোসেন,তজুমদ্দিন থেকে ফিরে ॥ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে আজ সকাল ৮টা থেকে ভোলার তজুমিদ্দন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। তবে বৈরী পরিবেশের কারণে কেন্দ ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিলো কিছুটা কম। ভোটাররা বিছিন্নভাবে কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে দিলেও শেষ পর্যন্ত নানা অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করে বিএনপির প্রার্থী। তবে কোথাও কোন বড় ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।
চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ মোট ৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। প্রার্থীরা হচ্ছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ফজলুল হক দেওয়ান(নৌকা), বিএনপির গোলাম মোস্তফা মিন্টু (ধানের শীষ) ও সতন্ত্র প্রার্থী নাসির উদ্দিন দুলাল (আনারস)। পাঁচ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৮৫ হাজার ৭২৭ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৪১ হাজার ৯০৩ ও পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৪৩ হাজার ৮২৪ জন। ৩৩ টি ভোট কেন্দ্রের ২৩৮টি কক্ষের মাধ্যমে ভোট করা হয়েছে।
তজুমদ্দিন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অহিদুল্লাহ জসিম গত বছর ৩১ ডিসেম্বর মারা গেলে চেয়ারম্যান পদটি শূণ্য হয়। নির্বাচন কমিশন গত ১৮ ফেব্রুয়ারি চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচনের ঘোষণা করে ২৯ মার্চ ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করে। উচ্চ আদালতের মামলার কারণে ভোট গ্রহণের তারিখ পিছিয়ে ২৫ জুলাই নির্ধারণ করা হয়। সকাল থেকে খুব বৃাস্টির কারনে ভোটার উপস্থিতিি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে।
অপরদিকে বিএনপির প্রার্থী বেলা ১১টায় নিজ বাসায় সাংবাদিকদের ডেকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন। এসময় তিনি বলেন,নির্বাচন শুরুর আগের দু’দিন থেকে নৌকার সমর্থকরা তাদের এজেন্ট ও সমর্থকদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। বেশ কয়েকটি স্থানে হামলা করেছে। এছাড়া নির্বাচনের আগের দিন সকল এজেন্টদের কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি প্রদান করেছে। এছাড়া নির্বাচনের দিন এজেন্টদের মারধোর,হামলা আর কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেয়ার প্রতিবাদে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন। এসব বিষয় রিটার্নী কর্মকর্তা,পুলিশ সুপারসহ সংম্লিস্টদের বার বার জানালেও কোন লাভ হয়নি। শতকরা ২ভাগ ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসেনি। তারা নির্বাচন বর্জন করেছে।
হামলা,হুমকি,এজেন্ট বের করে দেয়াসহ নানান অভিযোগ এনেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক সতন্ত্র প্রার্থী নাসির উদ্দিন দুলাল। তিনি বলেন,তার কর্মী আর এজেন্টদের উপর হামলা করেছে। তজুমদ্দিন হাসপাতালে তার আহত কর্মীরা ভর্তি হয়েছে চিকিৎসা নিতে আবার কেউ ভয়ে চিকিৎসা পর্যন্ত নিতে হাসপাতালে আসতে পারেনি।
তবে নৌকার প্রার্থী ফজলুল হক দেওয়ান সকল অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন,নির্বাচনে পরাজিত হলে এসব অভিযোগ আনা পরাজিত প্রার্থীদের একটি কৌশল মাত্র। এর চেয়ে শান্তিপুর্ন পরিবেশে নির্বাচন কি ভাবে হতে পারে তা আমার জানানেই। ভোটারদের উপস্থিতিি ছিলো ব্যাপক। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাররা ভোট প্রদান করেছেন।
এদিকে কেন্দ্র থেকে ও আওয়ামী লীগ’র তথ্যসেল থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে,ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলা পরিষদ উপ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলুল হক দেওয়ান বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নৌকা প্রতীক নিয়ে ফজলুল হক দেওয়ান পেয়েছেন ৫৯ হাজার ৭৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সতন্ত্র প্রার্থী নাসির উদ্দিন দুলাল আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৪৯ ভোট। আর বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী গোলাম মোস্তফা মিন্টু পেয়েছেন ২ হাজার ১৪৬ ভোট। ভোট কেন্দ্রের তথ্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের তথ্য সেল থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে বিপুল ভোটে বিজয়ী ফজলুল হক দেওয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।
তজুমদ্দিন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অহিদুল্লাহ জসিম গত বছর ৩১ ডিসেম্বর মারা গেলে চেয়ারম্যান পদটি শূণ্য হয়। নির্বাচন কমিশন গত ১৮ ফেব্রুয়ারি চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচনের ঘোষণা করে ২৯ মার্চ ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করে। উচ্চ আদালতের মামলার কারণে ভোট গ্রহণের তারিখ পিছিয়ে ২৫ জুলাই নির্ধারণ করা হয়। গতকাল বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।