মো: আফজাল হোসেন,চরফ্যাশন থেকে ফিরে ॥ ঢাকা থেকে স্ত্রীকে বাড়ি এনে মেয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাবলিগে যাওয়া হলো না বৃদ্ধ হানিফ মাঝির। নিখোজের দুইদিন হলেও লাশ পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত।ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড এর জিন্নাগর বাসিন্দা হানিফ মাঝি (৭০)। গত বৃহ¯পতিবার নাতি রাকিব (৬)কে সাথে নিয়ে চরফ্যাশনের বেতুয়া লঞ্চঘাট থেকে এমভি ফারহান-৫ লঞ্চে করে ঢাকায় মেয়ে বিবি সালেকার বাসায় যাওয়ার কথা ছিলো। সেখান থেকে তার স্ত্রী নুর বানুকে নিয়ে চরফ্যাশন আসবে আর মেয়ে সালেকার কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাবলিগে যাওয়ার কথা ছিলো তার। তবে তার সেই আশা পুরন হয়নি। শেষ পর্যন্ত লঞ্চ উঠতে গিয়ে লঞ্চের গাফিলতির কারনে লঞ্চে উঠতে না পারায় মেঘনা নদীতে পড়ে যায়। তাকে না উঠিয়ে লঞ্চ চালিয়ে যাওয়ায় যাত্রী হানিফ মাঝি নদীতে ডুবে গিয়ে নিখোজ হয়। এসময় হানিফ মাঝির নাতী শিশু মো: রাকিব কান্নাকাটি করলে তাকে লালমোহন উপজেলার মঙ্গলসিকদার লঞ্চঘাটে নামিয়ে দিয়ে চলে যায় লঞ্চটি। এসময় লঞ্চের অন্যসব যাত্রীরা প্রিবাদ করলে তাদের সাথে অশলিন আচরন করেন লঞ্চের স্টাফরা বলে লঞ্চের যাত্রীরা অভিযোগ করেন।
এদিকে লঞ্চের যাত্রী মো: আবু সিদ্দিক জানান,লোকটি মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়ার সময় হাত উচিয়ে বাঁচার আকুতি করলেও লঞ্চের স্টাফরা এগিয়ে না এসে দ্রুত চালিয়ে যায় লঞ্চটি। যারা লঞ্চ থামাতে বলেছে তাদেরই সাথে ফারহান লঞ্চের স্টাফরা অশালিন আচরন করেছেন।
গত শুক্রবার কোস্টগার্ড,ফায়ার সার্ভিস এর ডুবুরীদল ও পুলিশ মেঘনা নদীর বেতুয়া লঞঘাটের আশপাশের এলাকায় তল্লাশী চালিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে আজ ২৩ মার্চ নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায় কোন ধরনের তল্লাশী চালানো হচ্ছে না। স্থানীয়রা লঞ্চ স্টাফদের দায়ী করে অপরাধীদের বিচার দাবী করেন। স্থানীয় মো: নোমান ও জামাল বলেন,এমভি ফারহান এর আগেও অনেক ধরনের দূর্ঘটনা ঘটিয়েছে। অথচ প্রতিবারই কোন কিছু না হোয়ায় বেপারোয়া হয়ে গেছে।
অপরদিকে নিখোজের গ্রামের বাড়ি চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগর ইউনিয়নের জিন্নাগর গ্রামের হানিফ মাঝি বাড়ি গিয়ে দেখা যায় শোকের মাতম চলছে। নিখোজ স্ত্রী আর তার সন্তানরা বাবার জন্য কান্নাকাটি করছেন আর বলছেন,তার বাবার শেষ ইচ্ছা তাবলিগেও যাওয়া হল না। তবে যে কোন ভাবেই হোক বাবার লাশটা অন্তত যেন পান তার দাবী প্রশাসনের প্রতি।
এদিকে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মীকর্তা মো: রুহুল আমিন মোবাইলে জানান. তারা লাশ উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে এবিষয় একজন ইউপি চেয়ারম্যানকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি ঢালচর রয়েছে।