চরফ্যাশনে দুই সন্তানের জননির আকুতি আমাকে বাঁচান!

0
114
চরফ্যাশন প্রতিনিধি।। স্বামী ও স্বশুরের পরিবার কর্তৃক নির্যাতনের বিচার দাবি করেন চরফ্যাশন উপজেলার আহাম্মদপুর ইউনিয়নের অসহায় স্ত্রী নাসিমা বেগম। জানা যায়,আহাম্মদপুর ইউনিয়নের ফরিদাবাদ ৯নং ওয়ার্ডের হানিফ পাটোয়ারির ছেলে আলাউদ্দিনের সাথে ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওবায়দুল হকের মেয়ে নাসিমার সাথে ২০০৬ সালে বিবাহ হয়। ১৪বছরের সংসার জীবনে তাদের দুইটি পুত্র সন্তান রয়েছে। স্বামী আলাউদ্দিন ইতোপূর্বে ঢাকায় ভ্যান চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন,বর্তমানে তিনি যশোর ক্যান্টনমেন্টে অফিসারদের গাড়ির সিভিল ড্রাইভার হিসেবে চাকরি করছে।
স্ত্রী নাসিমা বেগম সংবাদকর্মীদের কাছে অভিযোগ করে জানান, স্বামী আলাউদ্দিন কৌশলে যশোরে চাকরির নেয়ার কথা বলে স্বশুর ওবায়দুল হকের জমি বিক্রি করে ৩লাখ টাকা ও স্ত্রীর মাধ্যমে স্থানিয় সাদেক ফরাজি নামের জনৈক ব্যাক্তির কাছ থেকে ৫০হাজার টাকা নেন।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ২০১৮সালের ১লা জানুয়ারিতে আলাউদ্দিন আমাকে যশোরে নিয়ে যান এবং তিনি প্রায় দিন বাসায় আসতেন না। খোঁজ নিয়ে জানতে পাড়ি আলাউদ্দিন চট্টগ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করে আমার অজান্তে যশোরেই একটি ভাড়া বাসায় রেখে বসবাস করছেন। এবিষয়টি আমি ক্যান্টনমেন্টের বিমান বাহিনির অফিসারদের জানালে অফিসারগণের একটি সমোঝোতার মাধ্যমে দ্বিতীয়  স্ত্রীকে আলাউদ্দিন তালাক দেন।
এর কিছুদিন পরে সে আমাকে মারধর করে আহাম্মদপুরে পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে দির্ঘদিন ধরে আমাদের কোনো ভরণপোষন দিচ্ছেন না। এবিষয়ে যশোর ক্যান্টনমেন্টের অফিসারদের কাছে অভিযোগ জানালে দুই সন্তান ও স্ত্রীর ভরণপোষন বাবদ প্রতি মাসে ৫হাজার টাকা ও আহাম্মদপুর মৌজার চৌমোহনী বাজার সংলগ্ন দুই সন্তানের নামে ৬শতাংশ জমি দেয়ার অঙ্গীকারনামায় সাক্ষর করে।
দুই মাসে ১০হাজার টাকা দিলেও অদ্যবধি আর কোনো খোঁজ খবর নেয়নি। পরে আমি বাধ্য হয়ে ভোলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রইবুনালে একটি মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালদ মামলাটির তদন্ত প্রতিবেন দেয়ার জন্য দুলারহাট থানাকে নির্দেশ দেন। তদন্ত কর্মকর্তা নওশের আলী তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এরপর আলাউদ্দিন জামিনে এসে তার ভাই সাহাবুদ্দিন,সালাউদ্দিন,মিরাজসহ তার পরিবারের অন্যান্যরা মিলে আমাকে মারধর করে। দুই সন্তানসহ আমাকে হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ফেলে দেয়ার হুমকি দিলে আমার ডাক চিৎকারে স্থানিয়রা আসলে তারা পালিয়ে যায়।
এঘটনায় দুলারহাট থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। যার নং ২৭/৮০। এঘটনার পরে গত মাসের ২৩ তারিখে আবারও অভিযুক্তরা আলাউদ্দিনের নির্দেশে আমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। পরে আমার স্বজনরা এসে আমাকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করায়।
আমার অনুপস্থিতিতে পরদিন দুপুর ১২টায়
আহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সালাউদ্দিন ও ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্যের স্বামী মোহাম্মদ আলি হাওলাদার এবং ৯ নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ সহ আমার বড় ছেলে সিয়াম (১০) কে ঘর থেকে জোর করে বেড় করে তালাবদ্ধ করার চেষ্টা করে।
২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে আলাউদ্দিনের পিতা হানিফ পাটোয়ারিসহ তার পরিবারের অন্যান্যরা মিলে সিয়ামকে ঘর থেকে জোর পূর্বক বের করে দিলে দুলারহাট থানার অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে হানিফ পাটোয়ারি ঘর খুলে দেন।
কান্না কন্ঠে স্ত্রী নাসিমা আরও বলেন, আজ আমি নিরুপায় হয়ে আলাউদ্দিন ও তার পরিবারের অত্যাচার নির্যাতন ও স্বামীর অবহেলায় দুই শিশুকে নিয়ে স্ত্রী’র অধিকার আদায়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি এবং সমাজপতি ও প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমি কি এই অন্যায় ও জুলুম অত্যাচারের বিচার পবনা? আমাকে বাঁচান।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে আলাউদ্দিনকে এলাকায় গিয়ে খুঁজে পাওয়া না গেলে তার পরিবারের সাথে কথা বললে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এঘটানায় দুলারহাট থানার এসআই শিরাজুল ইসলাম ঘটনার সত্বতা নিশ্চিত করেন।

LEAVE A REPLY