নিহতদের মধ্যে চারজনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন কেশরিতা গ্রামের উত্তম (২৫), গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মার্তা এলাকার মো. রাশেদ (২৫) ও মো. শামীম (২৬) এবং রংপুরের ফরিদুল ইসলাম (১৮)।
আহতদের মধ্যে দুইজনকে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলেন কেশরিতা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (২০) এবং গাজীপুর সদরের যামুনা গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে মো. হাসান (১৯)।
এদিকে, এই ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন একটি কমিটি গঠন করেছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা জাকারিয়া খান বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আগুন লাগলেও তারা সন্ধ্যা ৫টা ৫২ মিনিটে ওই কারখানার তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলায় আগুন লাগার খবর পান।
“ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সাড়ে ৭টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিভে যায়।”
জাকারিয়া খান সাংবাদিকদের জানান, তৃতীয় তলায় একটি কক্ষের দরজার কাছে আগুনের সূত্রপাত হলে শ্রমিকরা ভেতরের দিকে চলে যান। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তারা ভেতরে আটকা পড়েন। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর তৃতীয় তলার কক্ষ থেকে ১০ শ্রমিককের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা জাকারিয়া বলেন, আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। ওই সময় কারখানায় ১৯ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। কারখানার মালিকের নাম মো. জাহিদ বলে জানা গেলেও কর্তৃপক্ষের কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।
“প্রাথমিক আলামত দেখে মনে হচ্ছে ১০ জনই ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।” শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার প্রণয়ভূষণ দাশ জানান, সামান্য দগ্ধ দুইজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের হাত, পা ও পিঠে সামান্য দগ্ধ হয়েছে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনুর ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যে কমিটি গঠন করেছেন তিনি। তাদের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
দাফন-কাফনের জন্য নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি।
পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বলেন, কারখানার গাফিলতির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।