ভোলা নিউজ ২৪ ডট নেট : কোটা সংস্কারের দাবিতে বারবার আন্দোলন হতে পারে, যাতে দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে, তাই যেন আর এ ধরনের দুর্ভোগের সৃষ্টি না হয়, সেজন্য কোটা পদ্ধতি বাতিল বলে সংসদকে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনো কোটারই দরকার নেই।’
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের ইস্যুতে বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে এমপি ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক কোটা ইস্যুতে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। উল্লিখিত ওই প্রশ্নোত্তরে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্জিত শিক্ষা ব্যবহার হওয়ার কথা গঠনমূলক কাজে। কিন্তু এখন ব্যবহার হচ্ছে গুজব ছড়ানোর কাজে। সেদিন এক ছাত্রের মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হলো, তখন ছাত্রীরাও হলের গেট ভেঙে বেরিয়ে আসে। সেদিন কোনো অঘটন ঘটলে তার দায়িত্ব কে নিতো? সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা হলো ভিসির বাড়িতে আক্রমণ। আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করে এই দেশ স্বাধীন করেছি, এতোদূর এনেছি। কিন্তু কখনো ভিসির বাড়িতে হামলা হতে পারে কেউ চিন্তাও করতে পারে না। সবকিছু ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়েছে। ভিসির ওপর আঘাত করতে চেয়েছে। একতলা-দোতলা সব তছনছ করে দিয়েছে। ক্যামেরা সরিয়ে নিয়ে গেছে। কতো পরিকল্পিত। এই হামলার নিন্দা জানাই, যারা এ হামলা করেছে, তারা ছাত্র বলে বিশ্বাস করি না।
আন্দোলনে মেয়েদের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গভীর রাতে মেয়েরা হল থেকে বেরিয়ে এলো। আমি সারারাত ঘুমাতে পারিনি মাননীয় স্পিকার। এরা আমাদের ছেলে-মেয়ে। কেউ কেউ নাতির বয়সী। এদের কিসে ভালো হবে আমরা বুঝতে পারি।’
৩৩ তম বিসিএস-এ ৭৭ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে সে তথ্য জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বুঝতেই পারছি না, কোটার সংস্কারতো সেই কবে থেকেই হয়েছে। তা না হলে বিসিএসগুলোয় মেধার ভিত্তিতে এত নিয়োগ হতো না।
তিনি বলেন, যেখানে কোটায় পাওয়া যায় না, সেখানে মেধার তালিকা থেকে আসে, সে চর্চা আগে থেকেই চলছে। এ নিয়ে সমালোচনাকারীদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, অনেক শিক্ষকও বিষয়টি জানেন না, তারা জানার চেষ্টাও করেন না।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা কোটায় পাচ্ছে তারাও মেধাবী। এখানে কেউ কারো চেয়ে মেধায় কম বেশি নয়। এতে শতভাগই মেধাবীরা সুযোগ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, চৈত্রের রোদে ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় বসে আছে। রোগীরা যেতে পারছে না হাসপাতালে। জেলায় জেলায় কোটা রয়েছে, জেলার ভালোর জন্যই তাও দেখছি ঢাকার বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন চলছে। তার মানে হচ্ছে জেলার ছেলে মেয়েরাও কোটা চায় না।মেয়েদের জন্য কোটা রয়েছে। তারাও এখন কোটা চায় না। আমি নারী, তাই আমিও খুশি মেয়েরা ভালো করুক। তাহলে কোটা পদ্ধতি বাতিল করাই হোক।
অনগ্রসর যারা তারা যেনো বঞ্চিত না নয়, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর যারা তারাও যেনো বঞ্চিত না হয় সেটা নিশ্চিত করতে আমরা অন্য ব্যবস্থা নেবো। ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর জন্য আমি অন্যভাবে ব্যবস্থা নেবো, বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ভিসির বাসভবনে ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের বিচার হবে, গোয়েন্দারা কাজ করছে। গত ক’দিন ধরে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।