ভোলায় খোলা আকাশের নিচে বিধ্বস্ত পরিবার গুলোর মানবেতর জীবন

0
362

আদিল হোসেন তপু,ভোলা নিউজ২৪ডটনেট॥ ভোলার উপর দিয়ে বয়ে যওয়া ঘূর্নিঝড় ফনীর আঘাতে বিধ্বস্ত পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতন দিন কাটাচ্ছেন। ঝড়ের পর ২ দিন কেটে গেলেও এখনো ঘুরে দাড়াঁতে পারেনি তারা। ক্ষতিগ্রস্থ এসব পরিবারের অনেকেরই নেই নতুন করে ঘর তোলার সামর্থ।অপ্রতুল ত্রান দেয়া হলেও তা কোন কাজে আসছে ক্ষতিগ্রস্থদের। তবে ঘর তোলার যাদের সামর্থ্য নেই তাদের পূন:বাসিত করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক। এদিকে বেড়ীঁবাধ এর সম্পূর্ন কাজ শেষ না হওয়ায় ঝুকিঁর মধ্যে আছে তেতুঁলিয়া পারের কয়েক হাজার মানুষ। আতংকে দিন কাটছে নদীর পারের হাজারো মানুষ। দ্রুত বেড়ীঁবাধ নির্মান করার দাবী স্থানীয়দের।
যতদূর চোখ যায় শুধু ধ্বংসের চিহ্ন। ঘূর্নিঝড় ফনীর প্রভাবে লন্ডবন্ড হয়ে যায় ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিন দিঘলদী ইউনিয়নের ৩টি গ্রামেই দুইশতাধিক পরিবার বসতভিটা হারিয়েছেন। সব সময় প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেচেঁ আছে এই উপকূলের মানুষ। ঘূর্নিঝড়ে আসার খবর শুনে আশ্রয় নিয়েছিল সাইক্লোন শেল্টারে। এসে দেখেন পুর বাড়ী ঘর যেন ধ্বংস স্থপে পরিনত হয়েছে। শুধু দক্ষিন দিঘলদী ইউনিয়ন নয় ঝড়ে জেলার সাত উপজেলায় ৫ শতাধিক ঘর ধ্বংস হলেও এ দুই গ্রামে এখনো পড়ে রয়েছে ঝড়ের ধ্বংস্তুুপ। রাস্তায় দু পাশে ভেঙ্গে যাওয়া গাছ পালা আর ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের নাজুক অবস্থা দেখেই বোঝা যায় দ্ইু দিন আগের ঝড়ে লন্ড ভন্ড হয়েছিলো এই জনপদটি।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ অনেকের ঘরের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে, কারো বিধ্বস্ত হয়েছে পুরো ঘর। কারো বা ঘরে সাথে রান্না করার চুলোটি পর্যন্ত ভেঙ্গে গেছে। ঘর তুলতে না পারায় প্রচন্ড রোদে খোলা আকাশে নিচে দিন কাটাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলো।কেউ আবার প্রয়োজনীয় আসবাপত্র রোদে শুকানোর চেষ্টা করছেন।
ফনীর প্রভাবে দক্ষিন কোরালিয়া গ্রামের ছকিনা বেগম বলেন, ঘূর্নিঝড়ে তান্ডবে আমার ঘরের চাল নিয়ে অন্য জায়গায় ফালিয়ে দিয়ে। বাচ্চা নিয়ে ঘর চাপা পরে এর মধ্যে কোন রকম জীবন রক্ষা করছি। এখন ছেলে- মেয়ে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। আমাদের তেমন কোন সামর্থ নেই যে নতুন করে ঘর তৈরি করতে পারবো। সরকার যদি আমাদের নতুন করে ঘর তৈরি করে দেয় তাহলে ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোন রকম বাচঁতে পারবো। তা নাহলে এমনইে সব পরে থাকবো।
ক্ষতিগ্রস্ত আরেক নারী কুলসুম বলেন,ঘূর্নিঝড়ে আমাদের সব কিছু নিয়ে গেছে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমরা এখন মানবতর জীবন যাপন করছি। কোন বাসা বাড়ি নাই।সরকার আমাদের কাল যা খাবার দিছে,আজ কোন খাবার দেয় নি। সরকার আমাগোরে ২ বান টিন ও ৫ হাজার টাকা দিবো । এখন হুনি ১ বান টিন ও ২ হাজার টাকা দিবো। এদিয়ে আমাদের কিছু হইবো না। সরকার যদি ১ টাকা দেয় তা যেন আমাদের হাতে দেয়।
ক্ষতিগ্রস্ত রহিমা বেগম বলেন, সরকারে কাছে আমাদের দাবী আমাদের যেন ঘর তৈরি করে দেয়। এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে ত্রান সহায়তা দেয়া হলেও তা দিয়ে ঘুরে দাড়াতে পারছে না পরিবারগুলো। ফলে অভাব অনাটন আর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটছে তাদের। এছাড়াও ঘূর্নিঝড়ে ফনীর প্রভাবে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর বই ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম।
এদিকে বেড়ীঁবাধ না থাকায় ঝুকিঁর মধ্যে আছে তেতুঁলিয়া পারের কয়েক হাজার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। আতংকে দিন কাটছে নদীর পারের মানুষের। দ্রুত বেড়ীঁবাধ নির্মান করার দাবী স্থানীয়দের।তবে জেলা প্রশাসক মো: মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে মাঝে ২ বান টিন ৩০ কেজি করে চাল ও নগদ ৬ হাজার টাকা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও যাদের ঘর তোলার সামর্থ্য নেই তাদের গৃহনির্মানের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। দ্রুত বেড়ীঁবাধ নির্মান করা হবে বলে জানান।
ঘুর্নিঝড় ফনীর ফনী আঘাতে দ্বীপজেলা ভোলায় নিহত হয়েছে ১ জন ও আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। এছাড়ও পাচঁ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বাধঁ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম ।

LEAVE A REPLY