কাশ্মির পরিস্থিতি ,সুস্থ্য আহমেদ ভাট মাথায় টিয়ার শেলের আঘাতে এখন প্রতিবন্ধী

0
51

জম্মু কাশ্মীরের বাসিন্দা ১৩ বছর বয়সী ইয়াওয়ার আহমেদ ভাট। এখন সে মানসিক ভারসাম্যহীন এক কিশোরের নাম। স্কুলে লেখাপড়া করতো, স্বাভাবিক ছেলেদের মতো ছিলো তার চলাফেরা। সময়ের পরিবর্তে এখন সে শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়েই থাকে। একটি টিয়ারশেল তার মাথায় আঘাত করার পর সবকিছুই যেনো উলোট পালোট করে দিয়েছে,তার সুন্দর এই জিবনটাকে।বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর সাধারণ কাশ্মিরের বাসিন্দারা তখন বিক্ষোভো ফেটে পরে। বাসা থেকে বের হবার সময় হঠাৎ একটি টিয়ালশেল তার মাথায় আঘাত করে। রাস্তায় পড়ে ছিলো ফুটফুটে এই কিশোর ভাট। ভাটের স্বজনরা বলেছেন, সে ৭৫% প্রতিবন্ধী এবং এখনও অবিরত রয়েছেন ট্রমাতে। হারিয়েছে স্কুল, বন্ধু আর স্বাভাবিক জিবন যাত্রা। এবং বেশির ভাগই এক জায়গায় দুর্বল স্মৃতিতে আটকে আছেন। তিনি এখন সাধারণ নন।

রাজ্যটি আমার ছেলের অমানবিক আচরণ করেছে। কেঁদে তাঁর বাবা মোহাম্মদ ইব্রাহিম ভাট আনাদোলু বলেছেন, যদিও কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে যে ছেলেটি বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের অংশে ছিল না। ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন কিন্তু কাশ্মিরে কে শুনে কার কথা। তবে তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া করেছেন তার ছেলেকে হত্যা করা হয়নি। ভারত শাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকেই বিক্ষোভ চলছে সেখানে। ভারতের সংবিধান থেকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার ব্যবস্থা বাতিল করার পর ভারত শাসিত কাশ্মীরের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে স্থানীয়দের মারধর এবং নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। (বিভিন্ন ইংরেজি সংবাদ মাধমে থেকে সংগ্রহ এবং তথ্য নিয়ে লেখা)।

বাসিন্দারাই ক্ষতচিহ্ন দেখান, কিন্তু কর্তৃপক্ষের সাথে সেসব অভিযোগ সম্পর্কে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। অগাস্টের ৫তারিখ ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাশ্মীরকে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকে তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কার্যত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন কাশ্মীর। ভারতের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন ও প্রমাণসাপেক্ষ নয়’ বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ। কাশ্মীর অঞ্চলকে ধারণা করা হয় এমন একটি এলাকা হিসেবে যেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সামরিক সদস্যদের অবস্থান রয়েছে, তার ওপর বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর সেখানে আরো অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে ভারত সরকার। একজন ভুক্তভোগীর পায়ে নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ন, ভারতীয় সেনাদের হাতে নির্যাতিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি। আমি দক্ষিণ কাশ্মীরে অন্তত ১০টি গ্রামে ঘুরেছি, প্রতিবেদক। যে গুলো গত কয়েক বছরে ভারত বিরোধী সশস্ত্র যোদ্ধাদের উত্থানের অন্যতম কেন্দ্র সেসব গ্রামের সব গুলোর বাসিন্দাদের কাছ থেকেই নির্যাতনের একই ধরণের বক্তব্য জানা যায়। বাসিন্দারা বলছেন, সেনাবাহিনী”আমাদের ব্যাপক মারধর করে। আমরা তাদের জিজ্ঞাসা করি: আমরা কী করেছি? কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথাই শোনেনি, কিছু বলেওনি, তারা আমাদের মারতেই থাকে,” বলেন দুই ভাইয়ের একজন। আমার শরীরের প্রতিটি অংশে তারা আঘাত করে। তারা আমাদের লাথি দেয়, লাঠি ও তার দিয়ে মারে, বৈদ্যুতিক শকও দেয়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে যখন আমরা অজ্ঞান হয়ে যাই তখন বৈদ্যুতিক শক দিয়ে। অনেক যুবককে ধরে নিয়ে যায়। প্রতিবাদ করলে বলে আতংবাদীর পরিবার। অনেকে নরকের সাথে তুলনা করে অঝরে কেঁদে ফেলেন। জম্মুর ডোডি, কিস্তোওয়াশ, রাজৌর বেরাসী জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের অনেক বাসিন্দাদের সাথে কথা জানাগেছে আরো অনেক তথ্য।

গ্রামের বাসিন্দারে আতংক হল নিরপত্তাবাহিনী বাসায় তল্লাশি চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে যুবকদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে কেউ বলতে পারেনি। কারণ তারা  আসে সাদা পোশাকে। ভাগ্যক্রমে অনেকে ফিরে আসলে ও অনেক যুবকের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। অনন্তনাগ গ্রামের সুফিয়া ! সাংবাদিকদের দেখে কেদে ফেললেন, বল্লেন তার ছেলে সেহজাতকে সাদাপোশাকে ধরে নিয়ে গেছে। আজ মাস খানেক হল তার কোন খোঁজ নেই, পুলিশ, সেনাবাহিনীর কাছে গিয়েছেন তারা অস্বীকার করেছেন। গণমাধ্যমের প্রবেশ অনেকটা কড়াকড়ি বিশেষ করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

আন্তর্জাতিক ইংরেজি গণমাধ্যম থেকে ভাষান্তর করে প্রতিবেদন লিখেছেনঃ জীবন আহমেদ

 

 

LEAVE A REPLY