শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ না পেয়ে মমতার ক্ষোভ

0
9

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার সঙ্গে দেখা করতে পারলেন না।

এ নিয়ে বেশ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্ণধার।
বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সরকারে বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা।

বলেন, দেশের পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে বলতে চাই না। হাসিনাজি ভারতে এসেছেন।

আমার সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই ভালো। ওদের সকলের সাথে। আজকে নয়, চিরকাল। কিন্তু দেখা করতে দিল না।
পুজোর সময় আমি উনাকে চিঠি দিই। উনি আমাকে শাড়ি পাঠায়। আমিও ঈদের সময় পাঠাই। উনি আম পাঠায়, ইলিশ মাছ পাঠায়। আমরাও যতটা পারি করি। এই প্রথম দেখলাম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এসেছেন কিন্তু বাংলা বাদ। আমি কৃতজ্ঞ যে উনি দেখা করতে চেয়েছিলেন। আমি সংবাদমাধ্যমে দেখেছি। তবুও এটা দেশের ব্যাপার আমি বলছি না।

এরপর মমতা হিন্দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এত রাগ কিসের? বড় লোকেদের এত ভয়ের কি আছে? শিকাগো থেকে আমার আমন্ত্রণ এসেছিল; কিন্তু আটকে দিয়েছে, আমাকে যেতে দেওয়া হয়নি। দিল্লির স্টিফেন্স কলেজ থেকে আমন্ত্রণ এসেছিল, আটকে দিয়েছে, যেতে দেওয়া হয়নি। চীন থেকে আমন্ত্রণ এসেছিল, সেখানেও আটকে দেওয়া হয়েছে, যেতে দেওয়া হয়নি। বাংলায় ঘুরলেই সারা বিশ্ব ভ্রমণ হয়ে যায়। তাই বাইরে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছর ১৯ জুলাই এক শুভেচ্ছা বার্তায় মমতাকে বলেছিলেন, সুবিধাজনক সময় বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ রইল। সেপ্টেম্বরে ২০২২-এ আমার নির্ধারিত নয়াদিল্লী সফরকালে আপনার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা রাখি। দুই বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি ও আদর্শগত সাদৃশ্যের ওপর ভিত্তি করে বিদ্যমান সম্পর্কের দৃঢ়তর করতে একযোগে কাজ করার বিকল্প নেই।

গত ৫ সেপ্টেম্বর মমতা বলেছিলেন, সারা পৃথিবীতে আমাকে বক্তৃতা দিতে ডাকলেও আমি যেতে পারি না। কারণ, আমাকে যেতে দেওয়া হয় না। তাতে কোনো যায় আসে না। আজকে পবিত্র দিন, ৫ সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবস। আমি জানি আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দিল্লিতে এসেছেন। ভারতবর্ষে ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর অব্দি উনি আছেন। আমার ও পশ্চিমবাংলার মানুষের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা, অভিনন্দন এবং আমরা প্রণাম ও সালাম জানাই।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ওখানকার (বাংলাদেশ) শিক্ষকদেরও শ্রদ্ধা জানাই। কারণ, সংস্কৃতির দিক থেকে ওদের-আমাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আর যারা অ-বাঙালি আছেন তারা মনে রাখবেন আমাদের একটাই ধর্ম। সেটা হলো মানবিক ধর্ম। মনে রাখবেন, আমরা যেটা বারবার বলি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। ধর্ম কারোও ব্যক্তিগত বিষয় হতে পারে, কিন্তু উৎসব সবার।
এর আগে, ২০১৮ সালের ২৬ মে কলকাতার তাজ বেঙ্গলে চল্লিশ মিনিট বৈঠক হয়েছিল হাসিনা-মমতার। সেবার দুদিনের সরকারি সফরে কলকাতায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শান্তি নিকেতনে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের অংশগ্রহণ করেন তিনি। পরে পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলের কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার (ডি.লিট) উপাধিতে ভূষিত হন শেখ হাসিনা।

এরপর ২০১৯ সালে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির আমন্ত্রণে কলকাতায় এসেছিলেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান। কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ভারত-বাংলাদেশ দিনরাতের গোলাপি বলে ক্রিকেট টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেবারও দুই বাংলার হাসিনা-মমতা সাক্ষাৎ হয়েছিল।

LEAVE A REPLY