মো: আফজাল হোসেন,দৌলতখান ॥ ভোলার দৌলতখানে তেলের ড্রাম বোঝাই ভ্যান উল্টে ড্রামের নিচে চাপা পড়ে আবু বক্কর সিদ্দিক নামের এক শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে ডাক্তার লাঞ্চিতসহ বিক্ষোভ করেছে স্থানীয়রা। দফায় দফায় বৈঠকের পর বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গত শুক্রবার রাত ৯টায় ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বটতলা নামক স্থানে এঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, ঐ সময় প্রতিদিনের ন্যায় মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক স্থানীয় তেল ব্যবসায়ী মোঃ হাকিমের তেল বোঝাই দুটি ড্রাম ভ্যানে করে মোঃ মিলনের দোকানে নিয়ে যাচ্ছিলো। এসময় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে উঠার সময় ভ্যান উল্টে তেল বোঝাই ড্রাম ভ্যান চালক সিদ্দিকের শরীরের এর ওপর পড়ে। এতে সে গুরুতর আহত হয়।পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দৌলতখান হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার মোঃ হাসান মাহমুদ তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা নেয়ার পরামর্শ দেন। তবে রাত পৌন ১১টায় এ্যাম্বুলেন্সে করে ভোলায় নেওয়ার সময়ই তার মৃর্ত্যু হয়। এঘটনা স্থানীয়রা ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কর্তব্য অবহেলার অভিযোগ এনে বিক্ষোভ করে। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা ডাক্তারদের লাঞ্চিত করে। খবর পেয়ে দৌলতখান থানা পুলিশ এবং পৌর মেয়রসহ আওয়ামী লীগের নেতারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তবে সবাইকে ম্যানেজ করেই দ্রুত লাশ দাফনের চেষ্টা চালানো হয়। ব্ষিয়টি রাতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হলে এবং সাংবাদিকদের তৎপরাতায় আইনী প্রক্রিয়া ছাড়া লাশ দাফন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে গতকাল নিহতের পরিবার জেলা প্রশাসক এর কাছে আবেদন করলে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের অনুমতি নিয়ে লাশ দ্ফান করে।
এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নিহত আবু বক্কর সিদ্দিক স্থানীয় তেল ব্যবসায়ী মোঃ হাকিমের সাথে কাজ করে। সে ব্লাকের তেল ক্রয়করে এভাবেই বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছে। ঐ তেলই অপর ব্যবসায়ী মিলনের কাছে বিক্রি করে। তবে এঘটনায় ব্যপক তোলপাড় শুরু হলে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য চেস্টা চালায়। পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সকলেই বিষয়টি নিয়ে সভা করেন হাসপাতালে।
এ বিষয়ে তেল ব্যবসায়ী মোঃ হাকিম মুঠোফোনে বলেন,আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছে। আমি ব্লাকের তেলের ব্যবসা করি না। নিহত আবু বকর সিদ্দিককে জীবনেও দেখিনি। তাকে আমি চিনিই না।
অপরদিকে ভোলার দৌলতখান থানার ওসি মোঃ বজলার রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহতের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় জেলা প্রশাসক স্যার ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের অনুমতি প্রদান করেন। হাকিম বিভিন্ন স্থান থেকে তেল ক্রয় করে বিক্রি করে। ভ্যানে করে তেল মিলনের দোকানে পাঠাচ্ছিলো। এসময় দুর্ঘটনা ঘটে। তবে ডাক্তার লাঞ্চিতের বিষয় কোন লিখিত অভিযোগ কেউ দেয়নি।
এদিকে দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, আমরা পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সভা করেছি। ডাক্তারের অবহেলা ছিলো কিনা তা খোঁজ নেয়ার জন্য। তবে রাতে নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা কয়েক দফায় বিক্ষোভ করেছে। তারা ডাক্তার হাসান মাহমুদকে ঘিরে রেখে ধাক্কা-ধাক্কি করেছে।