ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট : চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতদের সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মানুষ যখন রোগী হয়ে আসে তখন ওষুধের থেকেও চিকিৎসক-নার্সদের ব্যবহার, কথাবার্তা এবং সহানুভূতিশীল মনোভাব থেকেই কিন্তু অর্ধেক রোগ ভালো হয়ে যেতে পারে। তাই এ বিষয়ে চিকিৎসকদের একটু সংযত হতে হবে। শনিবার রাজধানীর মুগদায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড নার্সিং এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এনআইএএনইআর)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশে রোগীদের উন্নত চিকিৎসার দেয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে রোগ নির্ণয়ের আধুনিক যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, একটা বিষয় আমরা দেখি রোগ নির্ণয়ের (ডায়াগনসিস) ব্যাপারে কেন যেন কোথায় একটা বিরাট ভুল হয়ে যায়। যদিও যন্ত্রপাতি এখন অনেক উন্নত। তবে, সেগুলো পরিচালনার জন্য দক্ষ লোকের অভাব রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক মডার্ন মেশিন এখন, সেগুলো চালানোর মতো বা সেগুলো রিডিং করার মতো বা সেগুলোকে দেখার মতো সেই ধরনের স্কিলড লোক তৈরি করা প্রয়োজন। আপনারা উদ্যোগ নিয়ে কি করতে হবে বলেন, আমরা করে দেব। কোনো অসুবিধা নাই, আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এই বিষয়টার সুরাহা হওয়া দরকার নইলে কেউ রোগী হলেই দৌড়াবে সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, থাইল্যান্ড, ইন্ডিয়া অমুক জায়গায়, কেন? আর তারা ভালোভাবে যদি পারে, আমরা কেন পারবো না। এই প্রশ্নটাই বারবার আমার মনে হয়। আমাদেরও পারতে হবে। সমমানের সমমর্যাদার চিকিৎসাসেবা আমরাও দিতে পারবো।
চিকিৎসা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সরকার হাসপাতাল করে দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হাসপাতালগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকা উচিত। এটা কিন্তু এখনও আমাদের উন্নত হয় নাই। এদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। নইলে রোগতো ছড়াতেই থাকবে। এটা সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট’ মহাকাশে পাঠানো দেশের জন্য বড় অর্জন। এর মাধ্যমে দেশ বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ উচ্চ মর্যাদায় পৌঁছেছে।
মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর তালিকায় বাংলাদেশ ৫৭তম জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতার ধারাবাহিকতা ছিল বলেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। এর মাধ্যমে শুধু যে বিনোদন হবে তা নয়। এটা আমাদের সার্বিকভাবে কাজে লাগবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা ব্যবহার করতে পারব। আমাদের শিক্ষা, বিনোদন, চিকিৎসা সেবাসহ এমনকি প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা এখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এখন সারা বাংলাদেশে এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলে, পাহাড়ি অঞ্চল, চরাঞ্চল ও দ্বীপাঞ্চল থেকে শুরু করে সমগ্র অঞ্চলেই এই সেবাটা পৌঁছে দিতে পারব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, কোইকা সহ-সভাপতি কিয়াংগুন সুল, কোইকার সাউথ এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর মহাপরিচালক ইয়ো ইয়ং কিং। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল হক খান স্বাগত বক্তৃতা করেন। ঢাকা-৯ আসনের এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী বিশেষ অতিথি ছিলেন।