ভারতীয় অবৈধ দখলকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে, প্রবীণ হুরিয়ত নেতা এবং কাশ্মীর স্বাধীনতা আন্দোলনের আইকন সৈয়দ আলী গিলানি বুধবার রাতে শ্রীনগরে আটক অবস্থায় শহীদ হন। তার বয়স ছিল ৯২ বছর।
সৈয়দ আলী গিলানি একাধিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন এবং গত অনেক বছর ধরে গৃহবন্দী ছিলেন যা তার স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল। তাকে সুচিকিৎসার কোন সুযোগ দেয়নি ভারত এমন অভিযোগ পরিবারের।
২০১৫ সালে ভারত সরকারের নির্দেশে সৈয়দ আলী গিলানীর বাস ভবনকে সাব জেলে রূপান্তরিত করা হয় এবং আদেশটি এখনও বহাল ছিল। হায়দারপোড়ায় সৈয়দ আলী গিলানীর বাসভবন ও অফিসকে একটি সাব-জেলে রূপান্তর করার পর পুলিশ মোবাইল ও টেলিফোন পরিষেবা ব্যবহারও সীমিত করে দেয় এবং হুরিয়াত নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্য অফিসারদের বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
সৈয়দ আলী গিলানির পারিবারিক সূত্র জানায়, বুধবার বিকালে তিনি গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করেন এবং রাতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। “তার বুকে ব্যাথা এবং শ্বাসকষ্ট ছিল। তিনি রাত সাড়ে ১০ টায় মারা যান, ”তারা বলেছিল।
সৈয়দ আলী গিলানি সারা জীবন কাশ্মীরের ভারতীয় অবৈধ দখল থেকে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের সংগ্রামে অগ্রভাগে ছিলেন। তিনি তার জীবনের বেশিরভাগ সময় জামায়াতে ইসলামী জম্মু ও কাশ্মীরের সাথে যুক্ত ছিলেন কিন্তু পরে তেহরিক-ই-হুরিয়াত জম্মু-কাশ্মীর তেহরিক-ই-হুরিয়াত নামে তার নিজের দল প্রতিষ্ঠা করেন। তার অবনতিশীল স্বাস্থ্যের কারণে স্বাধীনতাপন্থী সংমিশ্রণটি শেষ পর্যন্ত দেরি না করা পর্যন্ত তিনি সর্বদলীয় হুরিয়াত সম্মেলনের (এপিএইচসি) নেতৃত্ব দেন।
সৈয়দ আলী গিলানি জম্মু ও কাশ্মীরের ভারতীয় অবৈধ দখলের কট্টর বিরোধী ছিলেন।
তিনি সারাজীবন জম্মু ও কাশ্মীরের পাকিস্তানে যোগদানের আবেগপ্রবণ সমর্থক ছিলেন। ‘হাম পাকিস্তানি হ্যায়, পাকিস্তান হামারা হা’ স্লোগানটি তৈরি করেছিলেন সৈয়দ আলী গিলানি।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ড. আরিফ আলভী গত বছর সৈয়দ আলী গিলানিকে কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের জন্য তার দশকের পুরনো সংগ্রামের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান নিশান-ই-পাকিস্তান প্রদান করেছিলেন। এটিকে পরিকল্প হত্যা বলছে পাকিস্তান।
ভাষান্তর করেছেন লেখক ও সাংবাদিক জীবন আহমেদ