ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট : ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার চর শ্রীরামপুর গ্রামে চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এরপর লাশ একটি বাড়িতে ফেলে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। ঘটনার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় পুলিশ ওই বাড়ির সামনের একটি কাশবন থেকে ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, নিহত কিশোরের নাম মো. সাগর (১৬)। তাঁর বাবার নাম মো. শিপন মিয়া। সাগর ময়মনসিংহ শহরের নাটকঘর লেন এলাকায় রেললাইনের বস্তিতে থাকত। সে ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলা থেকে পরিত্যক্ত জিনিস কুড়িয়ে এনে বিক্রি করত।
নিহত সাগরের বাবা শিপন মিয়া জানান, গতকাল সোমবার ভোর চারটার দিকে সাগর একটি ভ্যান নিয়ে পরিত্যক্ত জিনিস কুড়ানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। ওই রাতে সে বাড়ি না ফেরায় তিনি বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেন। পরে রাতেই ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় বিষয়টি জানান।
শিপন মিয়ার দাবি, সাগর কোনো চুরি করতে পারে না।
দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সাগর দ্বিতীয়। বোন বড়। বাবা ফেরিওয়ালা। রেললাইনের বস্তিতে পাঁচজনের সংসার ছিল তাদের।
চর শ্রীরামপুর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার ভাষ্য, গতকাল ভোরে মানুষজন জাগার আগেই ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে অবস্থিত গাউছিয়া হ্যাচারিতে পানির মেশিন চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে মারধর করে ওই হ্যাচারির মালিক আক্কাস আলী ও লোকজন। বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে তাকে নির্মমভাবে মারধর করায় ওই কিশোরের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। ভোরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার জন্য ওই কিশোরকে ইজিবাইকে তোলা হয়। এরপর ঘটনাস্থলে থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে সাহেক কাছারি বাজারে নেওয়ার পর কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে আক্কাস আলী ও তাঁর সহযোগীরা হ্যাচারির পেছনের একটি ঘরে লাশটি ফেলে পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন নিহত কিশোরের পরিচয় জানতে পারেনি।
গতকাল রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই নির্যাতনের ছবি প্রকাশ পায়। পুলিশ আজ দুপুর ১২টার দিকে হ্যাচারির সামনের একটি কাশবনের ভেতর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।