রোহিঙ্গাদের ত্রাণবাহী ট্রাক খাদে, নিহত ৯

0
563

ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ॥  রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার পথে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় রেড ক্রিসেন্টের একটি ট্রাক খাদে পড়ে নয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৩ জন।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে আটটার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি-চাকঢালা সীমান্ত সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন আব্দুল্লাহ (১৯), আব্দুল জলিল (৪০), সুরত আলম (৩৫), সৈয়দুল আমিন (৩২), আব্দুল্লাহ (১৬) ও মামুনুল হাকিম (৩২), সুলতান আহমদ (৪৫), আব্দুল মাবুদ (৫০) ও সুদর্শন বড়ুয়া (৫০)। তাঁদের মধ্যে প্রথম ছয়জন ঘটনাস্থলেই ও পরের তিনজন হাসপাতালে মারা যান।

রেডক্রিসেন্টের জেলা সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, ট্রাকটি চাকডালা সীমান্তের বড় শনখোলায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দেওয়ার জন্য যাচ্ছিল। উপজেলা সদর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে চাকঢালা বাজার অতিক্রম করে বিজিবির সীমান্তচৌকির কাছাকাছি পৌঁছালে ট্রাকটি একটি ছোট কালভার্ট ভেঙে পাশের জমিতে উল্টে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শী শামসুল আলম জানিয়েছেন, ট্রাকে মালামালের ওপর শ্রমিকেরা ছিলেন। সড়কটি জমি থেকে খুব বেশি উঁচু না হলেও ট্রাকটি উল্টে গেলে মালামালের নিচে শ্রমিকেরা চাপা পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই ছয়জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাসলিম ইকবাল চৌধুরী জানিয়েছেন, বিজিবি ও স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে। বিজিবি সদস্যরা আহতদের দ্রুত নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। হতাহতদের বাড়ি নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন পাড়ায়।

জেলা রেডক্রিসেন্টের সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, বড় শণখোলা রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে যানবাহন চলাচল করে না। এ জন্য প্রায় দুই কিলোমিটার হেঁটে চলা পথে ত্রাণ বহন করার জন্য ট্রাকের সঙ্গে শ্রমিকদের নেওয়া হয়।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সালমান করিম খান বলেছেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা আহত ১৬ জনের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আজিজুর রহমান (৩০), মোহাম্মদ ইউনুছ্ (১৭), সুলতান আহমদ (৩৪), সৈয়দুর রহমান (১৮) ও মোহাম্মদ জসীম (৩৮) নামে ছয়জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে প্রথম দুজনের অবস্থা গুরুতর। আরও সাতজনকে নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চাকঢালা এলাকার সদস্য ফরিদুল আলম বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি-চাকঢালা সীমান্ত সড়কটি ভাঙাচোরা ও খুবই সংকীর্ণ। এ সংকীর্ণ সড়কে বিশাল ট্রাক যাওয়া খুবই বিপজ্জনক।

জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান। তিনি নিহত প্রত্যেক শ্রমিকের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা, আহতদের পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংও একই পরিমাণ টাকা দিয়েছেন বলে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন।

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদ কবীর বলেছেন, ট্রাক চালক পালিয়েছে। নয়জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ নিয়ে আজ সকাল পর্যন্ত ২১৯ দিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৫০।

LEAVE A REPLY