মোঃ আফজাল হোসেন ।। কোরবানী উপলক্ষে শেষ সময়ের জন্য জমে উঠতে শুরু করেছে পশুর হাট গুলো। স্বাস্থ্যবিধি মানছে না ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই। নেই কোন তদারকির ব্যবস্থা। দাম নিয়ে রয়েছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। তবে বাহিরের পশু না আশায় খুশি বিক্রেতারা আর হতাশ ক্রেতারা। উৎপাদন ও চাহিদা গতবছরের অর্ধেকেরো কম।
আর মাত্র দু’দিন পরেই ঈদুর আযহা। তবে অন্যসব বছরের মত এবছর পশুর গাট গুলোতে নেই ক্রেতাদের সমাগম। কেউ ক্রয় করছেন অনলাইনে আবার কেউ ছুটছেন পশুর হাট গুলোতে। এমনই দৃশ্য চোখে পড়েছে ভোলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের গজারিয়া এবং দক্ষিন দিঘলদী ইউনিয়নের খায়েরহাট পশুর হাট গুলো ঘুরে। গজারিয়া পশুর গাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগম বেশ ভালোই নজরে পড়েছে। উঠেছেও বেশ ভালো গরু ও ছাগল। তবে বিক্রি কম থাকায় হতাশ বিক্রেতারা। কোরবানীর ২দিন বাকী থাকলেও ক্রেতারা কেনার চেয়ে যাচাই করছেন বেশি। ভোলা জেলা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সভাপতি মো: জাহিদুল হক শুভ বলেন,বাহিরের গরু না আশায় ভালো হয়েছে। ১লাখ ১২হাজার টাকায় গরু ক্রয় করে আমি খুশি। তবে দাম নিয়ে কিছুটা অভিযোগ থাকলে সবকিছু মিলিয়ে ভালো বলে জানালেন তিনি। এছাড়া অপর এক ক্রেতা মো: আলী বল্লেন,গত বছরের চেয়ে গরু-ছাগলের দাম একটু বেশিই মনে হচ্ছে। এখনো ইনতে পাড়িনি। হাতে দু’দিন আছে তাই আরেকটু যাচাই করে নেই। একই ধরনের কথা বল্লেন,ছাগল ক্রয় করতে আসা মো: ইমতিয়াজুর রহমান। তিনি বল্লেন,পছন্দ হলেও দাম একটু বেশি।
তবে তিনি পশুরহাটের স্বাস্থ্যবিধি এবং ক্রেতা-বিক্রেতারা কেউ মাস্ক ব্যবহার না করায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন প্রশাসনের নজরদারী নিয়ে। ২/৩জন পুলিশ নজরে আসলে দেখা মিলেনি,কোন স্বাস্থ্যকর্মী কিংবা জালটাকা সনাক্ত করনের জন্য কোন ব্যাংকের লোকজন। এসব পশুর হাটে আশা ক্রেতারা চরম হতাশার পাশাপাশি আশংকা প্রকাশ করে বলেন,পশুর হাটে আসতে চাইনি,এসে যা দেখলাম তাতে করোনা পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ অবস্থা হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বাজারে বিক্রি করতে না পেড়ে আশংকা প্রকাশ করে মো: শফিজল বেপারী বলেন,আশা করে গরু লালন পালন করেছিলাম কোরবানীর হাটে বিক্রি করার জন্য। তবে ক্রেতারা যে দাম বলে,তাতে এবছর বিক্রি করবেন না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে আগের চেয়ে বিক্রি বেড়েছে অনলাইন। তাই সকাল হলেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন খামাড়িরা পশু প্রস্তত করা নিয়ে। আশার বানী যদি কোন ক্রেতা তাদের খামাড়ে পশু ক্রয় করতে আসেন,তা নিয়ে। অন্তত স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ তৈরি চাই। কাজে আর কথায় মিলে গেছে। আশাহত হয়নি এসব খামাড়িরা। প্রায় প্রতিদিন ক্রেতারা আসছেন এসব খামাড়ে। কিনেও নিচ্ছেন পছন্দের পশুটি। সুবিধে হচ্ছে,কোরবানীর আগের দিন পৌছে যাবে ক্রেতারার বলে যাওয়া স্থানে। তাইতো এবছর অনলাইনে পশু বিক্রি বেশ ভালোই এগিয়েছে।
এদিকে গত বছর ১লাখ ১০হাজার পশুর চাহিদা থাকলেও এবছর রয়েছে মাত্র ৪৪ হাজার ৮৬৩টি পশুর। যা গত বছরের অর্ধেকের কম। উৎপাদনের দিক থেকেও একই অবস্থা। জেলায় ৯৩টি পশুর হাট বসবে উল্লেখ করে জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ইদ্রজিত কুমার মন্ডল জানালেন, ২২টি টিম তৈরি করা হয়েছে,পশু গুলোকে পরীক্ষা–নিরিক্ষা করার জন্য। ভোলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে পশু পাঠানোর কথা উল্লেখ করে,স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয়ের প্রতি জোর দিয়ে বলেন,এবছর ৩০থেকে ৪০ভাগ পশু বিক্রি করা সম্ভব হবে।