শাফায়াত হোসেন সিয়াম।। শিশুরাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। প্রত্যেক শিশুর মধ্যে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা লুকিয়ে থাকে। শিশুরাই একদিন বড় হয়ে সমাজ পরিচালনার দায়িত্ব গ্ৰহণ করবে। শিশুদের প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ দৃষ্টি দিতে হবে।
জাতিসংঘ প্রণীত শিশু অধিকার সনদে ১৮ বছরের কম বয়সী প্রত্যেককে শিশু বলা হয়েছে। বাংলাদেশেও ১৮ বছরের কম বয়সী সবাইকে শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সাধারণত এই শিশুরা যখন শ্রমের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করে বা অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে শ্রম দেয় তখন তাকে শিশুশ্রম বলে।
যে বয়সে শিশুরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা, সে বয়সে দরিদ্র শিশুরা খাদ্যের জন্য সংগ্ৰাম করে এবং অর্থ উপার্জনের জন্য শারীরিক পরিশ্রম করে। জীবনের শুরুতে তাদের বের হতে হয় জীবিকার খোঁজে। যেসকল পরিবার মূলত অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল সেসকল পরিবারের শিশুদের শিশুশ্রমে যুক্ত হতে হয়। এর ফলে অতি অল্প বয়সেই শিশুরা বিভিন্নধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়ে থাকে। অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের শিশুরা ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে কাজ করে থাকে, ইটভাঙ্গা সহ তারা বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে থাকে। এভাবেই দরিদ্র পরিবারের শিশুর ভবিষ্যৎ গড়ে উঠেছে অমানবিকতায়। বিভিন্ন সময়ে এসকল দরিদ্র শিশুরা ভিক্ষাবৃত্তি করে থাকে।
বিশ্বের সকল দেশেই শিশু-অধিকার একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে বিবেচিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় শিশু নীতি প্রনয়ন করেন।আন্তর্জাতিকভাবে শিশুদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। জাতিসংঘ সনদে শিশু-অধিকার সংক্রান্ত নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক শিশু- অধিকার সনদে স্বাক্ষর করে জাতীয় শিশুনীতি ঘোষণা করেছে এবং শিশুশ্রম বন্ধকরনে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার শিশুদের কল্যাণে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি কার্যক্রম প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করেছে। বর্তমান সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করছে। প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা সহ বর্তমান সরকার শিশুদের উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে।
বর্তমান সরকার শিশুদের জন্য শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে ইতিমধ্যে অনেক দরিদ্র পিতা-মাতা তাদের সন্তানদের কর্মস্থলের পরিবর্তে বিদ্যালয়ে পাঠাতে শুরু করেছেন। শিশুশ্রম বন্ধ করার জন্য বর্তমান সরকার ব্যাপক উদ্যোগ গ্ৰহন করেছে।
সরকারের পাশাপাশি আমাদেরকেও পথশিশু ও অবহেলিত শিশুদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে।
আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশ ও জাতির কর্ণধার। তাদের ওপরে নির্ভর করছে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি। আসুন, আমরা সকলকে শিশুশ্রমের ভবিষ্যতে পরিনতি ও ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে অবহিত করি।