দ্য টেলিগ্রাফ :মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রতি সহিংসতা ও তাদের ওপর নির্যাতন বন্ধে দেশটির নেত্রী অং সান সু চির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার লন্ডনে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন ও যুক্তরাষ্ট্রের রেক্স টিলারসন এ আহ্বান জানান।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর নির্যাতনের ঘটনায় কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া এবং আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে উপস্থিত না হওয়ার ঘোষণায় সু চিকে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
মিয়ানমারে চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চির সমালোচনা করে বরিস জনসন বলেন, এই সময়ে সু চি অন্যতম অনুপ্রেরণীয়। তিনি রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে সু চির প্রতি আহ্বান জানান। মিয়ানমারে বর্তমানে মানবাধিকারের অপব্যবহার হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ইংল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে বরিস জনসন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনাকে ‘বর্বরতা’ আখ্যায়িত করেছেন। তিনি মিয়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চিকে তাঁর ‘নৈতিক পুঁজির’ ওপর দাঁড়িয়ে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানান।
জনসন আরো বলেন, “আমি মনে করি তাঁর (সু চি) জন্য এখনই সময় রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে ‘নৈতিক পুঁজি’ ব্যবহারের এবং কর্তৃপক্ষকে নির্ধারণ করতে হবে যে এটা রোহিঙ্গাদের জন্য দুর্ভোগ।”
‘কেউ মিয়ানমারের সামরিক শাসনের প্রত্যাবর্তন দেখতে চায় না, কেউ জেনারেলদের প্রত্যাবর্তন দেখতে চায় না’, বলেন জনসন।
সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেন, এই সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে, এই নির্যাতন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এটা একটা জাতিকে নির্মূল করার চেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এটি অবশ্যই থামাতে হবে।
টিলারসন বলেন, ‘আমাদের অং সান সু চির সমর্থন প্রয়োজন।’ এ সময় মিয়ানমার সরকার অগ্রহণযোগ্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এরই মধ্যে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর সহিংসতার শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাজ্য ১১ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। নতুন করে আরো ২৫ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২৪ আগস্ট কয়েকটি সেনা ও পুলিশ ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা।
গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ‘বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের’ সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এই হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে।