মহিলা, শিশু, প্রতিবন্ধী এবং বয়োজ্যেষ্ঠ যাত্রীর জন্য সংরক্ষিত আসনে অন্য কোনো যাত্রী বসিলে এক মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রেখে বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইন ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।
২২ অক্টোবর আইনটি কার্যকরের তারিখ ঘোষণা করে গেজেট জারি করে সরকার।
নতুন আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সড়কে আইন লঙ্ঘন করলে আজ থেকেই নতুন আইনে সাজা দেয়া হবে।
নতুন এ আইনে সব ধরনের সাজা বাড়ানো হয়েছে। নতুন আইনে ট্রাফিক সংকেত ভঙ্গের জরিমানা ৫০০ থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১০ হাজার, হেলমেট না পরলে জরিমানা ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। সিট বেল্ট না বাঁধলে, মোবাইল ফোনে কথা বললে চালকের সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।
বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে কাউকে আহত করলে তিন লাখ টাকা জরিমানা ও তিন বছরের জেল হতে পারে। নতুন আইনে চালকদের লাইসেন্স পেতে অষ্টম শ্রেণি, সহকারীকে পঞ্চম শ্রেণি পাস হতে হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিপরীতে ১২ পয়েন্ট রাখা হয়েছে। আইন ভঙ্গে জেল-জরিমানা ছাড়াও লাইসেন্সের পয়েন্ট কাটা যাবে।
পুরো ১২ পয়েন্ট কাটা গেলে লাইসেন্স বাতিল।
চালক ও তার সহকারীকে নিয়োগপত্র দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
গণপরিবহনে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন না করলে বা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি কিংবা আদায় করলে এক মাসের জেল বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা এমনকি চালকের ১ পয়েন্ট কাটা যাবে।
কন্ডাক্টর লাইসেন্স ছাড়া কোনো গণপরিবহণে কন্ডাক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত ধারা ১৪ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৪ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
মোটরযান রেজিস্ট্রেশন ছাড়া মোটরযান চালনা সংক্রান্ত ধারা ১৬ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৬ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
মোটরযানের মালিকানা পরিবর্তন বা হস্তান্তরের কারণে হস্তান্তর গ্রহীতার রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ধারা ২১ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো হস্তান্তর গ্রহীতা ধারা ২১ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ এক মাস কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
মোটরযানের ফিটনেস সনদ ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেস সনদ ব্যবহার করে বা ইকোনমিক লাইফ অতিক্রান্ত বা ফিটনেসের অনুপযোগী, ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালনা সংক্রান্ত ধারা ২৫ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
ট্যাক্স-টোকেন ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ ট্যাক্স-টোকেন ব্যবহার করে মোটরযান চালনা সংক্রান্ত ধারা ২৬ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৬ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
রুট পারমিট ছাড়া পাবলিক প্লেসে পরিবহন যান ব্যবহার সংক্রান্ত ধারা ২৮ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৮ এর উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
বিদেশি নাগরিকের বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিজ দেশের মোটরযান/গণপরিবহণের রুট পারমিট গ্রহণ না করা সংক্রান্ত ধারা ২৯ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো বিদেশি নাগরিক ধারা ২৯ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এজন্য তিনি সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
মোটরযানের বাণিজ্যিক ব্যবহার সংক্রান্ত ধারা ৩১ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩১ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কাটা হবে।
গণপরিবহনে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন ও নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায় সংক্রান্ত ধারা ৩৪ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩৪ এর উপ-ধারা (৩) ও (৪) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কাটা হবে।