অমি আহমেদ/ ইমতিয়াজুর রহমান,ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।। ভোলার স্বর্ণ ব্যবসায়ী দ্বীপক নাগ সাধারন মানুষের বন্ধকী ৩ কোটি নগদ টাকা এবং স্বর্ণ অলংকার নিয়ে স্ব-পরিবারে পালিয়ে জাওয়ার ঘটনায় ভোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় ঐ পরিবারের সকল সদস্য ছাড়াও আরো অনেককে আসামী করা হয়েছে। অপরদিকে নাগ জুয়েলার্সে এখন তালার মেলা।
ভোলার স্বর্ণ ব্যবসায়ী দ্বীপক নাগ সাধারন মানুষের বন্ধকী ৩কোটি নগদ টাকা এবং স্বর্ণ অলংকার নিয়ে স্ব-পরিবারে পালিয়ে জাওয়ার ঘটনাটি এখন ভোলার আলোচনার মুখ্য বিষয় হয়েছে। কম বেশি সকলের মুখে মুখে এই শব্দটি দ্বীপক নাগের অর্থ আত্তসাৎ,তার পরিবারের অপকর্ম ও পলায়নের বিষয়টি। শুধু তাই নয় চরম ক্ষোভ সাধারন মানুষের। আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসছে নানান অপকর্মর কথা। আর এসব কিছুর মধ্যে ভোলা সদর থানায় দেখা হলো ক্ষতিগ্রস্থ্য শহরের অফিসারপাড়ার বাসিন্দা আসমা আখতার এর সাথে। তিনি বাদী হয়ে ভোলা সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন।মামলার নাম্বার হচ্ছে ৬৮। মামলায় দ্বীপক নাগের পরিবারের সকল সদস্যদের আসামী করা হয়েছে। মামলার বাদী আসমা আখতার বলেন, তিনি গত বছরের নভেম্বর মাসে নগদ ও স্বর্নলংকার মিলিয়ে অন্তত ১৯লাখ টাকা দিয়েছেন দ্বীপক নাগকে। এখন তার সব শেস হয়ে গেছে। ভোলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এর ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং বিচার এর আশ্বাসে ক্ষতিগ্রস্থ্য আমরা আশার আলো দেখতে পেয়েছি। তাই মামলা করেছি। আশা করছি পুলিশ প্রশাসন দ্বীপক নাগকে বাংলাদেশে এনে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের টাকা ও স্বর্ণলংকার আইনের মাধ্যমে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন। আমি একা ক্ষতিগ্রস্থ্য নই। আমার চেয়েও অনেক বেশি টাকা আর স্বর্নলংকার রেখেছেন তার কাছে অনেকেই। এখন তারা সামাজিক কারনে সামনে আসতে পারছেন না।
অপরদিকে এ প্রতিবেদক যখনি রিপোর্ট করতে ওয়েষ্টার্ন পাড়ার মুখেই অবস্থিত নাগ অলংকার নিকেতন এর সামনে জান তখনি তালা হাতে দু-চার জন নারী ও পুরুষকে নাগ অলংকার নিকেতন এর সামনে গুরাগুরি করতে তাদেরকে দেখা যায়।এ রহস্য উদঘাটন করতে তাদের কাছে গেলে জানা যায় তারা নাগ অলংকার নিকেতন এর মালিক দ্বীপক নাগের নিকট স্বর্ণ অলংকার বন্ধক রেখেছে। এখন তাকে না পেয়ে ক্ষোবের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে তারা দোকানটিতে তালা মেরে দিতে এসেছেন।কিন্তু এতো তালা মারা হয়েছে আগ থেকেই যে তারা এখন তালা মারার কোন যায়গা না পেয়ে গুরাগুরি করছে। এভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ্যদের ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভোলা শহরের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত ২০ এপ্রিল শুক্রবার সকালে স্ব-পরিবারে তারা ভোলা ত্যাগ করে এবং ভারত চলে গেছে বলে যানাযায়।
এস্থানীয় সূএরে জানা যায়, বিবি হনুফা (৪৫)তাঁর বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার উত্তর চর ভেদুরিয়া। তিনি স্বর্ণ বন্ধক রেখে সূদে ১৮ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী দীপক নাগের কাছ থেকে।
সাইফুল ইসলাম তার বাড়ি ভেদুরিয়ায় ৫ ভরি, ভোলা পৌরসভার সালমা আক্তারের ৫ ভরি, দৌলতখান চরপাতার ময়না বেগমের ১৪লাখ টাকা ও ৬ভরি স্বর্ন, অফিসার পাড়ার মো. আযাদের আড়াই ভড়ি স্বর্ন ও আড়াই লাখ টাকা পাওনা আছে দিপক নাগের কাছে।
শহরের খেয়াঘাট রোডের সেতারা মঞ্জিলের বাসিন্দার কাছ থেকেও নগদ ৪ লাখ টাকা ও ৬ ভড়ি স্বর্ণ নিয়ে গেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। আলীনগর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সাহেব আলী চৌকিদারের স্ত্রীরও কাছ থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে উধাও হয়েছেন এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এছাড়া বোরহানউদ্দিনের মেজবাহ উদ্দিন সম্রাট জানান, তিনিও দ্বীপক নাগের কাছে ৪ ভড়ি পুরাতন স্বর্ণ ও নগদ ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা জমা রাখেন। পুরাতন স্বর্ণ ও নগদ টাকা দিয়ে তাকে নতুন মডেলের জিনিস বানিয়ে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু দ্বীপক নাগ উধাও হওয়ায় তিনি এখন হতাশায় ভুগছেন। কি করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না।
গত ২৩ এপ্রিল ঘটনা স্থান পরিদর্শনে এসে ভোলা জেলা প্রশাসক মোঃ মাসুদ অলম সিদ্দিক বলেন আপনাদের মধ্য যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তিনি বাদী হয়ে দ্বীপক নাগের বিরুদ্ধে ভোলা মডেল থানায় মামলা দায়ের করবেন। আপনাদের এই মামলার ভিওিতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এবং দরকার হলে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করে দ্বীপক নাগ দেশেই থাকুক বা বিদেশে থাকুক উভয় দেশের দুতাবাসের মাধ্যমে তাকে ভোলায় আনার ব্যবস্থা করবো।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছগির মিঞা জানান, এ বিষয়ে ২৫ এপ্রিল সন্ধায় আসমা আখতার বাদি হয়ে নাগ অলংকার নিকেতন এর মালিক দ্বীপক নাগ ও তার পরিবারে সকলে বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন যার মামালা নাং ৬৮। আমরা এখন আইনের মাধ্যমে দ্বীপক নাগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবো। এজন্য একজন অফিসারকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সবকিছু করার জন্য। তিনি কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এর সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।