ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট ।। শীর্ণ শরীর। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন তিনি। ৮০ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধা নিজে নিজে কিছুই করতে পারেন না। তবু তিনি বাড়ির উঠানে পড়ে থাকেন। তাঁর দুই হাত দড়ি দিয়ে বাঁধা থাকে। ঠিকমতো খাবারও জুটে না তাঁর।
বৃদ্ধার নাম ফুলবাসী মণ্ডল। তিনি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বড় কুপোট গ্রামের বাসিন্দা। পৃথিবীতে তাঁর আপন বলতে আছে তাঁর ছেলে প্রভাষ মণ্ডল ও ছেলের স্ত্রী আশা রানী। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ছেলে আর ছেলের স্ত্রী বৃদ্ধা ফুলবাসীর ওপর নিয়মিত নির্যাতন করেন। ঠিকমত খাবার দেন না। এমনকি উঠানে ফেলে হাত বেঁধে রেখেছেন তাঁরাই।
স্থানীয় এক যুবক বিষয়টি দেখে মোবাইলে বৃদ্ধার ভিডিও ধারন করেন। এরপর তা ছড়িয়ে দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। তা দেখে আজ শুক্রবার পুলিশ ফুলবাসীকে উদ্ধার করেছে। একই সঙ্গে আটক করেছে প্রভাষ ও তাঁর স্ত্রী আশা রানীকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ফুলবাসী মণ্ডলের স্বামী ত্রৈলক্ষ্য মণ্ডল আগেই মারা গেছেন। এরপর থেকে ছেলে প্রভাষের কাছেই আছেন তিনি। কিন্তু প্রভাষ ও তাঁর স্ত্রী আশা রানী বৃদ্ধাকে নানাভাবে নির্যাতন করেন। ঠিকমত খাবার দেয় না। পায়খানা-প্রস্রাব করলে গালিগালাজের পাশাপাশি বেশি নির্যাতন করেন। দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন নিজের মাকে।
এসব দেখেই স্থানীয় এক যুবক পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ফুলবাসীর পরিস্থিতির ছবি ফেসবুকে দিয়ে দেন।
এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়তেই শ্যামনগর থানা পুলিশ শুক্রবার দুপুরে বড় কুপোট গ্রামে হাজির হয়। তাঁরা নির্যাতিত বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে সেবা দেন। এ সময় বৃদ্ধার ছেলে ও পুত্রবধূকে আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে আটুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সালেহ বাবু কিছুই জানেন না বলে জানান।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মান্নান আলী জানান, এখনও কোনো মামলা হয়নি। প্রভাষ ও তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ওসি মান্নান আলী বলেন, ওই বৃদ্ধার আপন বলতে তাঁর একমাত্র ছেলে আর ছেলের বউ। বিষয়টি কীভাবে নিষ্পত্তি করা যাবে তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। ফুলবাসী এখন নিজ বাড়িতে আছেন। তাঁর হাত ও পায়ের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি ভাল আছেন। তাঁকে খাবার দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ওসি।