ভোলা নিউজ ২৪ ডট নেটঃ ভারতের হায়দরাবাদ সফরে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানিয়েছে রোবট মিত্রা। এরপর হায়দরাবাদের বিখ্যাত মার্বেল রাজপ্রাসাদ ফলকনামা প্যালেসে ভোজ সারবেন তাঁরা।
ইভাঙ্কা তাঁর বাবার অনানুষ্ঠানিক উপদেষ্টা। হায়দরাবাদে গিয়ে সেখানকার বিখ্যাত বিরিয়ানি খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ইভাঙ্কা।
এনডিটিভি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় খাবারের টেবিল রয়েছে ফলকনামা প্যালেসে। এখানে ১০১ জন একসঙ্গে বসে খেতে পারেন। এই টেবিলে বসেই একসঙ্গে খাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ইভাঙ্কা ট্রাম্প।
ফলকনামা প্যালেসের শেফরা বলছেন, গোশত সিকামপুরি কাবাব, খুবানি কি মালাই কোফতা, মুর্গপিস্তা কি সালুন, সিতাফল কুলফি—এই ভোজের অন্যতম আকর্ষণ। বিশেষ সুগন্ধের জন্য এসব খাবারে জাফরান ও ডুমুর ব্যবহার করা হয়।
হায়দরাবাদে বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইভাঙ্কা। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এটি বিশেষ সুযোগ বলে ভাবা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করার আশা করছে দিল্লি।
ফলকনামা প্যালেস বহু পুরোনো। ষষ্ঠ নিজাম মির মেহবুব আলী খানের বাসভবন ছিল এটি। তিনি ১৯১১ সালে মারা যান।
উজ্জ্বল সবুজ ফুলেল নকশার পোশাক পরে সম্মেলনে যোগ দেন ইভাঙ্কা। সম্মেলনে তিনি বলেন, নারী নেতৃত্বে ব্যবসার প্রবৃদ্ধি ঘটালে ও উদ্যোক্তা খাতে লিঙ্গবৈষম্য দূর করলে জিডিপি ২ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, এই সম্মেলন কেবল সিলিকন ভ্যালি ও হায়দরাবাদের মধ্যে নয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যেকার সম্পর্ক এর মাধ্যমে জোরদার হবে।
হায়দরাবাদের ফলকনামা প্যালেস বিশ্বের সবচেয়ে বড় খাবারঘর হিসেবে পরিচিত। ১৮৯৩ সালে নবাবা ভিকার-উল-উমরা এই প্যালেস নির্মাণ করেন। সে সময় তিনি হায়দরাবাদের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০১০ সালে তাজ হোটেল গ্রুপ এই প্যালেস ইজারা নেয়।
বৃশ্চিক আকারের এই প্যালেসে বড় একটি হল রয়েছে। অত্যাধুনিক কাঠের নকশাদার জিনিস দিয়ে সাজানো এই প্যালেস। রয়েছে স্ফটিকের সুসজ্জিত ঝাড়বাতি। এই প্যালেস এত বড় যে এক মাথায় কথা বললে আরেক মাথায় প্রতিধ্বনি শোনা যায়।
উর্দু শব্দ ফলকনামার অর্থ আকাশের মতো অথবা আকাশের প্রতিচ্ছবি। হায়দরাবাদের বিখ্যাত চরমিনার থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে এই প্যালেস। প্রায় ৩২ একর জায়গা নিয়ে প্যালেসটি নির্মিত।
প্যালেসে নিজামের চিত্রকর্ম, স্ট্যাচু, আসবাবপত্র, পাণ্ডুলিপি, বইয়ের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। প্যালেসে রয়েছে গ্রন্থাগার। এর ছাদ আখরোটগাছের কাঠ দিয়ে সাজানো।
এই প্যালেসে রয়েছে ২২টি হলঘর ও ৬০টি কক্ষ। ১০১ জন একসঙ্গে বসে এর খাবারঘরে খেতে পারেন। খাবার টেবিলের সঙ্গে থাকা চেয়ারগুলো গোলাপের কাঠ দিয়ে তৈরি।
২০০০ সাল পর্যন্ত এই প্যালেস জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। সে পর্যন্ত এটি নিজাম পরিবারের ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল।
২০১০ সালে তাজ গ্রুপ ইজারা নেওয়ার পর প্যালেসটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এনডিটিভি অবলম্বনে।