ভোলা নিউজ ২৪ ডটনেট : বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আমরা নির্বাচন করবো, চাইলেও বাইরে রাখা যাবে না। তবে শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সহায়ক সরকারের অধীনে।
মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের হলরুমে ছাত্রদলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই, বৈধ সরকার নেই, আইনের শাসন, কথা বলার অধিকার নেই। তার প্রমাণ একটু আগে দেখলাম। অনেকদিন ধরে ছাত্ররা আলোচনা সভার প্রস্তুতি নিয়েছে। অনুমতি দিয়েছে, ভাড়াও নিয়েছে। অথচ হঠাৎ করে হলরুমে তালা লাগিয়ে দিলো। এটা কেমন আচরণ? আজকে দেশ এক ব্যক্তির দখলে। দেশ পিছিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ তার জন্য দায়ী। গুম, খুন বেড়েছে, দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। মানুষের অভাবের শেষ নেই।
তিনি বলেন: আওয়ামী লীগকে মানুষ বিশ্বাস করে না। তারা মানুষের ভোটে না, অন্যের কাঁধে ভর করে ক্ষমতায় এসেছে বার বার। অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে মানুষ নির্যাতন করছে। বিএনপি মানুষের ভোটে ক্ষমতায় আসে। অন্যের ওপর নির্ভর করে নয়।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন: মানুষের দুঃখের সীমা নেই। তার জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী। সে জন্য তাদের চলে যেতে হবে। নতুন যেকোন সরকার আসতে হবে। পরিবর্তন আসতে হবে। সে জন্য একটি নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার লাগবে। হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। হবেও না। এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই তাদের অধীনে ভোট হতে পারবে না। পার্লামেন্ট রেখে কোন নির্বাচন হবে না।
পদ্মাসেতু আওয়ামী লীগের আমলে হবে না দাবি করে তিনি বলেন: পদ্মাসেতুর স্বপ্ন দেখাচ্ছে সরকার। কিন্তু এ সেতু জোড়া তালি দিয়ে বানানো হচ্ছে। এ সেতুতে কেউ উঠবেন না।
আবারও ভারতের প্রশংসা করে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন: ভারত আমাদেরকে স্বাধীনতার সময় সাহায্য করেছে। ভারতকে আমরা বন্ধুর মতো দেখতে চাই। বন্ধু হয়ে থাকতে চাই সবসময়।
তিনি বলেন: দেশের পুলিশ খারাপ নয়, আওয়ামী লীগ পুলিশকে খারাপ বানাচ্ছে। পুলিশ নিজেদের কাজ করুক। তবে আমার অনুরোধ, আমার ছেলেদের ধরবেন না। যারা জেলে আছে ছেড়ে দিন। পুরো দেশটি আজ কারাগার হয়ে গেছে। আমরা সবাই বন্দী। শুধু শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে মুক্ত।
খালেদা জিয়া ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের শুধু ছবি তোলে আন্দোলনে আছে তা না দেখিয়ে মনপ্রাণ উজাড় করে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তোমরা ঐক্য, ইমান, শৃংখলা ঠিক রাখলে সব কিছু জয় করা সম্ভব। শুধু স্লোগান দিলে হবে না। স্লোগানের ধারা পরিবর্তন করতে হবে। আগের স্লোগান দিলেন হবে না সময়ের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী তা পরিবর্তন করতে হবে।
“তোমরা এগিয়ে চলো। ২০১৮ সাল হবে গণতন্ত্রের বছর”- বলেন তিনি।
তীব্র বিক্ষোভের মুখে অবশেষে ছাত্রদলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার জন্য ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের হল রুম খোলে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে ইঞ্জিনিয়ার্সের সামনে অবস্থান নিয়ে দুপুর থেকে বিক্ষোভ করতে থাকে ছাত্রদল। বিকেল সারে ৪টায় সমাবেশ স্থলে আসেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি গাছ তলায় বসেই বক্তব্য দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এসময় বাইরে অবস্থান করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব। মহাসচিবের বক্তব্যের সাথে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা
অবশেষে বিকাল ৫টা ৩০মিনিটের দিকে হলরুম খুলে দেয় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ
পূর্ব অনুমতি থাকা সত্ত্বেও পুলিশ আলোচনা সভা করতে দিচ্ছিল না বলে অভিযোগ করে ছাত্রদল।
ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে ২ মাস আগে হল রুমে আলোচনা সভা করার অনুমতি নিয়েছিলো এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাড়াও আদায় করে। কিন্তু আজকে তারা আলোচনা সভা করার অনুমতি দিচ্ছে না। সংগঠনটি এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মী ছাড়াও উপস্থিত আছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।