পিএসসি চেয়ারম্যান ড.মোহাম্মদ সাদিক জানান, দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হতে পারে। এদিকে, যানজট ও আসন বিভ্রাটে রাজশাহীর দুটি পরীক্ষা কেন্দ্রে ২০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। সময়মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হতে না পেরে ১৫০ জন এবং ভুল কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ৫০ জন পরীক্ষায় বসতে পারেননি।
এদিকে, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ঢাকার একটি কেন্দ্র থেকে একজন ও চট্টগ্রামের দুই কেন্দ্র থেকে দু’জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জানা গেছে, সারা দেশে প্রায় অর্ধশতাধিক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল ফোনসেট, হেডফোন, পেনড্রাইভ, ঘড়িসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য জব্দ করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আ ই ম নেছার উদ্দিন জানান, দুই লাখ ৪৪ হাজার ৪৪০ জন পরীক্ষার জন্য আবেদন করেন। তাদের মধ্যে ৮৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ পরীক্ষায় অংশ নেন।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, ৫০ পরীক্ষার্থীর আসন রাজশাহী কোর্ট কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে হলেও তারা রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে উপস্থিত হন। বিডিজবস ক্যারিয়ার নামের একটি ওয়েবসাইটে আসনবিন্যাস দেখে শিক্ষার্থীরা সেখানে উপস্থিত হন।
পরীক্ষার্থী হাবিবা খাতুন ও মো. আসাদুজ্জামান জানান, ওয়েবসাইটের আসন বিন্যাস দেখে তারা রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে সময়মতো পৌঁছান। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তাদের আসন কোর্ট কলেজ কেন্দ্রে। এরপর সেখান থেকে তারা দ্রুত কোর্ট কলেজে যান। কিন্তু ততক্ষণে সকাল ১০টা বেজে গেছে। এ জন্য তাদের কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি।
জানতে চাইলে কেন্দ্র সচিব ও কোর্ট কলেজের অধ্যক্ষ একেএম কামরুজ্জামান বলেন, দেরি করে আসায় ম্যাজিস্ট্রেট তাদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেননি। সরকারি কর্ম কমিশনে ফোন করে অনুমতি চেয়েছি। কিন্তু অনুমতি দেয়া হয়নি। কিছু সংখ্যক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারেননি।
তিনি আরও জানান, এই কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ছিল এক হাজার ৮৪২ জন। এর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলেন ৩২৩ জন।
এদিকে, রাজশাহী কলেজ কেন্দ্রেও সময়মতো পৌঁছাতে না পারায় কর্তৃপক্ষ ১৫০ পরীক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেননি। এসব পরীক্ষার্থী পড়েছিল যানজটের কবলে। কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়ায় পরীক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী কলেজের সামনের রাস্তায় অনেক পরীক্ষার্থীকে বিক্ষোভ করতে ও স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সময় অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বগুড়া থেকে আসা পরীক্ষার্থী শিলা খাতুন জানান, নাটোর-বগুড়া সড়কের রণবাঘা নামক স্থানে ট্রাক উল্টে সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে সড়কের দুই পাশে ভয়াবহ যানজট দেখা দেয়। এতে আটকে পড়ে বহু বাস। আটকে পড়েন পরীক্ষার্থীরাও। ট্রাক সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে আসতে কয়েক মিনিট দেরি হয়ে যায়। শিলা যে বাসে এসেছেন সে বাসে ৩০ জন পরীক্ষার্থী ছিলেন।
আরেক পরীক্ষার্থী জুবায়ের হাসান জানান, শুক্রবার ভোরে তিনি বগুড়া থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হন। তার বাসে ৩৫ জন পরীক্ষার্থী ছিলেন। কয়েক মিনিট দেরি হওয়ায় তারাও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। তাদের অনেকের ছিল এবার পরীক্ষা দেয়ার শেষ সুযোগ।
কেন্দ্র সচিব ও রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক হবিবুর রহমান বলেন, সকাল ১০টার মধ্যে কলেজ ক্যাম্পাসে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশের নিয়ম। কিছু পরীক্ষার্থী এই সময়ের মধ্যে আসতে না পারায় তাদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন তিন হাজার ৭৫০ জন। এর মধ্যে প্রায় ২০০ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন।