ভোলা নিউজ২৪ডটকম।। যাব না, যাব না করে শেষ পর্যন্ত ব্রিসবেনে গেছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। কিন্তু হোটেলে পৌঁছেই রাহানেদের নিশ্চিত মনে হয়েছে কেন রাজি হলাম আসতে। মনে হবেই না বা কেন—ব্রিসবেনের হোটেলে যে টয়লেট পরিষ্কারের কাজও করতে হচ্ছে তাঁদের।
সিডনিতে তৃতীয় টেস্ট খেলে আজই ব্রিসবেনে পৌঁছেছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া দুই দলই। ভারত উঠেছে সোফিটেল নামের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে। চতুর্থ টেস্টের ভেন্যু গ্যাবা থেকে চার কিলোমিটার দূরের হোটেলটাকে নাকি ভারতীয় ক্রিকেটারদের কাছে ঠিক ‘জেলখানা’ মনে হচ্ছে।
শুধু ব্রিসবেন নয়, পুরো কুইন্সল্যান্ড রাজ্যেই চলছে কঠোর লকডাউন। প্রতিবেশি নিউ সাউথ ওয়েলসের সিডনিতে নতুন করে করোনা সংক্রমণের পর এই ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার। শুরুতে তো ভারত–অস্ট্রেলিয়া দুই দলকেই কঠোর কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে জানিয়েছিল কুইন্সল্যান্ড রাজ্য সরকার। ভারত রাজি হয়নি ওই শর্তে ব্রিসবেনে যেতে। পরে অনেক আলোচনার পর কঠোরতা কিছুটা শিথিল করার আশ্বাস দেওয়ার পর রাজি হয়েছে ভারত।
বিছানা করতে হচ্ছে নিজেদের, পরিষ্কার করতে হচ্ছে টয়লেটও। খাবার আসছে কাছের এক ভারতীয় রেস্তোরাঁ থেকে, যেগুলো আমাদের ফ্লোরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
ভারতীয় ক্রিকেট দলের এক সদস্য
নতুন শর্তে এখন আর হোটেলে যাঁর যাঁর কক্ষে বন্দী থাকতে হবে না ক্রিকেটারদের। একে অন্যের কক্ষে যেতে পারবেন। খেলোয়াড়েরা হোটেল থেকে মাঠে গিয়ে অনুশীলনও করতে পারবেন। তবে ব্রিসবেনে পৌঁছানোর পর আরও কিছু বিধিনিষেধের খপ্পড়ে পড়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। ভারতীয় দলের সূত্র জানিয়েছে ওসব বিধিনিষেধ তাঁদের কল্পনাতেও ছিল না।
ভারত দলের একজন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন নিজেদের দুরবস্থার কথা, ‘হোটেল কক্ষে একরকম বন্দী আছি। বিছানা করতে হচ্ছে নিজেদের, পরিষ্কার করতে হচ্ছে টয়লেটও। খাবার আসছে কাছের এক ভারতীয় রেস্তোরাঁ থেকে, যেগুলো আমাদের ফ্লোরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোরে যেতে পারছি না। পুরো হোটেল খালি পড়ে থাকলেও আমরা সুইমিং পুল ব্যবহার করতে পারছি না। হোটেলের সব ক্যাফে ও রেস্তোরাঁও বন্ধ।’ জিম ব্যবহার করতে পারলেও সেটি আন্তর্জাতিক মানের নয় বলে জানিয়েছেন বিসিসিআইয়ের এক কর্তা।
এমন দুরবস্থায় পড়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ভারতীয় দল। এই খবর শুনে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বিসিসিআই কর্তারা। তাঁরা নাকি দ্রুতই ব্যবস্থা নিতে বলেছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে।
ভারত হোটেলে ওঠার পরই নাকি হোটেল কর্তৃপক্ষকে আপত্তির কথা জানায়। কিন্তু হোটেল কর্তৃপক্ষ উল্টো জানিয়ে দেয় তাঁদের কিছুই করার নেই। আর ভারত ও অস্ট্রেলিয়া দুই দলের জন্যই একই ব্যবস্থা। আর সংক্রমণের শঙ্কা কমাতেই তাঁরা বেশির ভাগ কর্মচারীকে ছুটি দিয়ে দিয়েছেন।
১৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফির চতুর্থ ও শেষ টেস্ট। সিরিজে আপাতত ১–১ সমতা। ভারত শেষ টেস্টে হার এড়ালেই টানা দ্বিতীয়বারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতবে।
এরপর দেশে ফিরেও আবার দুই সপ্তাহ আইসোলেশনে থাকতে হবে ভারতীয় ক্রিকেটারদের। এরপর আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমে যেতে হবে তাঁদের।
করোনাকালের ক্রিকেট খেলাটা আসলেই ঝক্কির!