ভোলা নিউজ২৪ডটকম।। অবশেষে পানির নিচে সব কার্যকলাপ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন অ্যাডভেঞ্চার সংস্থা ওশানগেট। বৃহস্পতিবার তারা জানিয়েছে, সব রকমের অনুসন্ধান এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমও স্থগিত করছে তারা। এই বিষয়টি তাদের ওয়েবসাইটেও লিখে দিয়েছে সংস্থাটি। জানিয়েছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আর কাউকে নিয়ে যাবে না তারা। এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে সিএনএন।
সম্প্রতি কানাডার নিউ সাউথহ্যাম্পটনের সেন্ট জন্স থেকে পাঁচ অভিযাত্রীকে নিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে ডুব দেয় সাবমেরিন টাইটান। সমুদ্রের গভীরে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে রওনা হয় সাবমেরিনটি। অন্যান্য ডুবের মতোই এবারও ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেনের রসদ নিয়ে সাগরে ডুব দেয় টাইটান। কিন্তু মাত্র পৌনে দু’ঘন্টার মাথায় দিক নির্দেশকারী জাহাজ বা কমান্ড শিপ ‘পোলার প্রিন্স’ এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সাবমেরিনটির। তারপর থেকেই আর খোঁজ মেলেনি টাইটানের।
সাবমেরিনে ছিলেন ব্রিটিশ ধনকুবের হামিশ হার্ডিন, পাকিস্তানের ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান, পল হেনরি নার্জিওলেট এবং ওশানগেট সংস্থার সিইও স্টকটন রাশ।
জানা গেছে, বিপদে পড়ার পর টাইটানের পাওয়ার সেভ করার জন্য আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। তাই ধ্বংসের শেষ মুহূর্তে যাত্রীরা অন্ধকারেই কাটিয়েছিলেন। সঙ্গে বাজিয়েছিলেন তাদের প্রিয় গান। সকলেই বোধহয় বুঝতে পেরেছিলেন, মৃত্যু আসন্ন। বিভিন্ন সামুদ্রিক জীবও ঘিরে ছিল সাবমেরিনটি।
কীভাবে ঘটল এমন দুর্ঘটনা, তা নিয়ে এখনও সঠিক তথ্য হাতে আসেনি তদন্তকারীদের। তবে মনে করা হচ্ছে, পানির প্রবল চাপে বিস্ফোরিত হয়েছিল টাইটান। মুহূর্তেরও কম সময়ে বিস্ফোরণ ঘটে যায় শেষে এবং টাইটানের মধ্যে থাকা সব যাত্রীদের মৃত্যু হয়। এখনও পর্যন্ত পাঁচ যাত্রীর মধ্যে কারও দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। দেহের অংশ লেগে থাকতে দেখা গেছে সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষে।
পাকিস্তানের ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদের স্ত্রী ক্রিস্টিয়ান একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তার স্বামী শাহজাদার স্বপ্ন ছিল টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া। সেই ২০১২ সালে সিঙ্গাপুরের একটি প্রদর্শনী দেখতে গিয়ে এই শখ হয় তার। তবে একা নয়, স্ত্রী ক্রিস্টিনকে নিয়েই যাওয়ার কথা ছিল শাহজাদার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ক্রিস্টিন যেতে পারেননি, তার বদলে যান শাহজাদার ছেলে সুলেমান।
ক্রিস্টিন বলেন, ‘বেরোনোর দিন ওরা প্রায় ফ্লাইট মিস করছিল। সেষ মুহূর্তে কোনও রকমে প্লেনে চড়ে। যদি মিস করত, তাহলে হয়তো ওদের যাওয়া হত না।’