ভোলা নিউজ ২৪ ডটকম :: শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ঝালকাঠিতে দুই বিচারক হত্যা দিবস পালিত হয়েছে। ২০০৫ সালের এই দিনে জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গিরা আত্মঘাতি বোমা হামলা চালিয়ে ঝালকাঠির দুই বিচারক সিনিয়র সহকারী জজ শহীদ সোহেল আম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়েকে হত্যা করে। বিচারক হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার নানা কর্মসূচী পালন করে ভোলা এবং ঝালকাঠির বিচার বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সকাল ৮ টায় জেলা ও দায়রা জজ কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে কালি বাড়ি রোডের শহীদ সমাধিস্থলে গিয়ে শেষ হয়। র্যালি শেষে শহীদদের সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় এবং শহীদদের উদ্দেশ্য দোয়া ও সামষ্টিক ভোজের আয়োজন করা হয়। পরে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ভোলা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (বিপিএম, পিপিএম) বলেন, আজকের এই দিনে স্বর্গীয় বিচারক জগন্নাথ পাঁড়ে এবং শহীদ সোহেল আহমেদকে আমরা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে “জিরো টোলারেন্স” নীতি ঘোষণা করেছেন সেটি বাস্তবায়নে ভোলা জেলা পুলিশ ও বিচার বিভাগ, ভোলা এক সাথে কাজ করার আশা ব্যক্ত করেন। এ সময় জেলা ও দায়রা জজ মহসিনুল হক চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোঃ সানাউল হক, অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অসীম কুমার দে, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রাজজ আলী মানসুর, যুগ্ন জেলা ও দায়রা ল্যান্ড সার্ভে মোঃ সামছুদ্দিন, ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শাহীন ফকির, কোর্ট পুলিশ পরিদর্শকসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নিহত জগন্নাথ পাঁড়ের শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকুল মুখার্জী, সিনিয়র সহকারী জজ সাবরিনা আলমসহ জেলা জজ কোর্টের কর্মকর্তা, কর্মচারী, পুলিশ বিভাগের সদস্য, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
পবিত্র কোরআন তেলোয়াত ও গীতা পাঠের মাধ্যমে শোক সভার কার্যক্রম শুরু হয়। সভায় স্বাগত ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলাম। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আজকের এই দিনটি বিচার বিভাগের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জঙ্গীরা দুইজন বিচারককে হত্যা করে বিচার বিভাগকে ভয় দেখাতে চেয়ে ছিলো কিন্তু তারা তা পারেনি। বরং জঙ্গীদের ঘৃণ অপরাধের বিচার বিচারকেরাই করেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ কেউ না করতে পারে এ ব্যাপারে সকলকে সজাগ থাকতে হবে এবং সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে। তিনি এই দিনটি জাতীয়ভাবে পালন করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করবেন এবং সকলের সহযোগীতা নিয়ে নিহত দুই বিচারকের স্মৃতি লিখিতভাবে সংরক্ষণ করার চেষ্টা চালাবেন বলে সভায় অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক জোহর আলী বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশ থেকে জঙ্গী দমনে সক্ষম হয়েছে। জঙ্গীরা না বুঝে নিরীহ নির্দোষ মানুষকে হত্যা করছে। ভবিষ্যতে যাতে এরকম পরিস্থিতির শিকার না হতে হয় সেজন্য সকলকে সচেতন হতে হবে। তিনি দুই বিচারকের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।