আর্সেনিকাম অ্যালবাম, ফসফরাস, টিউবারকিউলিনাম- করোনাভাইরাস চিকিৎসায় এ তিন হোমিওপ্যাথি ওষুধ ‘সিরিয়াল’ প্রয়োগ নিয়ে ভারতে ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ শুরু হচ্ছে। এ ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছে ভারতের করোনা সংক্রান্ত গবেষণা নির্ধারক সর্বোচ্চ টাস্ক ফোর্স এবং ‘সেন্ট্রাল কাউন্সিল ফর রিসার্চ ইন হোমিওপ্যাথি’।
আর্সেনিকাম অ্যালবাম ৩০ নিয়ে ভাবতে আগেই পরামর্শ দিয়েছিল ভারতের আয়ুশ মন্ত্রণালয়। পরে দেখা যায়, করোনাভাইরাস এতই শক্তিশালী যে আসের্নিকাম একা তার সাথে পেরে উঠছে না। তখনই উঠে আসে টিউবারকিউলিনাম ও ফরফরাসের নাম। চিকিৎসকদের দাবি, এই দুই ওষুধ যোগ করা হলে আর্সেনিকামের কার্যকারিতা বাড়বে।
কেরালা এবং তামিলনাড়ুতে এই অ্যানালজি মেনেই জাপানি এনসেফেলাইটিস প্রতিরোধে অন্ধ্রপ্রদেশের সরকার বেলেডোনা, ক্যালকেরিয়া কার্ব এবং টিউবারকিউলিনাম প্রয়োগ করেছিল। তাতে নাকি বেশ কাজ হয়েছে। করোনাভাইরাসেও সেই ফর্মুলা কতটা কাজ করবে কিনা তা জানতে শুরু হচ্ছে ট্রায়াল। পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কেরাল্, গুজরাট, দিল্লিতে এই তিন ওষুধ প্রয়োগ হবে।
করোনা রোধে হোমিওপ্যাথি ওষুধ নিয়ে নানান পরীক্ষানিরীক্ষা চলেছে। ডাক্তাররা দেখেছেন, আর্সেনিকামের সঙ্গে ফসফরাসকে যুক্ত করা গেলে তার কার্যকারিতা বাড়ে।
কলকাতার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হোমিওপ্যাথির প্রাক্তন অধ্যাপক ডা. অশোককুমার দাস জানান, সম্প্রতি ইতালিতে ৩৮ জন করোনা রোগীর অটোপসিতে দেখা যায়, করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর কারণ ‘ডিসিমিনেটেড ইন্ট্রাভাসকুলার কোয়াগুলেশন’ অর্থাৎ ধমনি-শিরা-উপশিরায় রক্ত জমাট বেঁধেই রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। ফলে অক্সিজেন বা ভেন্টিলেশন তেমন কাজে আসছে না। ফসফরাস এই রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারবে।
কিন্তু টিউবারকিউলিনাম? মার্কিন গবেষকরা সম্প্রতি দাবি করেছেন, বিসিজি ভ্যাকসিন দেওয়া থাকলে করোনা আক্রান্ত হলেও তা জটিল আকার নেয় না। কমে মৃত্যুর হারও।
বিসিজি ভ্যাকসিন তৈরি টিউবারকিউলোসিসের বীজাণু থেকে, টিউবারকিউলিনাম ওষুধটিও তাই। তাছাড়া ঘন ঘন সর্দি-কাশির হাত থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম টিউবারকিউলিনাম ওষুধটি ফসফরাসের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে, আর্সেনিকাম, ফসফরাস, টিউবারকিউলিনাম (এপিটি) পরপর একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে প্রয়োগ করলে প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়।
চিকিৎসকদের দাবি, মিউটেশনের ফলে বারবার চরিত্র বদল করছে করোনাভাইরাস। HIV’র মতোই একে নিয়েও বাঁচতে হবে। ফলে ‘লং টার্ম ইমিউনিটি’ খুব জরুরি। সেক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিই হতে পারে সমাধান।